Logo
Logo
×

যুগান্তরের বিশেষ আয়োজন

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার অনন্য বিদ্যাপীঠ : প্রফেসর ড. এম লুৎফর রহমান

উপাচার্য, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি

Icon

প্রকাশ: ২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যুগান্তর : আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম সম্পর্কে বিস্তারিত বলুন। বর্তমানে আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়টি অনুষদ, বিভাগ এবং ইনস্টিটিউট রয়েছে? শিক্ষার্থীদের জন্য অন্যান্য কী সুবিধা রয়েছে?

এম লুৎফর রহমান : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির (ডিআইইউ) যাত্রা শুরু ২০০২ সালের ২৪ জানুয়ারি। শিক্ষায় বিদেশমুখিতা কমাতে এবং শিক্ষার্থীদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ার দৃঢ়প্রত্যয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মানের শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে এবং শিক্ষার্থীদের বিশ্বমানের গ্র্যাজুয়েট তৈরির লক্ষ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয় যাত্রা শুরু করে। বর্তমানে প্রায় ২০ হাজার দেশি-বিদেশি শিক্ষার্থীর পদচারণায় মুখরিত এ বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রিন ক্যাম্পাস।

ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির পাঁচটি অনুষদে ২৭টি বিভাগ রয়েছে। প্রচলিত বিষয়গুলোর পাশাপাশি রয়েছে রিয়েল এস্টেট, মাল্টিমিডিয়া অ্যান্ড ক্রিয়েটিভ টেকনোলজি, ইনোভেশন ও এন্ট্রাপ্রেনারশিপ, জনস্বাস্থ্য এবং ফিজিক্যাল এডুকেশন ও স্পোর্টস সায়েন্সের মতো যুগোপযোগী বিষয়। সম্প্রতি গ্র্যাজুয়েট স্টাডিজ নামে আরেকটি অনুষদ চালু করা হয়েছে। এছাড়া শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য হিউম্যান রিসোর্স ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউট, ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব ল্যাংগুয়েজ এবং ড্যাফোডিল ইনস্টিটিউট অব সোশ্যাল সায়েন্সেস-এ তিনটি ইনস্টিটিউট কাজ করছে।

মেধাবী ও দক্ষ শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে আধুনিক এবং যুগোপযোগী সুযোগ-সুবিধা সংবলিত একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। শিক্ষার্থীদের শুধু একাডেমিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে সনদনির্ভর গ্র্যাজুয়েট হিসাবে গড়ে তোলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্য নয়, বরং একজন নীতি-নৈতিকতাবোধ এবং মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন সচেতন নাগরিক হিসাবে গড়ে তোলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল লক্ষ্য। আর এজন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে রয়েছে ‘আর্ট অব লিভিং’ কোর্স, যা প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য বাধ্যতামূলক। স্বাস্থ্য সচেতনতার জন্য রয়েছে জিমনেসিয়াম, সুইমিংপুল, রয়েছে ইনডোর এবং আউটডোর খেলাধুলার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। সারা বছর নানারকম সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালিত হয়, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে পারে। স্টার্টআপ মার্কেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের হাতেকলমে মার্কেটিং, বিপণনসহ ব্যবসার খুঁটিনাটি নানা দিক শেখানো হয়।

কয়েক বছর ধরে বিদেশি শিক্ষার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাস। ইতোমধ্যে আমেরিকা, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেপাল, দক্ষিণ কোরিয়া, সোমালিয়া, নাইজেরিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শতাধিক শিক্ষার্থী ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে বিভিন্ন বিভাগে পড়াশোনা করছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন ছয় শতাধিক এবং খণ্ডকালীন ২০০ জন দক্ষ এবং অভিজ্ঞ শিক্ষক দ্বারা পাঠদান করা হয়। ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কর্মকাণ্ড সফটওয়্যার ও অটোমেশনের আওতাভুক্ত। যুগোপযোগী তথ্যপ্রযুক্তি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত করে তোলার লক্ষ্যে এখানে প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি করে ল্যাপটপ দেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের রীতি অনুযায়ী বছরে দুবার (স্প্রিং ও ফল সেমিস্টারে) ভর্তি কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে।

যুগান্তর : বর্তমান পরিস্থিতিতে সারা বিশ্বেই শিক্ষার্থীরা আর্থিক ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে, সেক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের জন্য আপনাদের পক্ষ থেকে বিশেষ কোনো সহযোগিতা আছে কি না?

এম লুৎফর রহমান : ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় মূলত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানদের টার্গেট করেই প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতি সেমিস্টারে বিপুল পরিমাণ অর্থ ওয়েভার প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্ন শিক্ষা নিশ্চিত করছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। করোনাকালেও শিক্ষার্থীদের আর্থিক ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ১০-১৫ শতাংশ অতিরিক্ত বিশেষ বৃত্তি প্রদান এবং স্প্রিং ২০২১ সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের জন্য বিপুল পরিমাণে প্রণোদনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সংকটময় পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ২০১৩ সাল থেকে অনলাইনে শিক্ষাসম্পর্কিত নানা কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। সুতরাং অনলাইন ক্লাসের সঙ্গে ডিআইইউ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই অভ্যস্ত। অনলাইন শিক্ষাকে কার্যকর এবং যুগোপযোগী করার জন্য ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘ব্লেনডেড লার্নিং সেন্টার’ চালু করা হয়েছে। করোনাকালে ‘ব্লেনডেড লার্নিং সেন্টার’ ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অনলাইন শিক্ষাক্ষেত্রে যুগান্তকারী উদ্যোগ।

যুগান্তর : এ বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতি সম্পর্কে বলুন।

এম লুৎফর রহমান : মাত্র দুই দশকে সবাইকে অবাক করে দিয়ে ড্যাফোডিল উঠে এসেছে মানসম্পন্ন সেরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়। শুধু বাংলাদেশেই নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বখ্যাত টাইমস হায়ার এডুকেশন, কিউএস এশিয়া র‌্যাংকিং, ইউআই গ্রিন মেট্রিক্স র‌্যাংকিংয়ে ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সম্মানজনক অবস্থানে আছে। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা, নীতি-নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধের মতো বিষয়গুলোর ওপরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের রয়েছে সজাগ দৃষ্টি। এরই স্বীকৃতিস্বরূপ সম্প্রতি তৃতীয় বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপে ১২টি স্বর্ণ, ৮টি রৌপ্য ও ৮টি ব্রোঞ্জপদক অর্জনের মাধ্যমে ১২৫টি সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে পেছেনে ফেলে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২৩ নভেম্বর আর্মি স্টেডিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ট্রফি প্রদান করেন।

যুগান্তর : দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ে কী কী সুবিধা রয়েছে?

এম লুৎফর রহমান : ট্যালেন্ট স্কলারশিপের মাধ্যমে আর্থিক অসচ্ছল ও মেধাবী শিক্ষার্থীদের শতভাগ বৃত্তি প্রদান করা হয়। উচ্চমাধ্যমিক বা সমমান পরীক্ষায় মেধাস্থান অর্জনকারী শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ বৃত্তি দেওয়া হয়। সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীরা ১০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বৃত্তি পেয়ে থাকে। এছাড়া সহোদর, স্বামী-স্ত্রী, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, খেলোয়াড়, ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোচ্চ ১০০ শতাংশ বৃত্তি দেওয়া হয়।

যুগান্তর : বিশ্ববিদ্যালয়ে ও শিক্ষার্থীদের কর্মজীবনে প্রবেশের ক্ষেত্রে আপনারা কী কী ভূমিকা পালন করে থাকেন?

এম লুৎফর রহমান : ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি যাত্রার শুরু থেকেই শিক্ষার্থীদের টেকনোলজিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার ব্যাপারে গুরুত্ব দিয়ে আসছে। সে লক্ষ্যে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় ‘ওয়ান স্টুডেন্ট ওয়ান ল্যাপটপ’ প্রকল্পের আওতায় প্রত্যেক শিক্ষার্থীর হাতে দ্বিতীয় বর্ষ থেকেই বিনামূল্যে একটি করে ল্যাপটপ দিয়ে থাকে। এ পর্যন্ত ৫০ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ল্যাপটপ দেওয়া হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের ব্যাবহারিক ক্লাসের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ব্যাবহারিক শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা। ডিজিটাল ক্লাসরুম, কম্পিউটার ল্যাব, টেক্সটাইল ল্যাব, ফিজিক্স ল্যাব, ফার্মাসি ল্যাব, ইংলিশ ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, ফ্যাব ল্যাব (ডিজিটাল ফেব্রিকেশন), মিডিয়া ল্যাব, সিসকো ল্যাব, মাইক্রোসফট আইটি একাডেমি, লিনাক্স, রেডহাট ও ওরাকল, মাল্টিমিডিয়া ল্যাব, ইনোভেশন ল্যাব বিশেষ কয়েক ধরনের ল্যাবের উদাহরণ।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম