ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি একটি বৈশ্বিক বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠার অগ্রযাত্রায়
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
শিক্ষার উন্নয়ন ছাড়া জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয় এই বাস্তবতা অনুধাবন করে নিরন্তর নতুন জ্ঞান সৃষ্টি, বিশ্বমানের পাঠদান, গবেষণা এবং মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাধ্যমে বাংলাদেশে উন্নত-আধুনিক ও সমৃদ্ধ শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার সুমহান ব্রতকে সামনে রেখে ২০০১ সালে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি শিক্ষাদানের জন্য লিবারেল আর্টস পদ্ধতি অনুসরণ করে যা নিত্যনতুন উদ্ভাবনী শক্তিতে শিক্ষার্থীদের উদ্বুদ্ধ করে। বাংলাদেশের ফ্ল্যাগশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে বর্তমানে ৮টি স্কুল, ৬টি ডিপার্টমেন্ট, ৩টি ইনস্টিটিউট এবং ৬টি সেন্টার রয়েছে। স্নাতক পর্যায়ে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে ১৬টি প্রোগ্রাম এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ২৪টি প্রোগ্রাম। মানসম্মত গবেষণার জন্য ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ গভর্ন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অফ এডুকেশনাল ডেভেলপমেন্ট, ব্র্যাক জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ এবং সেন্টার ফর পিস অ্যান্ড জাস্টিসসহ ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির অনেকগুলো প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিকভাবে প্রখ্যাত গবেষণা প্রতিষ্ঠান হিসাবে সুনামের সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করে চলেছে।
টাইমস হায়ার এডুকেশন (টিএইচই) ইউনিভার্সিটি ইমপ্যাক্ট র্যাংকিং ২০২৩-এ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার ‘দারিদ্র্যবিমোচন’ অর্জনে বিশ্বের সেরা পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। এছাড়াও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের বার্ষিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ২০১৯ ও ২০২০ সালে টানা দুবার দেশের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে গবেষণা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করেছে। উদ্ভাবনী অসংখ্য উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্টুডেন্ট লাইফ এক্সপেরিয়েন্সকে আরও উন্নততর করেছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। ইতিবাচক সামাজিক পরিবর্তন এবং চতুর্থ শিল্প বিপ্লবকে মাথায় রেখে শিক্ষার্থীদের দক্ষ, সৃজনশীল এবং উদ্ভাবনী শক্তি বিকাশে কাজ করে চলেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এখানে রয়েছে একটি আবাসিক সেমিস্টার, যা শিক্ষার্থীদের মাঝে দারুণ জনপ্রিয় এবং ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত সকল শিক্ষার্থীকে সাভারে অবস্থিত এই ক্যাম্পাসে একটি সেমিস্টার সম্পন্ন করতে হয়। এক সাথে ক্যাম্পাসে থাকা ও লেখাপড়ার মাধ্যমে তারা আত্মনির্ভরশীল হয়ে ওঠে, একই সাথে তাদের সমাজ সেবামূলক নেতৃত্বগুণের বিকাশ ঘটে।
আন্তর্জাতিক শিক্ষাঙ্গনেও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি এখন একটি সুপরিচিত নাম। গত দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে আন্তর্জাতিকমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। বিশ্বের ২৫০টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সাথে শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রম সংক্রান্ত চুক্তি রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির। এসব নেটওয়ার্ক ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে শিক্ষাগ্রহণের সুযোগ বাড়িয়েছে। একমাত্র দক্ষিণ এশীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে ওপেন সোসাইটি ইউনিভার্সিটি নেটওয়ার্কে যোগ দিয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। ওপেন সোসাইটি ইউনিভার্সিটি নেটওয়ার্ক হলো বিশ্বজুড়ে শিক্ষাকে সমন্বিত করতে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশন দ্বারা একত্রিত হওয়া বৈশ্বিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহের একটি জোট। সেই সাথে দ্য ওয়ার্ল্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি নেটওয়ার্কের মতো আরো বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।
ব্র্যাক ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে দেশের মধ্যে অন্যতম বৃহৎ স্কলারশিপ এবং ফিন্যান্সিয়াল এইড প্রোগ্রাম। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদের মেধাভিত্তিকসহ বিভিন্ন ধরনের স্কলারশিপ ও ফিন্যান্সিয়াল এইড সুবিধা দিয়ে থাকে।
উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি। উচ্চ শিক্ষায় গবেষণা ও শিক্ষার মান উন্নয়নে টিচিং-লার্নিং নিয়ে কাজ করতে একটি ‘সেন্টার অফ এক্সেলেন্স’ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এই সেন্টার অফ এক্সেলেন্স প্রতিষ্ঠার মূল লক্ষ্য হচ্ছে গ্র্যাজুয়েটদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং দেশ ও বিশ্বের জন্য দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা। সেই সাথে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠার জন্য সম্ভাব্য সকল ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি একটি শিক্ষার্থীবান্ধব বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়টি শিক্ষার্থীদেরকে তাদের সকল উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দুতে রাখতে সর্বদা প্রতিশ্রুতবদ্ধ। মানসম্মত গবেষণা, দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিসহ নানাবিধ অনন্য কর্মকৌশলের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক উচ্চশিক্ষার মানচিত্রে জায়গা করে নেওয়া এবং একটি বৈশ্বিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত হতে চায় ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি।