অমর একুশে বইমেলা ২০২৩
প্রকাশকদের চোখ সামনের দিনে
হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বইমেলা নিয়ে প্রকাশকদের আশাবাদের কমতি নেই। কোভিড-১৯ এর সময় বইমেলা নিয়ে যে হতাশা তারা এবার বই বিক্রি করে তা কাটিয়ে উঠতে চান। শুক্রবার ও শনিবার বিক্রিতে তারা পুরোপুরি সন্তুষ্ট হতে না পারলেও আশা ছাড়েননি। তাদের প্রত্যাশা মেলার আগামী দিনগুলোতে অনেক বই বিক্রি হবে।
অন্বেষা প্রকাশনীর প্যাভিলিয়নে প্রকাশক শাহাদাত হোসেন যুগান্তরকে বলেন, মেলার যারা আসছেন তারা সবাই বই কিনবেন এমনটা ভাবি না। তবে মানুষ যে বইয়ের টানে আসছেন, বই দেখছেন এটাও কম নয়। এখান থেকেই পাঠক সৃষ্টি হবে ও তারাও বই কিনবেন।
অনিন্দ্য প্রকাশনীর প্রকাশক আফজাল হোসেন বলেন, এবার আমাদের প্যাভিলিয়ন পেছনের দিকে পড়েছে। যে কারণে পাঠকের আনাগোনা কম ও বিক্রিও খুব আশানুরূপ নয়। কিন্তু আমরা আশা করছি সত্যিকারের বিক্রি খুব শিগগিরই শুরু হবে।
শনিবার সকালে শুরু হয়ে রাত রাত ৯টা পর্যন্ত চলে বইমেলা। শুক্রবারের তুলনায় এদিন জনসমাগম কিছুটা কমই ছিল। আবার জনসমাগম যতটা হয়েছে তার তুলনায় বইয়ের বিক্রি কম ছিল।
তবে মেলা জুড়েই এদিন দেখা গেছে বইয়ের প্রকাশনা ঘিরে উৎসব আমেজ। বিভিন্ন স্টলের সামনেই লেখক ও তাদের আত্মীয়পরিজন, বন্ধুরা মিলে নতুন বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেছেন। ছিল মিষ্টিমুখেরও আয়োজন। এদিন সকালে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রায় ২০০ শতাধিক প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
বিকালে বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় স্মরণ : আশরাফ সিদ্দিকী ও স্মরণ সাঈদ আহমদ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইয়াসমিন আরা সাথী ও মাহফুজা হিলালী। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন উদয়শংকর বিশ্বাস, শামস্ আল দীন, রীপা রায় ও আব্দুল হালিম প্রামাণিক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন খুরশীদা বেগম।
প্রাবন্ধিকদ্বয় বলেন, ড. আশরাফ সিদ্দিকী ছিলেন প্রথিতযশা লোকসংস্কৃতি সংগ্রাহক ও বিশ্লেষক। তিনি বাংলাদেশ তথা উপমহাদেশের ফোকলোর চর্চায় ভিন্নতার অনুসন্ধান করেছেন। ফোকলোরের নানা অনুষঙ্গ বিজ্ঞানসম্মতভাবে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের মাধ্যমে জনসম্মুখে প্রকাশ করেছেন। অপরদিকে সাঈদ আহমদ ছিলেন বাঙালি হয়েও একজন বিশ্বমানব। বাংলা ও ভারতীয় সংস্কৃতি তো বটেই বিশ্বের প্রতিটি দেশের সংস্কৃতির প্রতি ছিল তার প্রবল আগ্রহ। লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন মুর্শিদা বিনতে রহমান, রমজান মাহমুদ, ইশরাত তানিয়া ও কবির কল্লোল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা পাঠ করেন কবি হারিসুল হক, রিশাদ হুদা, শেলী সেলিনা, আসাদউল্লাহ ও জরিনা আখতার। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী গোলাম সারোয়ার, মো. মাসকুরে সাত্তার, বেলায়েত হোসেন ও সায়েরা হাবীব। এছাড়াও ছিল জাহাঙ্গীর চৌধুরীর পরিচালনায় আবৃত্তি সংগঠন ‘উদ্ভাস আবৃত্তি সংগঠন’ ও অমিত হিমেলের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সমস্বর’র পরিবেশনা। সংগীত পরিবেশন করেন রওশন আলম, অনাবিল ইহসান, মামুনুল হক সিদ্দীক, জুলি শারমিলী, ফারহানা আক্তার, মো. রবিউল হক, আরতি রানী সেন ও জয় চক্রবর্তী।
নতুন বই : বইমেলার ১১তম দিনে নতুন বই এসেছে ১৯১টি। এদিন বইমেলায় আগামী প্রকাশনী থেকে এসেছে শামীমা সুলতানার প্রবন্ধ ‘শেখ রেহানা : এক দীপ্ত শিখা’, নবান্ন প্রকাশনী এনেছে রওশন জাহিদের লোকসংস্কৃতির বই ‘বাংলাদেশের লোকসংস্কৃতি : নারী ক্ষমতায়ন ও সামাজিক অবস্থান’, নবান্ন প্রকাশনী এনেছে কবি মুহাম্মদ সামাদের কাব্যগ্রন্থ ‘শৃঙ্খল মুক্তির জন্য কবিতা’, কথাপ্রকাশ থেকে মোশতাক আহমেদের কিশোর গোয়েন্দা উপন্যাস ‘নয়ন স্যার’, ঐতিহ্য থেকে মনজুরুল হকের রাজনীতিবিষক গ্রন্থ ‘ইউক্রেন যুদ্ধ’, চয়ন প্রকাশনী এনেছে ডা. অরূপ রতন চৌধুরীর স্বাস্থ্য বিষয়ক বই ‘মুখ ও তাদের ৬০টি সমস্যা ও সমাধান’, পাঞ্জেরি পাবলিকেশনস এনেছে তানজিনা আক্তারের শিশুতোষ গল্প ‘বুদ্ধিমতী রাজকন্যা।’