
প্রিন্ট: ২৬ এপ্রিল ২০২৫, ১১:০৭ পিএম

সুহাইল আহমদ
প্রকাশ: ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
টাঙ্গাইলের ধনবাড়ির নওয়াব শাহী জামে মসজিদ। ৯৫ বছর ধরে এক মিনিটের জন্যও এ মসজিদে বন্ধ হয়নি কুরআন তেলাওয়াত। পালাক্রমে নিয়োগপ্রাপ্ত হাফেজরা এ মসজিদে কুরআন তেলাওয়াত করে চলেছেন। ১৯২৭ সালে নওয়াব বাহাদুর সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এ মসজিদে সার্বক্ষণিক কুরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেন। ১৯২৯ সালে তিনি মারা গেলেও চলমান রয়েছে তেলাওয়াত। তেলওয়াতের দায়িত্বে রয়েছেন পাঁচজন হাফেজ। নামাজের সময় ছাড়া এক মিনিটের জন্যও তারা তেলাওয়াত বন্ধ করেন না।
সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ষোড়শ শতাব্দীতে এখানে এক কক্ষের এ মসজিদটি নির্মাণ করেন। ১৩৫ বছর আগে ধনবাড়ির জমিদার নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী মসজিদটির সম্প্রসারণ করেন। নওয়াব আলী চৌধুরী ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও অবিভক্ত বাংলার প্রথম মুসলমান মন্ত্রী। মোগল স্থাপত্যরীতিতে তৈরি মসজিদটির মেঝে ও দেওয়াল কাচের টুকরা দিয়ে মোজাইক করা। মেঝেতে আছে মার্বেল পাথরের নিপুণ কারুকাজ। ভেতরের পুরাটাজুড়ে চীনা মাটির মোজাইকে দেখা যাবে ফুলের মোটিফ।
প্রায় ১০ কাঠার ওপর সম্প্রসারিত মসজিদটিতে আছে ৯টি জানালা এবং ৩৪টি ছোট-বড় গম্বুজ। বড় ১০টি মিনারের প্রতিটি ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট উঁচু। ৫ ফুট উঁচু ও ৩ ফুট চওড়া মিহরাবটিও বেশ দৃষ্টিনন্দন। ৩০ ফুট মিনারের মাথায় আছে ১০টি করে তামার চাঁদ। মসজিদে ১৮টি হাঁড়িবাতি সংরক্ষিত রয়েছে। আগে যেগুলো আলোর জন্য ব্যবহৃত হতো। মোগল আমলের তিনটি ঝাড়বাতিও আছে।
ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদে একসঙ্গে দুইশ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। পাশেই শানবাঁধানো ঘাট ও কবরস্থান। পূর্বদিকের প্রবেশপথ বরাবর পশ্চিমের দেওয়ালে আছে তিনটি মিহরাব। অষ্টভুজাকারের কেন্দ্রীয় মিহরাবের দুই পাশে রয়েছে বহু খাঁজওয়ালা খিলান। অন্য দুটি মিহরাবও বহু খাঁজবিশিষ্ট। প্রায় ৩০ বিঘা জমির ওপর বিশাল এক দি০ঘি মসজিদটির পাশে। মুসল্লিরা ওজু করেন সেখানে। আশপাশে সুপ্রশস্থ ও খোলামেলা জায়গাও অনেক। ওয়াকফকৃত সম্পত্তির মাধ্যমেই পরিচালিত হয় এ মসজিদ, পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ। নওয়াব শাহী জামে মসজিদটি দেখতে ও চলমান কুরআন তেলাওয়াত শুনতে প্রতিদিনই এখানে আসেন দেশ-বিদেশি দর্শনার্থীরা।