
প্রিন্ট: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০:২৯ পিএম

আইটি ডেস্ক
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
কোয়ান্টাম কম্পিউটার প্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় নতুন এক দিগন্ত খুলে দিয়েছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (ক্যালটেক) গবেষকরা। তাদের উদ্ভাবিত এক ক্ষুদ্র সিলিকন ডিভাইস মাইক্রোওয়েভ ফোটনকে অপটিক্যাল ফোটনে রূপান্তর করতে সক্ষম, যা কোয়ান্টাম কম্পিউটারের দীর্ঘ দূরত্বে যোগাযোগের সম্ভাবনাকে বাস্তবে রূপ দিতে পারে।
কোয়ান্টাম কম্পিউটারের জন্য মাইক্রোওয়েভ ফোটনের গুরুত্ব : কোয়ান্টাম কম্পিউটার প্রচলিত কম্পিউটারের তুলনায় বহুগুণ শক্তিশালী। এটি কিউবিট নামক বিশেষ ধরনের একক বিট ব্যবহার করে, যা মাইক্রোওয়েভ ফোটনের মাধ্যমে কাজ করে। তবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হলো, এ কিউবিট কেবল পরম শূন্যের কাছাকাছি তাপমাত্রায় কার্যকর থাকে। উষ্ণ তাপমাত্রায় প্রচুর নয়েজ তৈরি হয়, যা কোয়ান্টাম তথ্যকে ধ্বংস করতে পারে। অন্যদিকে, প্রচলিত ইন্টারনেট বা তথ্য স্থানান্তর প্রযুক্তিতে অপটিক্যাল ফোটন ব্যবহৃত হয়, যা ঘরের তাপমাত্রাতেও দীর্ঘ দূরত্ব অতিক্রম করতে পারে। ফলে মাইক্রোওয়েভ ফোটনকে অপটিক্যাল ফোটনে রূপান্তর করতে পারলে কোয়ান্টাম কম্পিউটারের জন্য নতুন সংযোগ ব্যবস্থা তৈরি করা সম্ভব হবে।
নতুন উদ্ভাবন : সিলিকন ডিভাইস : ক্যালটেকের অধ্যাপক মোহাম্মদ মিরহোসেইনির নেতৃত্বে গবেষকরা এমন একটি অন-চিপ ডিভাইস তৈরি করেছেন, যা মাইক্রোওয়েভ ফোটনকে অপটিক্যাল ফোটনে রূপান্তর করতে পারে। এ ছোট সিলিকন ডিভাইস ধাপে ধাপে মাইক্রোওয়েভ ফোটন প্রক্রিয়াকরণ করে এবং লেজারের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফোটনে রূপান্তর করে।
ডিভাইসটির কেন্দ্রে রয়েছে অত্যন্ত ক্ষুদ্র একটি সিলিকন রশ্মি, যা পাঁচ গিগাহার্টজ গতিতে কম্পন সৃষ্টি করে। এটি একটি মাইক্রোওয়েভ রেজোনেটরের সঙ্গে সংযুক্ত, যেখানে মাইক্রোওয়েভ ফোটন প্রবেশ করলে রশ্মিটি কাঁপতে শুরু করে। পরে লেজারের সাহায্যে এ কম্পন অপটিক্যাল ফোটনে রূপান্তরিত হয়।
নতুন ডিভাইসের কার্যকারিতা ও সম্ভাবনা : গবেষকদের দাবি, নতুন ডিভাইসটি প্রচলিত পদ্ধতির তুলনায় একশ গুণ বেশি কার্যকর। পাশাপাশি এটি বড় পরিসরে উৎপাদন করাও সহজ, কারণ সিলিকন স্বল্প খরচে সহজেই পাওয়া যায় এবং তাপ উৎপন্ন না করায় নয়েজ কম থাকে। এ প্রযুক্তির সফল বাস্তবায়ন হলে, কোয়ান্টাম কম্পিউটারের মধ্যে দীর্ঘ দূরত্বে তথ্য আদান-প্রদান সম্ভব হবে, যা বর্তমান ইন্টারনেটের মতোই কার্যকর হবে। কোয়ান্টাম কম্পিউটারের শক্তিকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে এটি এক বিপ্লবী পরিবর্তন আনতে পারে। গবেষণাটি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘নেচার ন্যানোটেকনোলজি’তে, যা ভবিষ্যতের প্রযুক্তি নিয়ে গবেষণায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।