টিকটক করা নিয়ে বিরোধ
ছাতকে দুই গ্রামের সংঘর্ষে নিহত ১

ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ১৯ জনকে গ্রেফতার করে। নিহত সাইফুল আলম (৪০) মুক্তিরগাঁও গ্রামের চমক আলীর ছেলে। এদিকে গ্রেফতার এড়াতে বাঁশখলা গ্রাম পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।
ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খান মোহাম্মদ মাইনুল জাকির জানান, দুই কিশোরীকে নাজেহালের জের ধরে দুই গ্রামের লোকজনের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। খবর ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ শতাধিক রাউন্ড ফাঁকাগুলি ও ১৪ রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। ঘটনাস্থল থেকে ১৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে। দুই গ্রামের পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে। কোনো পক্ষ থানায় অভিযোগ দেয়নি। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, বুধবার বিকালে সুরমা সেতুর সংযোগ সড়কের গোলচত্বরের কাছে চেচান গ্রামে দুই কিশোরী টিকটক ভিডিও করতে যায়। এ সময় বাঁশখলা গ্রামের রাজ্জাক ও মান্নান তাদের নাজেহাল করে এবং আটক করে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে।
এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করে মুক্তিরগাঁও গ্রামের আবদুস ছোবহানের ছেলে মামুন। এ সময় রাজ্জাক ও মান্নানের সঙ্গে মামুনের কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। এরপর মামুনকে ছুরিকাঘাত করে রাজ্জাক ও মান্নান পালিয়ে যায়। এর জের ধরে রাত ৮টার দিকে বাঁশখলা ও মুক্তিরগাঁও গ্রামের লোকজন দেশি অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
সুরমা সেতুর গোলচত্বর এলাকার কয়েকটি দোকান ও ঘরবাড়িও ভাঙচুর করা হয়। ছাতক-গোবিন্দগঞ্জ-দোয়ারাবাজার সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ৩ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের দুই শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়। মারাত্মক আহত সাইফুলকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহতদের মধ্যে নাইম আহমদ, লালু মিয়া, হাবিবুর রহমানসহ অন্যরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। তবে গ্রেফতারের ভয়ে তারা হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতাররা হলেন-বাঁশখলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা আজাদ মিয়ার ছেলে শাকিব মাহমুদ, আলী কাউছার, সোনাফের আলীর ছেলে মোশারফ হোসেন হেলাল, লালু মিয়ার ছেলে ছায়েদ আহমদ লিমন, দোলন মিয়ার ছেলে রাসেল মিয়া, ইউছুফ আলীর ছেলে সালমান, আবদুল জব্বারের ছেলে চেরাগ আলী, রহিম আলী, আক্রাম আলীর ছেলে মোতাসির আলী, ইসকান্দর আলীর ছেলে আহাদ আলী, ওমর আলীর ছেলে সুরত আলী, মোছাদ্দর আলীর ছেলে দোলন, সাহিদ আলীর ছেলে নজির আলী, ইছাক আলীর ছেলে মামুন মিয়া, আলতাব আলীর ছেলে যোবায়েল আহম্মদ ইমন, মোক্তার আলীর ছেলে রাজিব মিয়া, কুমনা গ্রামের আব্দুস শহিদ, ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আবু বক্কর, দোয়ারাবাজার উপজেলার নরসিংহপুর ইউনিয়নের নসনগর গ্রামের লোকমান মিয়ার ছেলে মিলন মিয়া।