Logo
Logo
×

যুগান্তরের বিশেষ আয়োজন

২০ বছরে ৮৫ কোটি টাকার বৃত্তি ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির: মো. আলী আজ্জম

চেয়ারম্যান, ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি

Icon

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তর : আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন। বর্তমানে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি অনুষদ, বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট রয়েছে। আপনাদের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সংখ্যার অনুপাত কত? শিক্ষার্থীদের জন্য আর কী কী সুবিধা রয়েছে?

মো. আলী আজ্জম : উচ্চশিক্ষার গুণগতমান নিশ্চিতকরণ এবং এর সম্প্রসারণের লক্ষ্যে ২০০৩ সালে ঢাকার ধানমন্ডিতে স্বল্প কয়েকটি প্রোগ্রাম নিয়ে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। দেশের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত বেশকিছু নিবেদিতপ্রাণ শিক্ষানুরাগী শিল্পপতি, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, অবসরপ্রাপ্ত উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা তাদের সামাজিক দায়িত্ব হিসাবে কোনো ধরনের মুনাফা ছাড়াই নিঃস্বার্থভাবে দক্ষ মানবসম্পদ, দেশপ্রেমিক ও নেতৃত্বের গুণাবলিসম্পন্ন মানুষ তৈরির জন্যই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলেন। A Leader in Quality Education এবং Distinction in Education কে মূলমন্ত্র হিসাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই বিগত বিশ বছর যাবত এই বিশ্ববিদ্যালয়কে দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান হিসাবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। দেশের সবচেয়ে মেধাবী, দক্ষ ও সুপরিচিত শিক্ষকমণ্ডলী দ্বারা শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য সব ধরনের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য ড. সহিদ আকতার হুসাইন যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর হিসাবে আগে কর্মরত ছিলেন। তার নেতৃত্বে অত্যন্ত অভিজ্ঞ অধ্যাপক এবং দক্ষ ও মেধাবী শিক্ষকমণ্ডলীর সমন্বয়ে শিক্ষার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি করে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি এখন দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে জাতীয় পর্যায়ে স্বীকৃতি লাভ করেছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের নির্দেশনা মোতাবেক ২০১৮ সালের মে মাস থেকে স্থায়ী ক্যাম্পাসে ক্লাস শুরু করে এ বিশ্ববিদ্যালয়। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি পরিচালনার ক্ষেত্রে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ এর সব ধারা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি কর্তৃক সময়ে সময়ে জারি করা সব আদেশ-নির্দেশ অনুসরণ ও প্রতিপালন নিশ্চিত করায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয় গত ২২ মার্চ ২০২৩ তারিখ ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটিকে স্থায়ী সনদ প্রদান করেন।

কর্মমুখী শিক্ষা কারিকুলাম আর সময়োপযোগী প্রোগ্রাম নিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম চালাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচটি অনুষদের অধীনে ১৪টি প্রোগ্রাম পরিচালিত হচ্ছে। অনুষদগুলো হলো আইন, কলা, ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি, লাইফ সায়েন্স এবং ব্যবসায় প্রশাসন। চার বছরের স্নাতক কোর্সগুলো হলো : কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, ইলেকট্রনিকস অ্যান্ড ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং, বিবিএ, বিবিএ ইন ইসলামিক ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স, এলএলবি (অনার্স), ফার্মাসি, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইংরেজি (অনার্স) এবং স্নাতকোত্তর কোর্সগুলো হলো : এমবিএ, এমবিএ ইন ইসলামিক ফিন্যান্স, ব্যাংকিং ও ইন্স্যুরেন্স, ইএমবিএ, এলএলএম, এমএ ইন ইএলএল ও এমএ ইন ইএলটি। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের জন্য এখানে স্পোকেন ইংলিশ সার্টিফিকেট কোর্স চালু রয়েছে।

বর্তমানে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক এবং শিক্ষার্থী সংখ্যার অনুপাত ১:১৭ যা অন্য বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের মধ্যে একটি উন্নতি সূচক।

ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য আমাদের সব ধরনের উদ্যোগ রয়েছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উৎসাহের ভিত্তিতে শিল্প, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক প্রতিভা বিকাশের লক্ষ্যে সহ-পাঠ্যক্রমিক কার্যক্রম হিসাবে বিভিন্ন বিষয়ক ২৩টি ক্লাব রয়েছে। সব ছাত্র-ছাত্রীর জন্য প্রয়োজনীয় অত্যাধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপন করা হয়েছে।

যুগান্তর : বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থীরা আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য আপনাদের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো সহযোগিতা বৃত্তির ব্যবস্থা আছে কিনা?

মো. আলী আজ্জম : বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থীরা আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। কোভিড পরিস্থিতিতে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় টিউশন ফিতে অনার্সে ৫০ শতাংশ এবং মাস্টার্সে ৪০ শতাংশ ওয়েভার দিয়েছে। এছাড়া এসএসসি ও এইচএসসির প্রতিটিতে গোল্ডেন জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের জন্য রয়েছে টিউশন ফিতে ১০০ শতাংশ ওয়েভারে শিক্ষার সুবিধা। বিশেষ করে গরিব এবং মেধাবী শিক্ষার্থীদের আমরা বিভিন্ন শিক্ষাবৃত্তি, স্টুডেন্ট ওয়েলফেয়ার ফান্ড থেকে সহযোগিতা ও শিক্ষাঋণ প্রদান করে আসছি। ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি প্রতি বছর প্রায় ছয় কোটি ৫০ লাখ টাকা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দিয়ে থাকে। গত ২০ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রায় ৮৫ কোটি টাকার বৃত্তি প্রদান করেছে।

যুগান্তর : এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু বলুন।

মো. আলী আজ্জম : ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই মানের বিষয়ে আপসহীন থেকে দেশে উচ্চশিক্ষার প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। মানসম্পন্ন গ্র্যাজুয়েট তৈরিতে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের রয়েছে ব্যাপক সুনাম। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ের সংখ্যা কম হলেও এ পর্যন্ত ডিগ্রিপ্রাপ্ত হয়েছেন প্রায় সাড়ে ১০ হাজার। বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে উচ্চ পর্যায়ে সুনাম ও সুখ্যাতির সঙ্গে কর্মরত আছেন। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের এলএলবি অনার্স সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শীর্ষে। ঢাকা বার পরীক্ষায় সর্বাধিক সফলতা রয়েছে এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটদের।

যুগান্তর : দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী সুবিধা রয়েছে?

মো. আলী আজ্জম : এই বিশ্ববিদ্যালয়ে দরিদ্র ও মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বৃত্তি, টিউশন ফি মওকুফ ও সুদবিহীন শিক্ষাঋণের ব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য খণ্ডকালীন চাকরির মাধ্যমে সীমিত আয়েরও ব্যবস্থা আছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের জন্য টিউশন ফি মওকুফ চালু রয়েছে এবং মেধাবী ও অনগ্রসর অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের জন্য শতভাগ বিনা বেতনে অধ্যয়নের সুযোগ রয়েছে।

যুগান্তর : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনারা কী কী সহযোগিতা প্রদান করেন?

মো. আলী আজ্জম : ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, চীন, মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নামকরা ১৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য পারস্পরিক সহযোগিতামূলক চুক্তি আছে। ফলে ছাত্রছাত্রীরা উন্নত দেশগুলোতে ক্রেডিট ট্রান্সফার করে অথবা স্কলারশিপ নিয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য সেখানে যেতে পারেন।

যুগান্তর : আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী ক্যাম্পাস ইউজিসির অনুমোদিত কি না?

মো. আলী আজ্জম : বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন স্থায়ী ক্যাম্পাস পরিদর্শন করে গত ১২ অক্টোবর ২০২০ তারিখে স্থায়ী ক্যাম্পাস হিসাবে অনুমোদন প্রদান করেন।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম