Logo
Logo
×

আইটি বিশ্ব

আইডিসির প্রতিবেদন

অব্যাহত থাকবে স্মার্টফোন বাজারের প্রবৃদ্ধি

Icon

সাইফ আহমাদ

প্রকাশ: ০১ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোন বাজার চলতি বছর ২ দশমিক ৩ শতাংশ বৃদ্ধির পথে রয়েছে। বাজার গবেষণা সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, চলতি বছর স্মার্টফোন বিক্রি ১২৬ কোটি ইউনিটে পৌঁছাবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রে অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসের ক্রমবর্ধমান চাহিদাই এ প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি।

স্মার্টফোন শিল্পের সংকটকাল

স্মার্টফোন শিল্পের ইতিহাসে ২০২০ সাল সবচেয়ে বড় মন্দার বছর ছিল। স্ট্র্যাটেজি অ্যানালিটিকস জানিয়েছে, সে বছর ফেব্রুয়ারিতে স্মার্টফোন বিক্রি ৩৮ শতাংশ কমে যায়। চীনে কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব সরাসরি স্মার্টফোন বিক্রিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। এরপর বাজার নানা উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে গেছে। ২০২২ ও ২০২৩ সালে স্মার্টফোন বাজার টানা নিম্নমুখী প্রবণতায় ছিল।

ঘুরে দাঁড়ানোর বছর

দুবছরের অব্যাহত পতনের পর, ২০২৪ সালে আবারও স্মার্টফোন বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা যায়। বাজার গবেষণা সংস্থা কাউন্টারপয়েন্ট জানিয়েছে, এ বছরে স্মার্টফোন বাজারের আয় ৬ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পায়। একই সঙ্গে স্মার্টফোনের গড় বিক্রয়মূল্য (ASP) রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে ৩৫৬ ডলার হয়। নির্মাতারা উচ্চমানের ডিভাইস ও প্রিমিয়াম সেগমেন্টে বেশি মনোযোগ দেওয়ায় এ প্রবৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে।

২০২৫ ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির প্রত্যাশা

আইডিসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, ২০২৫ সাল হবে স্মার্টফোন বাজারের দ্বিতীয় ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির বছর। ২০২৪ সালের প্রবৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ২০২৫ সালেও এ শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন দেখা যাবে। যদিও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ ও বাজারের অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে, তারপরও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা এ শিল্পের স্থিতিশীলতার পূর্বাভাস দিচ্ছেন। আইডিসির জ্যেষ্ঠ গবেষণা পরিচালক নাবিলা পোপাল জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে অ্যান্ড্রয়েডের প্রবৃদ্ধি আইওএসের তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি হবে। চীনে সরকারের নতুন ভর্তুকির কারণে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের বিক্রি ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে স্মার্টফোনের বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ২ দশমিক ৫ শতাংশ হতে পারে।

প্রিমিয়াম সেগমেন্ট ও নতুন প্রযুক্তির গুরুত্ব

প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, আগামী বছরগুলোতে স্মার্টফোন বাজারের প্রবৃদ্ধিতে কয়েকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর মধ্যে প্রিমিয়াম সেগমেন্টের বিস্তৃতি, সাশ্রয়ী মূল্যের ফাইভজি ডিভাইসের প্রসার এবং জেনারেটিভ এআই (GenAI) প্রযুক্তির অগ্রগতি অন্যতম। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, স্মার্টফোন নির্মাতারা উন্নত ক্যামেরা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) ভিত্তিক ফিচার এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি সুবিধা যোগ করে ব্যবহারকারীদের আকৃষ্ট করবে।

প্রতিযোগিতার শীর্ষে কারা?

গত বছর স্মার্টফোন আয়ের দিক থেকে শীর্ষ পাঁচ কোম্পানি ছিল অ্যাপল, স্যামসাং, শাওমি, ভিভো এবং অপো। বিশেষজ্ঞদের মতে, অ্যাপল এবং স্যামসাং আগামী বছরগুলোতেও বাজারে আধিপত্য বজায় রাখবে। তবে চীনের স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর প্রতিযোগিতা আরও তীব্র হবে।

আগামী দিনের চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

আইডিসির পূর্বাভাস অনুযায়ী, সামনের দিনে স্মার্টফোন বাজারের প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা কমতে পারে। কারণ, অনেক ব্যবহারকারী তাদের ডিভাইস আপগ্রেড করার প্রয়োজনীয়তা কম অনুভব করছেন। যাদের নতুন স্মার্টফোনের প্রয়োজন ছিল, তারা ইতোমধ্যে তা কিনে ফেলেছেন। ফলে ২০২৫ সালে স্মার্টফোন বিক্রি বাড়লেও, প্রবৃদ্ধির হার ২০২৪ সালের তুলনায় কিছুটা কম হতে পারে। তবে নতুন প্রযুক্তির একীকরণ, উদীয়মান বাজারে প্রবৃদ্ধি এবং ফাইভজি সুবিধার সম্প্রসারণ স্মার্টফোন শিল্পের ভবিষ্যৎকে উজ্জ্বল করে তুলতে পারে। সামনের বছরগুলোতে স্মার্টফোন শিল্প নতুন দিগন্তে প্রবেশ করবে বলে আশা করা যায়।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম