ভারতে সুপ্রিমকোর্টের যুগান্তকারী রায়
নির্বাচন কমিশন গঠনে বিরোধী নেতার সুপারিশও লাগবে
যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ভারতে নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে দেশটির সুপ্রিমকোর্ট যুগান্তকারী রায় দিয়েছেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনার ও দুই নির্বাচন কমিশনার নিয়োগে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতি এবং লোকসভার বিরোধী দলের নেতাও অংশ নেবেন।
বৃহস্পতিবার আদালত এ ঐতিহাসিক রায় দেন। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের।
সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি কেএম যোসেফের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে রাষ্ট্রপতির তিন সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করার প্রথা বাতিল করে নতুন আইন প্রণয়নের নির্দেশ দিয়েছেন।
আদালত বলেন, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই-এর প্রধান যে প্রক্রিয়ায় নির্বাচিত হন, নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যকেও একইভাবে নিয়োগের বিধান করা হলো। নতুন আইন না হওয়া পর্যন্ত সর্বোচ্চ আদালতের বেঁধে দেওয়া নতুন বিধি চালু থাকবে। প্রধানমন্ত্রী, লোকসভার বিরোধী নেতা ও প্রধান বিচারপতির সুপারিশ মেনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন কমিশন গঠন করবেন।
আগের প্রথা বাতিলের দাবি জানিয়ে সুপ্রিমকোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা হয়েছিল। আবেদনকারীদের দাবি ছিল-নির্বাচনি প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা আনার স্বার্থে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনা জরুরি। গত বছরের ১৮ নভেম্বর কেন্দ্রীয় সরকারের আমলা অরুণ গোয়েল স্বেচ্ছা অবসর নেন। পরদিন তিনি নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ পান।
গোয়েলের এ ‘ত্বরিতগতির নিয়োগে’ প্রশ্ন তুলে তার নিয়োগসংক্রান্ত ফাইল তলব করেন সুপ্রিমকোর্ট। বিচারপতি কেএম যোসেফ, অজয় রাস্তোগি, অনিরুদ্ধ বসু, হৃষিকেশ রায় ও সিটি রবিকুমারের সাংবিধানিক বেঞ্চ সর্বসম্মতভাবে জানান, স্বচ্ছতার স্বার্থে এ সিদ্ধান্ত। তারা বলেন, গণতন্ত্রে নির্বাচন হতে হবে অবাধ ও নিরপেক্ষ। আর সেই দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। নির্বাচনের পবিত্রতা রক্ষা করা তাদেরই কাজ।
আদালতের এ রায়ের মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন স্বাধীন সচিবালয় পাবে। স্বাধীনভাবে তারা বাজেট ও নিয়মনীতি তৈরি করতে পারবে। তহবিলের জন্যও সরকারের মুখাপেক্ষী হতে হবে না। সরাসরি কেন্দ্রীয় ট্রেজারি থেকে তারা টাকা উত্তোলন করার ক্ষমতা পাবে। ভারতে নির্বাচন কমিশনের সদস্যদের মেয়াদ ছয় বছর। সাধারণত এ পদে সরকারের অনুগত ও ঘনিষ্ঠ আমলারা নিয়োগ পান।
এমন নিয়োগ নিয়ে বারবার প্রশ্নও ওঠে। তবে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার টিএন শেসন ১৯৯০ সালে নির্বাচন কমিশনের মান ও নিরপেক্ষতাকে যে উচ্চতায় স্থাপন করেছিলেন, পরবর্তীকালে তা বজায় থাকেনি। ইদানীং কমিশনের বিরুদ্ধে শাসক দলের প্রতি চূড়ান্ত পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী নেতারা।