ছাত্রলীগের দুগ্রুপে বিরোধ
থার্টিফার্স্ট নাইটে আগারগাঁওয়ে যুবককে হত্যা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০২ জানুয়ারি ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানার পশ্চিম আগারগাঁওয়ে ছুরিকাঘাতে ফিরোজ আহমেদ (২৫) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। এ সময় সাকিব নামের আরেক যুবক আহত হন। শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের দুটি গ্রুপের অন্তর্কোন্দল থেকে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছে পুলিশ। ইতোমধ্যে এদের কয়েকজনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করতে পারলেই হত্যা রহস্য বেরিয়ে আসবে বলে আশা পুলিশের।
জানতে চাইলে শেরেবাংলা নগর থানার ভারাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উৎপল বড়ুয়া যুগান্তরকে বলেন, দুটি গ্রুপের মধ্যে পূর্বশত্রুতা ছিল। এরই অংশ হিসাবে বিরোধী পক্ষ এসে হামলা করে। এতে একজন নিহত ও অপরজন আহতের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ ঘটনায় নিহতের বাবা থানায় বাদী হয়ে মামলা করেছেন। জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ফিরোজের বাবা টিপু মিয়া যুগান্তরকে বলেন, শেরেবাংলা নগর থানার ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান তালহার সঙ্গে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি মুরাদের বিরোধ ছিল। থার্টিফার্স্টের রাতে ফিরোজসহ অন্য বন্ধুরা একসঙ্গে আনন্দ করে মুরাদকে বাসার দিকে এগিয়ে দেয়। সেখান থেকে ফিরোজের বাসায় ফেরার পথে তালহার ছেলেরা তাকে রাস্তায় পথরোধ করে মারধর করে। ছুরিকাঘাতে আহত করে রাস্তায় ফেলে রাখে। তাকে উদ্ধার করে তাকে ঢাকা মেডিকেলে কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শেরেবাংলা নগর থানার ছাত্রলীগের সভাপতি নাজমুল হাসান তালহাকে অসংখ্যবার কল করা হলেও তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। এরপর ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ মাহমুদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনিও জানান, রোববার সকাল থেকে তালহার সঙ্গে তিনিও কথা বলতে পারেননি। পরে রোববার সন্ধ্যায় তিনি যুগান্তরকে বলেন, ফানুস উড়ানো নিয়ে দুপক্ষের মধ্যে সমস্যা হয়েছে বলে শুনেছি। পুরো ঘটনার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে এখনো কিছু জানতে পারিনি। ঘটনায় রিয়াজের সংশ্লিষ্টতা থাকলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে ছাত্রলীগের কেউ জড়িত থাকলে ছাড় দেওয়া হবে না।
এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে পশ্চিম আগারগাঁও বিজ্ঞান জাদুঘরের ঢালে এ দুর্ঘটনাটি ঘটে। রক্তাক্ত অবস্থায় ফিরোজকে উদ্ধার করে প্রথমে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ভোর ৫টা ৫ মিনিটে ঢামেকের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
হাসপাতাল সূত্র আরও জানায়, পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার মো. টিপু মিয়ার ছেলে ফিরোজ। আগারগাঁওয়ের তালতলায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। ফিরোজ আহমেদ সমাজ সেবা অধিদপ্তরের হিসাব বিভাগে চাকরি করতেন। চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়। তার উপার্জনেই সংসার চলত। বাবা টিপু মিয়া এক সময়ে বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করলেও এখন বেকার।