Logo
Logo
×

শেষ পাতা

মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জের

বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে না ৬৯ জাহাজ

Icon

আমির হোসেন আমু, মোংলা (বাগেরহাট)

প্রকাশ: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে না ৬৯ জাহাজ

যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা থাকায় সাতটি কোম্পানির ৬৯টি জাহাজ মোংলা বন্দরসহ বাংলাদেশের জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি পাচ্ছে না। এ কোম্পানিগুলো রাশিয়ান সরকার ও ব্যক্তিমালিকানাধীন।

পণ্য পরিবহণ ও সংরক্ষণ করাও যাবে না ওই কোম্পানির তালিকায় থাকা জলযানসমূহ। ইতোমধ্যে এ তালিকায় থাকা ‘এমভি ঊরসা মেজর’ নামের রুশ পতাকাবাহী জাহাজকে দেশের জলসীমায় প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এ জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের যন্ত্রপাতি মালামাল নিয়ে এসেছিল। ২৪ ডিসেম্বর এ জাহাজটি মোংলা বন্দরে ভেড়ার কথা থাকলেও অনুমতি না পেয়ে সমুদ্র হতেই ফিরতে হয়। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা বিদেশগামী জাহাজের বিষয়টি দেশের তিনটি সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষ ও শিপিং এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে অবগত করা হয়েছে।

জানা গেছে, ৫ জানুয়ারি নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও প্রটোকল শাখা থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে সমুদ্রবন্দর কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত অবগতপত্র পাঠায়। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের চুক্তি ও প্রটোকল শাখার উপসচিব এসএম মোস্তফা কামাল স্বাক্ষরিত এ পত্রে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের নিষেধাজ্ঞানুযায়ী, রুশ সরকার ও ব্যক্তিমালিকানাধীন ৭টি কোম্পানির ৬৯টি বাণিজ্যিক জাহাজকে বন্দরে প্রবেশ, নিবন্ধন, জাহাজের বাঙ্কারিং (জ্বালানি তেল সরবরাহ), শ্রেণিকরণ, সনদায়ন, রক্ষণাবেক্ষণ, পুনঃসরবরাহ, রিফুয়েলিং, বিমা এবং অন্যান্য সামুদ্রিক পরিষেবা ইত্যাদি নিষেধাজ্ঞার আওতায় এনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণসহ পতাকা রেজিস্ট্রেশনকারী সংস্থা কর্তৃক তালিকাভুক্ত জাহাজগুলোর জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী যে কোনো ধরনের রেজিস্ট্রেশন প্রদান না করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়।

নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা জয়েন্ট স্টক কোম্পানি নর্দান শিপিং কোম্পানির জাহাজ রয়েছে ২৭টি। এছাড়া ট্রান্সমোটফ্লটের ১৬টি, নর্ড প্রজেক্ট ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির ১৫টি, এসসি সাউথের ৪টি, ওবোরন লজিস্টিক ও এম লিজিংয়ের ৩টি করে এবং মেরিন ট্রান্স শিপিংয়ের ১টি জাহাজ রয়েছে।

এদিকে নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ে নাম পরিবর্তন করেছে এসসি সাউথ কোম্পানির জাহাজ এমভি উরসা মেজর। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব স্টেটের কালো তালিকাভুক্ত এসব জাহাজ বিভিন্ন সময় অস্ত্র ও গোলাবারুদ পরিবহণ করেছে বলে আন্তর্জাতিকভাবে অভিযোগ রয়েছে। রাশিয়ার জাহাজ ‘স্পার্টা-৩’ ওরফে ‘উরসা মেজর’ নামের জাহাজটি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণসামগ্রী বহন করে মোংলা বন্দরে ভেড়ার অপেক্ষায় ছিল ২৪ ডিসেম্বর থেকে। তার আগেই ২০ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে জানানো হয়-এটি মার্কিন নিষেধাজ্ঞার তালিকায় থাকা ‘স্পার্টা-৩’ জাহাজ। বিষয়টি যাচাই করে বাংলাদেশে নিশ্চিত হয়ে জাহাজটিকে বন্দরে প্রবেশের অনুমতি দেয়নি।

এরপর জাহাজটি পশ্চিমবঙ্গের হলদিয়া বন্দরে গিয়ে সরঞ্জাম খালাসের চেষ্টা করে। কিন্তু জাহাজটি নয়াদিল্লির অনুমতি পেতে ব্যর্থ হলে পণ্য খালাস করতে পারেনি। এ অবস্থায় ১৬ জানুয়ারি ভারতের জলসীমা ছেড়ে যায় জাহাজটি। এ জাহাজটি বর্তমানে চীনে রয়েছে। জাহাজটিতে থাকা রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্রের যন্ত্রপাতি নিয়ে ৩১ জানুয়ারি মোংলা বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। কিন্তু অন্য জাহাজে পৌঁছাবে এ মালামাল।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের হারবার মাস্টার ক্যাপ্টেন শাহীন মজিদ জানান, ৫ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো চিঠিতে আমেরিকার শিপিং সংস্থার নিষেধাজ্ঞা অনুযায়ী সাতটি কোম্পানি এবং ৬৯টি জাহাজের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এরই মধ্যে এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তবায়ন করতে ৬৯টি জাহাজের তালিকা বন্দর সংশ্লিষ্ট এজেন্ট ও ব্যবসায়ীদের অবগত করা হয়েছে। যাতে এসব জাহাজ মোংলা বন্দরে প্রবেশ করতে না পারে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়ার উল্লেখযোগ্য জাহাজগুলো হচ্ছে-এমভি স্পার্টা-১, স্পার্টা-২, বেলোমোরস্কাই, সিজহোবকা, ডিভিনস্কাই জালিভ, ইনযিনার টারবিন, ইনযিনার ভেসনিয়াকব, আইহোহান মাহমাসতাল, ক্যাপ্টেন কোকোভিন, রাইনসিন, মেখানিক আরভেস, মিকালইল লোমোনোসোভ, এস কুজনিসোভ, সাইয়ানি সেভারা, এসএমপি নোভোডিভিনেস্ক ও এসএমপি সেভারোডিভিনেস্ক।

রাশিয়ার এসব জাহাজে মেশিনারিজ পণ্য আনার কথা ছিল বলেও জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে মোংলা বন্দরের ব্যবসায়ী এইচএম দুলাল জানান, মার্কিন সরকারের নিষেধাজ্ঞার কবলে থাকা রাশিয়ার ৭টি কোম্পানি ও ৬৯টি জাহাজের তালিকা বন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে পেয়েছেন।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম