Logo
Logo
×

শেষ পাতা

তিনটি রেলপথ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী

রেল যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে

Icon

বাসস

প্রকাশ: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রেল যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ইনশাআল্লাহ ২০৩০ সালের মধ্যে এই ঢাকা শহরেই রেল যোগাযোগের একটা আলাদা পরিবেশ তৈরি হবে। এতে মানুষের যোগাযোগ, যাতায়াত সহজ এবং আমাদের তেলের খরচ বাঁচবে। ঢাকা শহরও যানজটমুক্ত হবে। সেভাবেই আমরা আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি।

তিনি বলেন, রেল খাতে সব প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্দেশীয় রেল যোগাযোগব্যবস্থায় নবদিগন্তের সূচনা হবে এবং রেল পরিষেবায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে।

প্রধানমন্ত্রী বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ রেলওয়ের ৩টি প্রকল্পের আওতায় নবনির্মিত ৬৯ দশমিক ২০ কিমি. রেলপথে রূপপুর (ঈশ্বরদী), শশীদল (কুমিল্লা) ও জয়দেবপুর (গাজীপুর) স্টেশন থেকে যুগপৎভাবে ট্রেন চলাচলের উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে রূপপুর, শশীদল ও জয়দেবপুরে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতোমধ্যে আমরা মেট্রোরেল উদ্বোধন করেছি, যেটা পরবর্তী সময়ে উত্তরা থেকে কমলাপুর রেলস্টেশন পর্যন্ত বর্ধিত করা হবে। মেট্রোরেলের ক্ষেত্রে আমরা পাতালেও যাচ্ছি। ইতোমধ্যে এমআরটি লাইন-১-এর অধীনে পাতাল রেলের নির্মাণকাজেরও শুভ উদ্বোধন করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা থেকে মন্দবাগ ও কুমিল্লার শশীদল থেকে রাজাপুর পর্যন্ত ডাবল লাইনে ৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথ, ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে তৃতীয় ও চতুর্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ লাইন নির্মাণ প্রকল্পের আওতায় টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ১১ কিলোমিটার ডাবল লাইনে ট্রেন চলাচল এবং পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলায় রূপপুর রেলস্টেশন, নবনির্মিত ও সংস্কার করা ২৬ দশমিক ৫০ কিলোমিটার রেললাইন উদ্বোধন করেন।

সরকারপ্রধান বলেন, ১৯৬৫ সালে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় যেসব রেল-লিংক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, আওয়ামী লীগ সরকার সেগুলো একে একে উন্মুক্ত করে দিচ্ছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ও ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিটের (এলওসি-১) অর্থায়নে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ‘বাংলাদেশ রেলওয়ের ঢাকা-টঙ্গী সেকশনে ৩য় ও ৪র্থ ডুয়েলগেজ লাইন এবং টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ডুয়েলগেজ ডাবল লাইন নির্মাণ (ডিটিজেডিএলপি)’ শীর্ষক প্রকল্পের নির্মাণকাজ এগিয়ে চলেছে।

এই প্রকল্পের আওতায় টঙ্গী-জয়দেবপুর সেকশনে ১১ দশমিক ০৯ কিলোমিটার রুটে ডাবল লাইন নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়েছে। এই সেকশনে ডাবল লাইনে ট্রেন চালু করা হলে ধীরাশ্রম স্টেশনে ক্রসিংয়ের জন্য দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। ফলে সব ট্রেনের যাত্রাসময় বাঁচবে এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা হ্রাস পাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ লুপলাইন ও আপ-ডাউন লাইনসহ ৩২ কিলোমিটার নবনির্মিত লাইন উদ্বোধনের ফলে ঢাকা-চট্টগ্রাম করিডরে ট্রেন চলাচল অধিকতর নিরাপদ ও দ্রুততর হবে এবং অধিকসংখ্যক ট্রেন চালু করা সম্ভব হবে।

