Logo
Logo
×

শেষ পাতা

বাকৃবি শিক্ষককে লাঞ্ছনা ছাত্রলীগ সভাপতির

Icon

বাকৃবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ১২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বাকৃবি শিক্ষককে লাঞ্ছনা ছাত্রলীগ সভাপতির

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) দুই শিক্ষককে লাঞ্ছনা এবং এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের ফার্মাকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলামের কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ড. পূর্বা এবং সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. আফরিনা মুস্তারিকে লাঞ্ছিত করা হয়। মারধর করা হয় অনুষদের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আফতাব দুর্বারকে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশের সভাপতি অধ্যাপক ড. এমএএম ইয়াহিয়া খন্দকার এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. পূর্বা ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এসব অভিযোগ তুলে ধরা হয়। এ সময় দোষীদের শাস্তির দাবি জানান তারা। এছাড়া বুধবার ঘটনার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে শিক্ষক ফোরামের একাংশ।

মারধরের শিকার শিক্ষার্থী আফতাব দুর্বার বলেন, এর আগেও বেশ কয়েকবার পরীক্ষা দিতে এসে হয়রানির শিকার হতে হয়েছে। এজন্য মঙ্গলবার আমার মাকে নিয়ে এসেছিলাম। পরীক্ষা শেষে কক্ষ ত্যাগের সময় ছাত্রলীগের কিছু নেতাকর্মীর আনাগোনা দেখে আমি ড. পূর্বা ইসলামের কক্ষে অবস্থান করি। পরে ছাত্রলীগ সভাপতি রিয়াদ এসে আমাকে মারধর করে এবং আমার মা ও শিক্ষকদের লাঞ্ছিত করে। এ সময় আমার খালা-খালুকেও অকথ্য ভাষায় গালাগাল এবং খালুকে মারধর করেন তিনি।

শিক্ষক ফোরামের একাংশের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রিয়াদের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ড. পূর্বার অফিস কক্ষে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে। ড. পূর্বা বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও শিক্ষার্থী দুর্বারকে তারা মারধর করতে থাকে এবং তার অফিস রুম তছনছ করে। মারধরের সময় ছাত্রকে রক্ষা করতে গিয়ে লাঞ্ছনার শিকার হন ড. পূর্বা ও সহকারী প্রক্টর ড. আফরিনা মুস্তারি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম। ঘটনার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, মারধর বা ধাক্কাধাক্কির সময় কাউকে রক্ষা করতে গেলে ধাক্কা লাগতেই পারে। কিন্তু সেই ধাক্কা লাগাকে যদি বলা হয় মারধর করা হয়েছে, তাহলে তো দায়িত্ব পালন করা যাবে না।

শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, শিক্ষক হিসাবে একজন শিক্ষার্থীকে রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। আমরা যারা শিক্ষক ছিলাম, তারা দুর্বারকে রক্ষার চেষ্টা করেছি। তবে অনেকের মধ্যে শিক্ষকদের কাউকে লাঞ্ছনা করা হয়েছে কি না, সেটি আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে প্রক্টর ড. মহির উদ্দীন বলেন, আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না। মারধরের ঘটনাটি আমার সামনে ঘটেনি।

অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সভাপতি খন্দকার তায়েফুর রহমান রিয়াদ বলেন, আমাকে হেয় করার জন্য অভিযোগগুলো সাজানো হয়েছে। এমন কোনো ঘটনাই ঘটেনি, বরং আমি ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দুর্বারকে ছেলেদের হাত থেকে বাঁচিয়ে সেখান থেকে বের হতে সাহায্য করেছি।

এদিকে ঘটনার রাতেই কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে রিয়াদের বিরুদ্ধে কেন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না জানতে চেয়ে এবং ৭ দিনের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।

তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন : বুধবার দুপুর ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির সামনের করিডরে তিন দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে গণতান্ত্রিক শিক্ষক ফোরামের একাংশ। দাবিগুলো হলো-বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরের পদত্যাগ, দোষীদের শাস্তির আওতায় নেওয়া এবং ঘটনার কোনো সুরাহা না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ প্রশাসনের পদত্যাগ। তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দাবিগুলো বাস্তবায়নে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষকরা। মানববন্ধনে ফোরামের অর্ধশতাধিক শিক্ষক অংশ নেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম