শিক্ষার পরিবেশের জন্য আদর্শ প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি: অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মুনিরুজ্জামান
উপাচার্য (ভারপ্রাপ্ত), প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি
প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনক্রমে ২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের Motto ‘Quality Education for All’-এ মূলমন্ত্র আমরা এখন পর্যন্ত ধরে রাখতে পেরেছি বলে আমাদের বিশ্বাস। শুরুতে ৩টি অনুষদ যথাক্রমে School of Engineering, যার অধীনে বিভাগগুলো হচ্ছে Department of Computer Science & Engineering (CSE), Department of Electronics & Electrical Engineering (EEE), Department of Telecommunication Engineering (ETE), Department of Civil Engineering, School of Business Administration I Economics, যার অধীনে যে Degree দেওয়া হচ্ছে তা হলো Bachelor of Business Administration, Masters of Business Administration এবং BSS/MSS in Economics. School of Liberal Arts & Humanities, যার অধীনে যে Degree দেওয়া হয় তা হলো BA in English এবং MA in ELT.
বর্তমানে ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় ২৫০০-এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকার ফলে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষক সংখ্যার অনুপাত ১:১২, যা শিক্ষার পরিবেশের জন্য আদর্শ। শিক্ষার পাশাপাশি একজন সুনাগরিক হিসাবে আমাদের ছাত্রছাত্রীদের গড়ে তোলার জন্য আমরা চালু করেছি অনেকগুলো ক্লাব, যারা তাদের কার্যক্রম নিয়মিত চালিয়ে যাচ্ছে। ক্লাবগুলো হচ্ছে Social Services Club, Biz Box, ECE Club, CE Club, Cultural Club, Games & Sports Club, English Language Club প্রভৃতি। এছাড়া Department of Students Affairs প্রতি সপ্তাহে সাম্প্রতিক বিষয়ে যেমন Chat GPT, CV Writing, Advance Excel, Content Writing Using GPT-4, Cyber Security প্রভৃতির ওপর Workshop, Lecture Series আয়োজন করে।
আমি আরেকটি বিষয় উল্লেখ করতে চাচ্ছি, জন্মলগ্ন থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়টি সমাজের অসচ্ছল পরিবারের কথা মাথায় রেখে কোর্স ফি, অ্যাডমিশন ফিসহ অন্যান্য ফি প্রায় সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক কম রাখা হয়েছে। এছাড়াও আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া দরিদ্র ও মেধাবী, মুক্তিযোদ্ধা পরিবার, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী, মেয়ে শিক্ষার্থীদের জন্য বহু ধরনের স্কলারশিপ, ওয়েভার চালু আছে। সেমিস্টারের শুরুতে Admission Fair-এ ভর্তিতে বিশেষ মূল্যছাড়ের ব্যবস্থা থাকে।
আমাদের আগামী প্রজন্ম এবং রাষ্ট্র উভয়েরই দরকার টেকসই ভবিষ্যৎ। বিশ্বায়ন এবং 4th ‘Industrial Revolution’ বা চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে আমাদের প্রতিযোগিতায় নামতে হবে সারা বিশ্বের রাষ্ট্রের সঙ্গে। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে টিকে থাকতে হলে দৃঢ় রাষ্ট্রীয় কাঠামো যেমন দরকার, তেমনই দরকার জনশক্তিকে গণসম্পদে পরিণত করা। এর জন্য প্রয়োজন কর্মসংস্থান, সঠিক শিক্ষা সিলেবাস, কারিগরি দক্ষতা, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্র এবং সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা।
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি আবুল খায়ের গ্রুপের তত্ত্বাবধানে পরিচালনা শুরুর পর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার অংশ হিসাবে অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এর উল্লেখযোগ্য হচ্ছে ‘একেজি’ IT বিশেষজ্ঞরা আমাদের IT বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন Software Development-এ কাজ করছে। তাছাড়া Mentorship, Internships Program-এ তারা ছাত্রছাত্রীদের সহযোগিতা করছেন। এসব প্রোগ্রাম ছাত্রছাত্রীদের তত্ত্বীয় জ্ঞানের পাশাপাশি ‘hands-on-experience’-এ বিরাট ভূমিকা রাখবে কর্মজীবনে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের কথা মনে রেখে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি এবং ‘ফ্যাকশন হোল্ডিংস’-এর (Faction Holding, USA) মধ্যে সম্প্রতি একটি Memorandum of Understanding (MOU) স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ MOU করার উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীদের Artificial Intelligence (AI), Smart City পরিকল্পনায় সংযুক্ত করা এবং সর্বশেষ প্রযুক্তির সঙ্গে পরিচিত করা। আমাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার মধ্যে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব Textile Engineering, Law, Pharmacy, Mechanical Engineering, Journalism প্রভৃতি বিভাগ খোলার ইচ্ছা আছে। এসব ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সহযোগিতা এবং সমর্থন পাবে বলে আমি আশা করছি।
আমি অত্যন্ত আন্তরিকতার সঙ্গে উল্লেখ করছি, উপাচার্য হিসাবে আমার যে কোনো সিদ্ধান্ত, পরামর্শ ও মতামত Board of Trustees-এর সদস্যরা সমর্থন ও সহযোগিতা করেছেন। যার ফলে অত্যন্ত স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে আমি আমার দায়িত্ব পালন করতে পারছি। এখানে আরও যোগ করতে চাই সব সহকর্মীর সম্পর্কে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্রগতি ও উন্নয়নে আমি সবার কাছ থেকে সহযোগিতা পেয়েছি। এ ধরনের একাত্মতার বন্ধন এ বিশ্ববিদ্যালয়কে একদিন উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে বহুদূর নিয়ে যাবে-এ আমার বিশ্বাস। আমরা কৃতজ্ঞ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি, যিনি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় উচ্চশিক্ষা গ্রহণে উৎসাহিত করেছেন।