
প্রিন্ট: ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ১০:০০ পিএম

শিমুল মুহাম্মাদ মল্লিক
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
নৈতিক শিক্ষা বলতে বোঝায় এমন একটি শিক্ষাব্যবস্থা, যা মানুষের মধ্যে সততা, দায়িত্ববোধ, মানবিকতা ও ন্যায়পরায়ণতার বীজ বপন করে। এটি মানুষকে আত্মশুদ্ধির পথে পরিচালিত করে এবং সমাজে ন্যায়বিচার ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়। চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াস বলেছিলেন, ‘এক বছরের পরিকল্পনায় ফসল রোপণ করো, দশ বছরের পরিকল্পনায় গাছ রোপণ করো, আর সারা জীবনের পরিকল্পনায় সুশিক্ষার ব্যবস্থা করো।’ এ উক্তিটি নৈতিক শিক্ষার অপরিহার্যতা ও দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবকে
স্পষ্ট করে।
বর্তমান সময়ে নৈতিক অবক্ষয়ের চিত্র উদ্বেগজনক। শিক্ষার হার বৃদ্ধি পেলেও, মানুষের নৈতিকতা ও মূল্যবোধ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। দুর্নীতি, অসততা, প্রতারণা, আত্মকেন্দ্রিকতা, হিংসা, বিদ্বেষ, সামাজিক অবিচার ইত্যাদি নৈতিক অবক্ষয়ের স্পষ্ট চিহ্ন। শিক্ষা মানুষকে বিকশিত করে, কিন্তু নৈতিকতা তাকে সত্যিকারের উন্নত মানুষ করে তোলে। তাই সমাজের প্রতিটি স্তরে নৈতিক শিক্ষার প্রভাব থাকা দরকার।
ইসলামে নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব অপরিসীম। পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরই মর্যাদা বাড়ান, যারা চরিত্রবান ও সৎ।’ (সূরা আল-হুজুরাত : ১৩)। রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘আমি উত্তম চরিত্র গঠনের জন্যই প্রেরিত হয়েছি।’ (বুখারি)।
ইসলামি শিক্ষায় নৈতিক মূল্যবোধ যেমন-দয়া, ক্ষমাশীলতা, সততা, ন্যায়পরায়ণতা ও ধৈর্যকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তাই ইসলামি শিক্ষার আলোকে সমাজে নৈতিক শিক্ষার প্রসার ঘটানো অত্যাবশ্যক। এটি ব্যক্তি ও সমাজ উভয়ের উন্নয়নে সহায়ক। নৈতিক শিক্ষার অনুপস্থিতিতে বিশৃঙ্খলা ও অপরাধপ্রবণতা বাড়ে। নৈতিক শিক্ষিত ব্যক্তিরা পারিবারিক ও সামাজিক বন্ধন দৃঢ় করতে সক্ষম হন। সমাজের উন্নতিতে সৎ ও নৈতিক নেতৃত্ব অপরিহার্য। নৈতিক শিক্ষা দুর্নীতির বিস্তার রোধে কার্যকর ভূমিকা পালন করে। শিশুরা পরিবারের কাছ থেকেই প্রথম নৈতিক শিক্ষার পাঠ নেয়। বাবা-মায়ের দায়িত্ব সন্তানদের সৎ পথে পরিচালিত করা। পাঠ্যক্রমে নৈতিক শিক্ষার গুরুত্ব বাড়াতে হবে এবং শিক্ষকদের চরিত্রবান আদর্শ স্থাপন করতে হবে। ধর্মীয় শিক্ষার মাধ্যমে নৈতিকতার ভিত্তি মজবুত করা সম্ভব। সোশ্যাল মিডিয়া ও প্রযুক্তি যেন মানুষকে নৈতিকভাবে সচেতন করতে ব্যবহৃত হয়, তা নিশ্চিত
করা জরুরি।