রেলপথমন্ত্রী মো. নুরুল ইসলাম সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রেলপথ সচিব ড. মো. হুমায়ুন কবির স্বাগত বক্তব্য দেন। আরও বক্তৃতা করেন ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনার ড. বিনয় জর্জ।

প্রধানমন্ত্রী জানান, গত ১৪ বছরে তার সরকার ৬৫০ কিলোমিটার নতুন রেললাইন নির্মাণ, ২৮০ কিলোমিটার মিটারগেজকে ডুয়ালগেজে রূপান্তর এবং ১ হাজার ২৯৭ কিলোমিটার লাইন পুনর্বাসন/পুনর্নির্মাণ করেছে। ১২৬ নতুন স্টেশন ভবন ও ২২৩টি স্টেশন ভবন পুনর্বাসন/পুনর্নির্মাণ করেছে। পাশাপাশি ৭৩২টি নতুন রেলসেতু, ৭৭৪টি রেলসেতু পুনর্বাসন/পুনর্নির্মাণ এবং ৫০টি ব্রডগেজ ও ৫০টি মিটারগেজ যাত্রীবাহী কোচ পুনর্বাসন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ১০৬টি লোকোমোটিভ, ২০ সেট ডিইএমইউ, ৫৩৫টি যাত্রীবাহী ক্যারেজ এবং ৫১৬টি মালবাহী ওয়াগন সংগ্রহ করেছি। ১৩০টি স্টেশনে সিগন্যালিং ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকায়ন করেছি। ইতোমধ্যে ৪৪টি নতুন এবং বর্ধিত রুটে মিতালি এক্সপ্রেসসহ ১৪২টি নতুন ট্রেন চালু করা হয়েছে।

যুগান্তরের ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি জানান, সকাল থেকে নবনির্মিত ‘রূপপুর’ স্টেশন এলাকায় সাজ সাজ রব ওঠে। ব্যানার-ফেস্টুন দিয়ে সাজানো ছিল চারপাশ। প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের পর মালবাহী ৫টি ওয়াগনের একটি ট্রেন রূপপুর স্টেশন থেকে ছেড়ে ঈশ্বরদী অভিমুখে ছেড়ে যায়।

বাংলাদেশে বৃহত্তর জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের বিভিন্ন খাতে বৃহত্তর বিনিয়োগের জন্য জাপানি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশনের (জেবিআইসি) গভর্নর নবুমিতশু হায়াশি প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এলে তিনি এ আহ্বান জানান।

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিস রাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ বিষয়ে ব্রিফ করেন। জেবিআইসি গভর্নর বলেন, জাপান বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদার। এ দেশের উন্নয়নের পথে আরও অবদান রাখার অঙ্গীকার করেন তিনি। এছাড়া তিনি বাংলাদেশের চিনি, প্রিপেইড গ্যাস মিটার উৎপাদনকারী শিল্প এবং বায়োমাস বিদ্যুৎ উৎপাদনে বিনিয়োগে জাপানের আগ্রহের কথা তুলে ধরেন। পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশে জাপানি রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

শান্তিরক্ষা মিশনে গাম্বিয়ার সঙ্গে সেনা মোতায়েনে সম্মত বাংলাদেশ : জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দুই দেশের সৈন্য মোতায়েনের বিষয়ে গাম্বিয়ার প্রস্তাবে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ। গাম্বিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মামাদু তাঙ্গারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে গণভবনে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে এসে গাম্বিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রস্তাবের একটি অনুরোধপত্র হস্তান্তর করলে প্রধানমন্ত্রী নীতিগতভাবে এতে সম্মতি দেন।

প্রধানমন্ত্রী মিয়ানমার থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বাংলাদেশকে সহায়তা করার জন্য গাম্বিয়ান সরকারকে ধন্যবাদ জানান। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর স্পিচরাইটার এম নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

গাম্বিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেরিং মোদুউ এনজিইস, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম