Logo
Logo
×

যুগান্তরের বিশেষ আয়োজন

পোশাক শিল্পে দক্ষ কর্মী গড়তে ভূমিকা রাখছে বিইউএফটি: ড. এসএম মাহফুজুর রহমান

ভাইস চ্যান্সেলর, বিইউএফটি

Icon

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউএফটি) ভাইস চ্যান্সেলর হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স এবং ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস বিভাগের সাবেক অধ্যাপক এসএম মাহফুজুর রহমান একজন শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং জনতা ব্যাংকের চেয়ারপারসন। আইসিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান ড. এসএম মাহফুজুর রহমান রূপালী ব্যাংকের পরিচালকের দায়িত্ব পালন ছাড়াও সরকারি-বেসরকারিসহ আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার পরামর্শক হিসাবে কাজ করেছেন। তিনি বলেছেন, বস্ত্র ও পোশাক শিল্প বিষয়ে পড়াশোনা করে কর্মক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখছে বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মান এবং দেশের প্রযুক্তি খাতে দক্ষ একজন কর্মী হিসাবে গড়ে তুলতে এই বিশ্ববিদ্যালয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। যুগান্তরের সঙ্গে এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন যুগান্তর প্রতিবেদক হুমায়ুন কবির।

যুগান্তর : আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন। বর্তমানে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি অনুষদ ও বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট রয়েছে? বর্তমানে আপনাদের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের অনুপাত কত? শিক্ষার্থীদের জন্য কী কী সুবিধা রয়েছে?

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান : বর্তমানে বিইউএফটিতে স্নাতক, স্নাতকোত্তর, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং সার্টিফিকেট কোর্সে ২২টি প্রোগ্রামের শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে ১২টি স্নাতক, ৩টি স্নাতকোত্তর, ৪টি পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা এবং ৩টি সার্টিফিকেট কোর্স রয়েছে। নিয়মিত শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮টি অনুষদ এবং ১৪ বিভাগ রয়েছে। এছাড়াও প্রশিক্ষণ গবেষণা ও বিশেষায়িত শিক্ষা পরিচালনার জন্য ১টি ইনস্টিটিউট রয়েছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকের অনুপাত ১:২৬।

যুগান্তর : শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ ও ল্যাব এবং সেসবের সরঞ্জামাদি...

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান : বর্তমানে বিইউএফটিতে আধুনিক সরঞ্জাম সন্নিবেশিত ৭২টি শ্রেণিকক্ষ এবং ৫২টি ল্যাব রয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় এবং উন্নতমানের আরও বেশ কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ এবং ল্যাবরেটরি স্থাপন প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

যুগান্তর : শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য সুবিধা...

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান : শিক্ষার্থীদের ইন্টার্নশিপ ও চাকরির জন্য এখানে রয়েছে ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সেন্টার। প্রতিষ্ঠান ভ্রমণ, ইন্টার্নশিপ, প্রজেক্ট ওয়ার্ক প্রভৃতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের তৈরি পোশাকশিল্প ইউনিটের সঙ্গে নিবিড়ভাবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষা কার্যক্রমের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের শারীরিক সুস্থতা, যুক্তিভিত্তিক সমাজ বিনির্মাণ এবং পড়াশোনার পাশাপাশি তাদের সৃজনশীল কাজ, ক্রীড়া, বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক প্রতিভা বিকশিত করতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন ক্লাব রয়েছে। সেসবের মধ্যে আছে রোভার স্কাউট দল, সাংস্কৃতিক ক্লাব, বিতর্ক ক্লাব, গেমস ক্লাব, ফটোগ্রাফি ক্লাব, ডান্স ক্লাব, মিউজিক ক্লাব, থিয়েটার ক্লাব, ফিল্ম ক্লাব, পোয়েট্রি ক্লাব, ফ্যাশন ক্লাব, ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব, বিজনেস ক্লাব, সোশ্যাল ওয়েলফেয়ার ক্লাব, টেক্সটাইল ক্লাব, অ্যাপারেল ক্লাব, নিটওয়্যার ক্লাব ও অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। এছাড়াও অত্যাধুনিক জিমন্যাসিয়াম, খেলার মাঠ, সুইমিংপুল প্রভৃতির সুব্যবস্থা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে যাতায়াতের সুবিধার্থে ৩০টিরও বেশি সুপরিসর বাস রয়েছে, যেগুলো ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়মিত আনা-নেওয়া করে। এছাড়াও রয়েছে-

আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে সেমিস্টার ভিত্তিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইউজিসির নির্দেশনা মোতাবেক বছরে ২টি সেমিস্টার (স্প্রিং এবং ফল)।

প্রতিটি সেমিস্টারে মিড টার্ম ও ফাইনাল পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। প্রত্যেক ছাত্রের ক্লাসে উপস্থিতি, ক্লাস টেস্ট, অ্যাসাইনমেন্ট ও প্রেজেন্টেশনের মূল্যায়নের নম্বরগুলো চূড়ান্ত ফলাফলের সঙ্গে সংযুক্ত হয়।

পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশে-বিদেশে উচ্চশিক্ষাপ্রাপ্ত একদল দক্ষ ও অভিজ্ঞ শিক্ষক অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন এবং তারা যত্ন সহকারে শিক্ষার্থীদের মেধা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে তাদের শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রাণবন্ত করে তোলেন।

যুগান্তর : বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থীরা আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে। সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য আপনাদের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো সহযোগিতা আছে কি না?

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান : কোভিড মহামারির সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রাস্টি বোর্ড শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যগত, প্রলম্বিত শিক্ষাসময় সংক্রান্ত এবং আর্থিক ঝুঁকির বিবেচনায় নিয়ে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে বিশেষ ওয়েভার দেওয়া হয়েছে এবং ভর্তি ফির ৫০ শতাংশ ওয়েভার দেওয়া হয়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ২০১০, ধারা ৯, উপধারা ৪ অনুসরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তিকৃত পূর্ণকালীন শিক্ষার্থীদের ন্যূনতম শতকরা ছয়ভাগ, তন্মধ্যে শতকরা তিনভাগ আসন মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান এবং শতকরা তিনভাগ আসন প্রত্যন্ত অনুন্নত অঞ্চলের মেধাবী অথচ দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য সংরক্ষণপূর্বক এসব শিক্ষার্থীর টিউশন ফি ও অন্যান্য ফিতে অব্যাহতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নের সুযোগ দেওয়া হয়।

যুগান্তর : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে কিছু বলুন।

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান : দেশে উচ্চশিক্ষা প্রসারে প্রধানমন্ত্রীর সক্রিয় পৃষ্ঠপোষকতায় এবং সরকারের বিশেষ সহযোগিতায় ২০১২ সালের ১৪ মার্চ বিইউএফটি একটি পূর্ণাঙ্গ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে অনুমতি লাভ করে। ২০১২ সালের ১২ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মোট ১১টি প্রোগ্রামের অনুমোদনের মাধ্যমে বিইউএফটি শিক্ষা কার্যক্রমের যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রমগুলোর সন্তোষজনক অগ্রগতি বিবেচনায় নিয়ে ইউজিসি বেশ কয়েকটি নতুন বিষয় শিক্ষা কার্যক্রম চালুর অনুমতি প্রদান করে। বিগত তিন বছরে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব নতুন শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে, সেগুলো হচ্ছে ব্যাচেলর অব অ্যাপারেল মার্চেন্ডাইজিং অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট, ব্যাচেলর অব আর্টস (বিএ) ইন ফ্যাশন স্টাডিস, বিএসসি ইন কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, বিএসসি ইন এনভাইরনমেন্টাল সায়েন্স, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন গার্মেন্টস বিজনেস ম্যানেজমেন্ট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড ম্যানুফ্যাকচারিং সিস্টেম এবং পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ডিপ্লোমা ইন সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট।

যুগান্তর : শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনারা কী কী ভূমিকা পালন করেন?

প্রফেসর এসএম মাহফুজুর রহমান : বিইউএফটি ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাজীবন সমাপ্তিপূর্ব সেমিস্টারে এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এর আগে ইন্টার্নশিপের বিধান রয়েছে। এটি বাস্তবায়নের সময় ইন্টার্নশিপ যাতে শিক্ষার্থীর কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে সহায়ক হয়, তেমন ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম