ইসলামের ইতিহাসে মদিনা সনদ একটি অনন্য দলিল, যা নবি মুহাম্মাদ (সা.) মদিনার বিভিন্ন গোত্র ও ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে সামঞ্জস্য এবং শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য প্রণয়ন করেছিলেন। এটি মানবজাতির ইতিহাসে প্রথম লিখিত সংবিধান হিসাবে বিবেচিত যা, জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও গোত্র নির্বিশেষে সমাজে সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। মদিনা সনদ শুধু ইসলামি রাষ্ট্রের রোল মডেল নয়, বরং এটি আধুনিক
রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্যও একটি চিরস্থায়ী অনুপ্রেরণা। মদিনা সনদের নানা দিক নিয়ে লিখেছেন- মাহবুবুর রহমান
মদিনা সনদের প্রেক্ষাপট : মদিনা সনদ প্রণীত হয় ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে, যখন নবি মুহাম্মাদ (সা.) মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত করেন। মদিনায় তখন ছিল বিভিন্ন গোত্র যেমন-আওস, খাজরাজ এবং ইহুদি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। গোত্রগুলো প্রায়ই একে অপরের সঙ্গে সংঘাতে লিপ্ত থাকত। নবি মুহাম্মাদ (সা.) এ অবস্থায় একটি স্থিতিশীল সমাজ গড়ে তোলার জন্য সবার সঙ্গে আলোচনা করে মদিনা সনদ প্রণয়ন করেন।
মদিনা সনদের মূলনীতি : মদিনা সনদের মূলনীতি ছিল একটি বহুধর্মীয়, বহুজাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়। সনদটি মোট ৪৭টি ধারা নিয়ে গঠিত, যার মাধ্যমে একটি সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠার জন্য বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
প্রকাশ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাম্য ও ন্যায়বিচার : মদিনা সনদে প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা হয়। এতে বলা হয়, ‘সব সম্প্রদায় তাদের ধর্ম পালন করতে স্বাধীন থাকবে’। এটি জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মধ্যে সাম্যের ধারণা প্রতিষ্ঠা করে।
সামরিক ও প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা : মদিনা সনদে মদিনার প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে একত্রে কাজ করার আহ্বান জানান হয়। এতে বলা হয়েছে, মদিনা আক্রমণের শিকার হলে, সব সম্প্রদায় একসঙ্গে এর প্রতিরক্ষা করবে।
সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টন : সনদে উল্লেখ করা হয়েছে, মদিনার সব সম্পদ ও সম্পত্তি সবার মধ্যে ন্যায়সঙ্গতভাবে বণ্টন করা হবে। এটি সামাজিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়বিচারের একটি দৃষ্টান্ত।
শান্তি ও সম্প্রীতি প্রতিষ্ঠা : মদিনা সনদে বলা হয়েছে, কোনো পক্ষই অন্য পক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ বা সংঘর্ষে লিপ্ত হতে পারবে না। এ ধরনের কোনো সমস্যার সমাধান সর্বসম্মতিক্রমে গ্রহণযোগ্য উপায়ে করতে হবে।
মদিনা সনদের প্রভাব ও গুরুত্ব : মদিনা সনদ ইসলামি রাষ্ট্রের রোল মডেল হিসাবে বিবেচিত হয়, কারণ এটি একটি রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যে মূলনীতি ও কাঠামো প্রদান করেছে, তা যুগান্তকারী।
বহুধর্মীয় রাষ্ট্রের ধারণা : মদিনা সনদ আধুনিক বহুধর্মীয় রাষ্ট্রের জন্য একটি মডেল। এতে দেখানো হয়েছে, কীভাবে বিভিন্ন ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায় একত্রে শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করতে পারে।
সামাজিক ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার : মদিনা সনদ মানবাধিকারের এক অসাধারণ উদাহরণ। এতে সব সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্বাধীনতা, সামাজিক নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক সমতা নিশ্চিত করা হয়।
আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা : মদিনা সনদ প্রমাণ করে যে, একটি রাষ্ট্রে আইনের শাসন কতটা গুরুত্বপূর্ণ। এতে সব পক্ষকে আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়।
নেতৃত্বের একটি মডেল : নবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর নেতৃত্বে মদিনা সনদ প্রণীত হয়েছিল, যা ন্যায়বিচার, ধৈর্য এবং দূরদর্শিতার এক অপূর্ব উদাহরণ। এটি দেখায়, কীভাবে একজন নেতা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় মদিনা সনদের প্রভাব : মদিনা সনদ শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রেও এক অনন্য উদাহরণ। এর মূলনীতি বিভিন্ন আধুনিক সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।
গণতন্ত্রের ভিত্তি : মদিনা সনদে প্রতিটি সম্প্রদায়ের মতামত ও অধিকারকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, যা গণতন্ত্রের মূলভিত্তি।
ধর্মীয় সহাবস্থান : সনদে ধর্মীয় সহাবস্থানের যে ধারণা রয়েছে, তা আজকের বহু ধর্মীয় রাষ্ট্রের জন্য শিক্ষণীয়।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের শিক্ষা : মদিনা সনদ আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি দৃষ্টান্ত। এটি দেখায়, কীভাবে বিভিন্ন জাতি ও সম্প্রদায় একে অপরের সঙ্গে সমানভাবে আচরণ করতে পারে।
মদিনা সনদের ধারা বিশ্লেষণ : মদিনা সনদ মোট ৪৭টি ধারা নিয়ে গঠিত, যা মদিনার মুসলিম, ইহুদি এবং পৌত্তলিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সামাজিক ও রাজনৈতিক শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠা করেছে। এর কিছু উল্লেখযোগ্য ধারা-
ধর্মীয় স্বাধীনতা : প্রত্যেক সম্প্রদায় তাদের নিজস্ব ধর্ম পালনের স্বাধীনতা পাবে। এর মাধ্যমে প্রথমবারের মতো একটি বহুধর্মীয় রাষ্ট্রব্যবস্থার আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয়। উদাহরণ, ইহুদিরা তাদের ধর্মীয় বিধান অনুযায়ী বিচারব্যবস্থা পরিচালনার স্বাধীনতা পেয়েছিল।
সমান নাগরিক অধিকার : সনদে বলা হয়েছে, ‘মদিনায় বসবাসকারী সব সম্প্রদায় একই রাষ্ট্রের অংশ’। এতে মুসলিম ও অমুসলিমদের মধ্যে কোনো ধরনের বৈষম্য রাখা হয়নি।
সমাজের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা : মদিনা সনদে একটি নিরাপত্তা চুক্তি ছিল, যার মাধ্যমে মদিনা আক্রমণ করলে সব সম্প্রদায় একত্রে তার প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করবে।
রক্তপণ নিষিদ্ধ : সনদে পুরোনো গোত্রীয় রক্তপণ প্রথা বাতিল করা হয়, যা তৎকালীন আরব সমাজের এক গভীর সংকট ছিল। এটি একটি ঐতিহাসিক পরিবর্তনের সূচনা করে।
সামাজিক সামঞ্জস্য : এক সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে পারবে না এবং মদিনার অভ্যন্তরীণ শান্তি বিঘ্নিত করার কোনো চেষ্টাও সহ্য করা হবে না।
বিচারব্যবস্থা : সব বিরোধ নির্ধারিত আইন অনুযায়ী নবি মুহাম্মাদ (সা.)-এর নেতৃত্বে নিষ্পত্তি করা হবে। এ ব্যবস্থা রাষ্ট্রে আইন এবং ন্যায়বিচারের ধারণা প্রতিষ্ঠা করে।
মদিনা সনদে আর্থ-সামাজিক নীতিমালা
সম্পদের ন্যায়সঙ্গত বণ্টন : মদিনা সনদ সমাজের ধনী ও দরিদ্রদের মধ্যে সম্পদের বৈষম্য দূর করার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মুসলিম এবং অমুসলিম উভয়েই জাকাত ও কর দেওয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখত।
ব্যবসা ও বাণিজ্যে শৃঙ্খলা : মদিনা সনদ ব্যবসায় ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেছে। এতে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল ধোঁকবাজি, মুনাফাখোরি এবং সুদ।
দুর্বলদের অধিকার : এটি নারীদের, দাসদের এবং সমাজের দুর্বল অংশের অধিকার সুরক্ষায় বিশেষ মনোযোগ দিয়েছে।
মদিনা সনদের শিক্ষা : আধুনিক বিশ্বে প্রাসঙ্গিকতা
বর্তমান বিশ্বে যেখানে সংঘাত, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা এবং সামাজিক বৈষম্য বৃদ্ধি পাচ্ছে, সেখানে মদিনা সনদের শিক্ষা অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি : ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে সমান অধিকার প্রদান মদিনা সনদের অন্যতম শিক্ষা।
অর্থনৈতিক ন্যায়বিচার : দরিদ্রদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা এবং সম্পদ বণ্টনের ধারণা বর্তমান অর্থনৈতিক ব্যবস্থার জন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে।
শান্তি প্রতিষ্ঠা : মদিনা সনদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ধারণা আজকের বিশ্ব রাজনীতির সংকট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
মদিনা সনদ একটি চিরস্থায়ী রোল মডেল, যা কেবল ইসলামি রাষ্ট্রের জন্য নয়, বরং পুরো বিশ্বের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। এটি প্রমাণ করে, কীভাবে ন্যায়বিচার, সাম্য ও সম্প্রীতির মাধ্যমে একটি সমাজে স্থিতিশীলতা এবং শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায়। মদিনা সনদের মূলনীতি অনুসরণ করলে বর্তমান বিশ্বেও বহু সমস্যার সমাধান সম্ভব। এজন্যই এটি ইসলামি রাষ্ট্রের রোল মডেল হিসাবে চিরকাল শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
লেখক : পিএইচডি গবেষক, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
শিশুর প্রতি নবিজির ভালোবাসা
ষ মুহাম্মদ মিজানুর রহমান
মহানবি (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি ছোটদের øেহ করে না এবং বড়দের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে না, সে আমাদের দলভুক্ত নয়’। তিনি ছিলেন আমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। মুহাম্মাদ (সা.) ছিলেন একজন শ্রেষ্ঠ বাবা, শ্রেষ্ঠ ভাই, শ্রেষ্ঠ স্বামী, সেরা অভিভাবক এবং সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। শিশুদের প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা। হƒদয় উজাড় করা প্রেম। নিুে শিশুদের প্রতি নবিজির অনুপম ভালোবাসার কিছু দৃষ্টান্ত তুলে ধরা হলো-
শিশুদের চুমু দেওয়া
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) একবার হাসান ইবনে আলি (রা.)কে ভালোবেসে চুমু দিলেন। আকরা ইবনে হাবেস আত-তামিমি (রা.) সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি এটি দেখে বললেন, আমারও তো দশজন সন্তান রয়েছে, আমি তো তাদের কাউকে কখনো চুমু দেইনি। রাসূল (সা.) তার দিকে তাকিয়ে বলেন, ‘যে দয়া করে না, তার প্রতিও দয়া করা হয় না।’ (বুখারি)।
ঘোড়া হয়ে পিঠে চড়ান
আব্দুল্লাহ ইবনে শাদ্দাদ (রা.) বলেন, এক এশার নামাজে রাসূল (সা.) হাসান অথবা হুসাইনকে কোলে নিয়ে আমাদের দিকে এলেন। রাসূল (সা.) নামাজের উদ্দেশ্যে সামনে অগ্রসর হয়ে তাকে রেখে দিলেন। তারপর নামাজের জন্য তাকবির বলে নামাজ শুরু করেন। কিন্তু তিনি নামাজে একটি সিজদা খুব বেশি লম্বা করলেন। আমার পিতা শাদ্দাদ (রা.) বলেন, আমি আমার মাথা উঠিয়ে দেখলাম, ওই ছেলেটি রাসূল (সা.)-এর পিঠের ওপর আর তিনি সিজদারত। আমি আবার সিজদায় ফিরে গেলাম। রাসূল (সা.) নামাজ শেষ করলে লোকেরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল, আপনি নামাজে একটি সিজদা এত লম্বা করলেন, যাতে আমরা ধারণা করলাম, হয়তো কোনো ব্যাপার ঘটে থাকবে অথবা আপনার ওপর ওহি নাজিল হয়েছে! তিনি বলেন, ‘তোমরা যা ধারণা করছ এর কোনোটিই নয়; বরং আমার এ সন্তান আমাকে বাহন বানিয়েছে। আমি তাড়াতাড়ি উঠতে অপছন্দ করলাম, ...।’ (নাসাঈ)।
হাসান ও হুসাইন (রা.) অনেক সময় রাসূল (সা.)-এর পিঠে চড়ে বসতেন, তাকে ঘোড়া বানিয়ে তারা খেলতেন। একদিন এরকম এমন এক চমৎকার দৃশ্য দেখে এক সাহাবি মজা করে বলে উঠলেন, ‘বৎস! তুমি দারুণ সাওয়ারি পেয়েছ! নবিজি (সা.) তার এই কথা শুনে উত্তর দিলেন, আরোহীও দারুণ! (তিরমিযী ৩৭৪৬)।
শিশুদের সঙ্গে হাস্যরস
আনাস বিন মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসূল (সা.) ছিলেন সব থেকে সুন্দর চরিত্রের মানুষ। আমার একটি ছোট ভাই ছিল। তার নাম ছিল আবু উমাইর। সে ছিল সদ্য দুধ ছাড়ানো শিশু। সে যখন রাসূল (সা.)-এর কাছে আসত, রাসূল (সা.) তাকে øেহভরা কণ্ঠে বলতেন, ‘হে আবু উমাইর, কোথায় তোমার নুগাইব?’ আবু উমাইর একটি পাখি নিয়ে খেলতেন। আর সে পাখিটির নাম ছিল নুগাইব। (সহিহ বুখারি : ৬২০৩)। এ কারণেই রাসূল (সা.) তাকে মজা করে বলতেন, হে আবু নুগাইব। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসূল (সা.) প্রায়ই আমাকে, ‘হে দুই কানওয়ালা’ বলে ডাকতেন।’ (আবু দাউদ : ৫০০২)।
দৌড় প্রতিযোগিতা
নবিজি (সা.), আব্বাস (রা.)-এর পরিবারের আব্দুল্লাহ, উবাইদুল্লাহসহ আরও অনেককে এক সারিতে দাঁড় করাতেন। এরপর বলতেন, ‘যে আমার কাছে প্রথমে দৌড়ে আসবে, তার জন্য এ পুরস্কার।’ রাসূল (রা.)-এর কথা শুনে তারা প্রতিযোগিতা করে দৌড় দিত। কেউ এসে তার পিঠে চড়ে যেত, কেউ বা তার বুকে চড়ে উঠত। রাসূল (সা.) তাদের চুমু খেতেন। কাউকে জড়িয়ে ধরতেন’। (মুসনাদে আহমাদ : ১৮৩৯)।
সালাম দেওয়া
আনাস (রা.) বলেন, ‘কিছু শিশু খেলাধুলারত ছিল। রাসূল (সা.) তাদের পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় তাদের সালাম দিলেন।’ (সহিহ বুখারি : ৬২৪৭)। আনাস (রা.) বলেন, ‘রাসূল (সা.) আনসারদের দেখতে আসতেন। আনসারদের কারও ঘরে এলে সে ঘরের শিশুরা রাসূল (সা.)-এর চারপাশ মাতিয়ে রাখত। তিনি শিশুদের সালাম দিতেন। তাদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে তাদের জন্য দোয়া করতেন।’ (সহিহ বুখারি : ২৫০২)।
শিক্ষা দান
আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘আমি একদিন রাসূল (সা.)-এর পেছনে (বাহনের ওপর) বসা ছিলাম। তখন তিনি আমাকে বললেন, ‘হে বালক, আমি তোমাকে কয়েকটি কথা শিখিয়ে দিচ্ছি, আল্লাহর বিধানগুলোর হেফাজত করো। তিনি তোমাকে হেফাজত করবেন। আল্লাহর বিধানগুলোর হেফাজত করো, তাকে তোমার পাশে পাবে। কিছু চাইতে হলে একমাত্র আল্লাহর কাছে চাও। সাহায্য কামনা করতে হলে, একমাত্র আল্লাহর কাছেই সাহায্য কামনা করো।’ (তিরমিজি : ২৫১৬)।
নামাজ সংক্ষিপ্ত করা
রাসূল (সা.) বলেন, ‘আমি নামাজ দীর্ঘায়িত করার ইচ্ছায় দাড়াতাম; কিন্তু যখন কোনো শিশুর কান্নার আওয়াজ শুনতাম, তখন নামাজ সংক্ষিপ্ত করতাম...।’ (বুখারি) রাসূল (সা.) ফাতিমা (রা.)কে খুবই øেহ করতেন। বলতেন, ‘ফাতেমা আমার কলিজার টুকরা’। শিশু ফাতেমা (রা.) যখন তার কাছে যেতেন, তিনি উঠে দাঁড়াতেন এবং ফাতেমার হাত ধরে চুমু দিয়ে তাকে মজলিসে বসাতেন।’ (আবু দাউদ)।
রমজানের প্রস্তুতি নিন শাবান মাসজুড়ে
ষ মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন নূরী
শাবান মাসে নবিজির আমল : হিজরি বর্ষের অষ্টম মাস শাবান। শাবান আরবি শব্দ। এর অর্থ বিস্তৃত হওয়া, ছড়িয়ে পড়া। এ মাস রহমত বিস্তৃত হওয়ার মাস। এ মাসে আল্লাহর রহমত পৃথিবীবাসীর ওপর ছড়িয়ে পড়ে। এ কারণেই একে শাবান বলা হয়। প্রিয়নবি (সা.) এ মাসকে অত্যাধিক গুরুত্ব দিতেন। মাহে রমজানে একাগ্রচিত্তে সিয়াম-সাধনা ও অধ্যবসায়ের প্রস্তুতি গ্রহণের মাস শাবান। সুতরাং রমজানের পূর্বপ্রস্তুতির জন্য শাবান মাস গুরুত্ববহ। রাসূল (সা.) শাবান মাসের গুরুত্ব বুঝাতে গিয়ে শাবানকে নিজের মাস বলে আখ্যায়িত করেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, শাবান আমার মাস এবং রমজান আল্লাহর মাস। শাবান পবিত্রকারী এবং রমজান গুনাহ মাফকারী। (কানজুল উম্মার-৩৫২১৬)। অপর হাদিসে রাসূল (সা.) বিশেষভাবে শাবান মাস গণনা করার নির্দেশ দেন, যেন রমজানের রোজা রাখতে সুবিধা হয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের উদ্দেশ্যে শাবানের চাঁদের হিসাব রাখবে। (সুনানে তিরমিজি-৬৮)। রমজানের রোজা বাদে শাবানের রোজা শ্রেষ্ঠ রোজা। এ ছাড়া আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আমাদের এ মাসে অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি রাত উপহার দিয়েছেন। কুরআনের ভাষায় এটাকে লাইলাতুম মুবারকা বলা হয়েছে। আমাদের এ অঞ্চলের পরিভাষায় শবেবরাত বলে অভিহিত করা হয়। শবেবরাত অর্থাৎ পনেরো শাবানের রজনির ফজিলত সম্পর্কে সহিহ হাদিস রয়েছে। হজরত আবু মুসা আশআরী (রা.) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, আল্লাহতায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে (শাবানের চৌদ্দ তারিখ দিবাগত রাতে) সৃষ্টির দিকে (রহমতের) দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন। (সহিহ ইবন হিব্বান-৫৬৬৫)।
রোজা রাখা : রমজানের পর প্রিয়নবি শাবান মাসে সবচেয়ে বেশি রোজা রাখতেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূল (সা.)কে শাবান মাস ছাড়া আর কোনো মাসে এত অধিক রোজা রাখতে দেখিনি। তিনি শাবান মাসের অধিকাংশ দিনই রোজা রাখতেন। বরং প্রায় সারা মাসই তাঁর রোজা অবস্থায় কাটত। (সুনানে নাসাই : হাদিস-২১৭৮, মুসনাদে আহমাদ : হাদিস-২৫৩৫৭)। উসামা ইবন যায়েদ (রা.) বলেন, শাবান মাসে অধিক রোজা রাখার কারণ সম্পর্কে নবিজি (সা.)কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন, অর্থাৎ রমজান ও রজবের মাঝে এটা এমন এক মাস, যাতে লোকেরা উদাসীন থাকে। অথচ এ মাসে আল্লাহর কাছে পূর্ণ বছরের আমল পেশ করা হয়। আমি চাই আল্লাহর কাছে আমার আমল এমতাবস্থায় পেশ করা হোক যে, আমি রোজাদার। (মুসনাদে আহাদ-২১৮০১) এ ছাড়া এটা রমজানের পূর্ববর্তী মাস হওয়ায় নবিজি রমজানের পূর্বপ্রস্তুতির জন্য শাবানের অধিকাংশ সময় রোজা রাখতেন।
দোয়া করা : একটি দুর্বল হাদিস থেকে হলেও রজব ও শাবান মাসের মাসব্যাপী ছোট একটি আমলের কথা জানা যায়। হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) রজব মাস এলে পড়তেন, হে আল্লাহ! আপনি আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করেন এবং রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দেন। (মুজামে ইবন আসাকির : হাদিস-৩০৯)।
শাবান মাসের হিসাব রাখা : রাসূল (সা.) শাবান মাসের হিসাব খুব গুরুত্বের সঙ্গে রাখতেন। তিনি প্রতিটি দিন তারিখ গুনে রাখতেন। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে এসেছে। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসের হিসাব এত গুরুত্বসহকারে রাখতেন যে, অন্য কোনো মাসের হিসাব ততটা গুরুত্ব দিয়ে রাখতেন না। অতঃপর তিনি রমজানের চাঁদ দেখেই রোজা পালন করতেন। আর আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকলে তিনি শাবান মাস ত্রিশ দিন পূর্ণ করতেন। এরপর রোজা রাখতেন। অপর হাদিসে শাবানের চাঁদ গণনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা রামজানের উদ্দেশ্যে শাবানের চাঁদের হিসাব রাখবে।
শাবান মাসে সাহাবিদের আমল : হজরত আনাস ইবন মালেক (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর প্রিয় সাহাবিরা শাবান মাসের চাঁদ দেখে কয়েকটি আমল বিশেষভাবে করতেন। ১. শাবান মাসে তারা আগ্রহভরে রমজানের অপেক্ষা করতেন। ২. তুলনামূলক বেশি পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করতেন। ৩. মুসলমানরা তাদের সম্পদের জাকাত বের করে দিতেন, যেন গরিব-মিসকিন স্বাচ্ছন্দ্যে রমজানের রোজা রাখতে পারে। ৪. বিচারকরা জেলখানার কয়েদিদের হাজির করে আপরাধী ছাড়া বাকি লোকদের মুক্তি দিয়ে দিতেন। ৫. ব্যবসায়ীরা এ মাসে তাদের ঋণ পরিশোধ করে দিতেন এবং অন্যদের কাছে যা পাওনা তা আদায় করে নিতেন। ৫. রমজান মাসের চাঁদ দেখা গেলে মানুষ গোসল করে ইতেকাফে বসে যেতেন। অর্থাৎ শাবান মাস এলেই সাহাবিরা দুনিয়াবি কাজ কমিয়ে দিতেন এবং নিরবচ্ছিন্নভাবে রমজান মাসে আমলের প্রস্তুতি গ্রহণ করতেন।
*//*/*/*
দারুল উলুম দেওবন্দের
গৌরবদীপ্ত দেড় শতাব্দী
দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম বেসরকারি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় দারুল উলুম দেওবন্দ নিয়ে রচিত ‘দারুল উলুম দেওবন্দ : ইতিহাস, ঐতিহ্য, অবদানের গৌরবদীপ্ত দেড় শতাব্দী’-গ্রন্থটি বাজারে এসেছে। বিশ্ব বিখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ ড. মাওলানা মুহাম্মদুল্লাহ কাসেমি রচিত ‘দারুল উলুম দেওবন্দ কী জামে ওয়া মুখতাসার তারিখ’-এর অনুমোদিত বঙ্গানুবাদ এটি। দারুল উলুম দেওবন্দের মজলিসে শুরার অনুমোদনক্রমে বাংলায় অনুবাদের কাজটি তত্ত্বাবধান ও সম্পাদনা করেছেন জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদের প্রিন্সিপাল লেখক ও গবেষক মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া।
তিনি জানান, বইটি দারুল উলুম দেওবন্দের ইতিহাস, শিক্ষা, দর্শন, রাষ্ট্র-সমাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও বিশ্বব্যাপী অবদান নিয়ে বিশদ আলোচনায় সমৃদ্ধ। দারুল উলুমের প্রতিষ্ঠাকাল ১৮৬৬ থেকে নিয়ে ২০১৯ পর্যন্ত দেড় শতাব্দীর অধিককালের বিস্তারিত ইতিহাস এতে উঠেছে। ইতঃপূর্বে দারুল উলুম দেওবন্দ নিয়ে রচিত সব গ্রন্থের সারনির্যাস ৮১৬ পৃষ্ঠার বৃহৎ কলেবরের এ গ্রন্থ। এটি শুধু ইতিহাস নয়; এটি দারুল উলুম দেওবন্দের একটি পূর্ণাঙ্গ দলিল যা বাংলাভাষী গবেষক, শিক্ষার্থী এবং ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য অমূল্য সম্পদ। মিরপুরে আবস্থিত জামিয়া হোসাইনিয়া ইসলামিয়া আরজাবাদ থেকে বইটি সংগ্রহ করা যাবে। স ইসলাম ও জীবন ডেস্ক
সংক্ষিপ্ত ইসলামি সংবাদ
মক্কা থেকে মদিনা পর্যন্ত মহানবির
হিজরতের পথ পুনঃনির্মাণে প্রকল্প গ্রহণ
ইসলামের ইতিহাসে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হচ্ছে মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর মক্কা থেকে মদিনায় হিজরত। হিজরতের সময় মহানবি হজরত মুহাম্মাদ (সা.) যে ঐতিহাসিক পথটি গ্রহণ করেছিলেন তা পুনঃনির্মাণের লক্ষ্যে সৌদি আরব ‘নবির কদম’ প্রকল্প ঘোষণা করেছে। সোমবার উহুদ পাহাড়ের কাছে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মদিনার আমির প্রিন্স সালমান বিন সুলতান এ প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। গাল্ফ নিউজ জানিয়েছে, ‘নবির কদম’ প্রকল্পে মক্কাকে মদিনার সঙ্গে সংযুক্ত করা ৪৭০ কিলোমিটারের একটি পথ রয়েছে, এর ৩০৫ কিলোমিটার হেঁটে যাওয়া যাবে। ৪১টি ঐতিহাসিক নিদর্শন পুনরুদ্ধার করে এ পথের সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে। আর এগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত পাঁচটি স্টেশন হিজরতের সময় ঘটে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো বর্ণনা করবে। বিস্তারিত জানাতে একটি হিজরত জাদুঘরও থাকবে। এ গমনপথ বরাবর আটটি স্টেশন হিজরতের বিষয়ে ধারণা দেবে। আর পথসংলগ্ন ৩০টির বেশি রেস্তোরাঁ ও ৫০টি দোকান দর্শনার্থীদের অভিজ্ঞতা আরও সমৃদ্ধ করবে। দৈনিক ১২ হাজার দর্শনার্থী এ পথে মক্কা থেকে মদিনায় যেতে পারবেন, এমনভাবে প্রকল্পের নকশা করা হয়েছে।
আলেমরা উদ্যোক্তা হলে
জাতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, আলেমরা উদ্যোক্তা হলে দেশের চেহারা পালটে যাবে। জাতির উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে। রাষ্ট্রে সমৃদ্ধি আসবে। উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়াস আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশেষ করে আলেমদের এরূপ উদ্যোগ আরও বেশি প্রশংসনীয়। তাদের মধ্যে যেহেতু আল্লাহ ভীতি আছে সে কারণে তারা ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনোরূপ অনৈতিক পন্থা অবলম্বন করবেন না। তারা পণ্যে ভেজাল দেবেন না। তারা ওজনে কম দেবেন না, পরিমাণে কম দেবেন না। এর ফলে বাজারে বিশুদ্ধ খাদ্যদ্রব্য ও খাঁটি পণ্য পাওয়া যাবে। বুধবার বিকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে কওমি উদ্যোক্তা সম্মেলন ২০২৫-এ প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন। হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আরও বলেন, বৈধ অর্থ আয়ের যে ১০টি পথ আছে তার নয়টিই হলো ব্যবসা। টাকা আয় করতে হবে বৈধ পথে। যেনতেনভাবে টাকা আয়ের চিন্তাভাবনা পরিহার করতে হবে। কওমি উদ্যোক্তার প্রতিষ্ঠাতা মাওলানা রোকন রাইয়ানের সভাপতিত্বে অনলাইন টেক একাডেমির পৃষ্ঠপোষকতায় দিনব্যাপী এ সম্মেলনে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কওমি ঘরানার দুই সহস্রাধিক আলেম উদ্যোক্তা অংশগ্রহণ করেন।
প্রথমবারের মতো কওমি মাদ্রাসায়
আইসিটি ল্যাব স্থাপনের উদ্যোগ
প্রথমবারের মতো কওমি মাদ্রাসায় আইসিটি ল্যাব স্থাপনের প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নির্দেশনায় পাইলট প্রকল্পের আওতায় ঢাকা ও রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় মেয়েদের জন্য আইসিটি ল্যাব স্থাপনের পাশাপাশি কওমি মাদ্রাসাকে অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করা হয়েছে। জানা গেছে, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের কারিগরি দক্ষতা উন্নয়নে যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসাকে পাইলট প্রকল্পের জন্য প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করার প্রস্তাব দিয়েছেন। মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও ইতোমধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। তারা সরকারের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। দেশের শীর্ষ আলেমরা এ প্রচেষ্টায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেছেন। পাইলট প্রকল্পের আওতায় ন্যাশনাল স্কিল ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি স্বীকৃতি কিছু আইসিটি কোর্স পরিচালিত হবে। এসব কোর্সের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীরা কর্মজীবনের প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারবেন।
১০ মাসে কুরআনের হাফেজ সাড়ে ৪ বছরের আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম
মাত্র ১০ মাস সময়ে কুরআন মাজিদের হিফজ সম্পন্ন করার এক বিস্ময়কর দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন মাত্র সাড়ে ৪ বছরের শিশু আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুম। তার বর্তমান বয়স ৪ বছর ৭ মাস। ১৮ জানুয়ারি সকালে তিনি পবিত্র কুরআন হিফজ সমাপ্ত করেন। ঢাকার যাত্রাবাড়ীর মাদ্রাসাতু উসওয়াতি ফাতিমাহ (রা.)-এ নিজ মায়ের কাছেই পুরো কুরআন সুখস্থ করেছেন আহমদ। হিফজের সময় আহমাদ কুরআনের বাংলা অর্থও শিখেছেন, যা তার প্রতিভার আরও একটি প্রমাণ। বিস্ময় শিশু আহমাদ আবদুল্লাহ মাসুমের বাবা, খ্যাতিমান টিভি উপস্থাপক মাসুম বিল্লাহ বিন রেজা বলেন, মহান রবের দরবারে কোটি কোটি কৃতজ্ঞতা, মহান রব দয়া-মায়া করে আমার কলিজার টুকরা আহমাদকে তাঁর মহান গ্রন্থ আল কুরআন হিফজ করার তাওফিক দান করেছেন। হাফেজ আহমাদের গ্রামের বাড়ি রাজশাহীর পবা থানার দামকুড়ার সিতলাইতে।