Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

ঐতিহ্যে ইসলাম

মসজিদে নববি

Icon

সুহাইল আহমদ

প্রকাশ: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মসজিদে নববি

নবিজির মসজিদ। পবিত্র মসজিদে নববি। হিজরতের বছর ৬২২ সালে শুরু হয় মসজিদে নববির নির্মাণকাজ। ৬২৩ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত সাত মাস সময় লেগেছে কাজ শেষ হতে।

মদিনায় প্রবেশের পর রাসূল (সা.)-এর উটনি ‘কাসওয়া’ যে স্থানটিতে বসে পড়েছিল, সে স্থানেই তৈরি করা হয় ঐতিহাসিক মসজিদে নববি। মদিনার দুই এতিম বালক সাহল ও সোহাইলের কাছ থেকে ১০ দিনারের বিনিময়ে জায়গা কিনে নেওয়া হয়, যা হজরত আবু বকর (রা.) পরিশোধ করেন। জমির ছোট এক অংশে রাসূল (সা.)-এর জন্য বাসস্থান এবং বাকি পুরো অংশে তৈরি করা হয় মসজিদ।

পৃথিবীর শীর্ষ পবিত্র স্থানগুলোর মধ্যে এটি দ্বিতীয়। একাধিক হাদিস সূত্রে জানা যায়, মসজিদে নববিতে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা মসজিদে হারাম ছাড়া পৃথিবীর যে কোনো মসজিদে এক হাজার ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের চেয়েও উত্তম।’ (বুখারি : ১১৯০; মুসলিম : ১৩৯৪)।

যুগে যুগে বহু সংস্কার ও সম্প্রসারণ হয়েছে এ মসজিদের। সৌদি যুগ শুরু হলে বাদশাহ আব্দুল আজিজ ১৯৫০ সালে মসজিদে নববির পরিধি ১৬ হাজার ৩২৭ বর্গমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন। এ সময় মসজিদের স্তম্ভ ছিল ৭০৬টি ও গম্বুজ ছিল ১৭০টি।

বাদশাহ আব্দুল আজিজের আমলে বিশেষ একটি স্টেশন থেকে রাত-দিন চব্বিশ ঘণ্টা মসজিদে বিদ্যুৎ সরবারাহ করা হতো। মসজিদে নববির মুখপাত্র আল হাত্তাব জানান, এ সময় এখানে অন্তত ২ হাজার ৪২৭টি বাতি ছিল। ১৯৭৩ সালে বাদশাহ ফয়সাল মসজিদের পশ্চিম দিকে প্রায় সাড়ে ৩৫ হাজার বর্গমিটার জায়গার বরাদ্দ দেন এবং সমগ্র এলাকাজুড়ে বৈদ্যুতিক পাখা, সাউন্ড সিস্টেম ও বিশেষ ছাতা স্থাপন করেন।

বাদশাহ খালিদ বিন আব্দুল আজিজের পর বাদশাহ ফাহাদের ১৪০৪ হিজরি থেকে দীর্ঘ ১০ বছরের সংস্কার ও সম্প্রসারণে তা নতুন অবকাঠামো লাভ করে। এতে মসজিদের আয়তন বৃদ্ধি পায় ৮২ হাজার মিটার। এ সময় চলন্ত সিঁড়ি স্থাপন করা হয়।

বর্তমানের আকৃতিটি এরই পূর্ণরূপ। বাদশাহ আব্দুল্লাহর নির্দেশে মসজিদে বিশেষ কাঠামোতে তৈরি ২৫০টি ছাতা স্থাপন করা হয়। এসব ছাতা অন্তত এক লাখ ৩৪ হাজার বর্গমিটার এলাকায় ছায়া দিতে সক্ষম। দ্বি-স্তরবিশিষ্ট স্বয়ংক্রিয় এ ছাতাগুলো মুসল্লিদের বৃষ্টি ও সূর্যের তীব্র উত্তাপ থেকে সুরক্ষিত রাখে।

মসজিদের বর্তমান আয়তন মূল স্থাপনাটি অন্তত ৬ লাখ ১৪ হাজার ৮০০ বর্গমিটার জায়গাজুড়ে অবস্থিত। আর মসজিদ ও আঙিনা মিলে আয়তন ১০ লাখ ২০ হাজার ৫০০ বর্গমিটার।

রাসূল (সা.)-এর ইন্তেকালের ৬৫০ বছর পর্যন্ত তাঁর রওজার ওপর কোনো ধরনের গম্বুজ ছিল না। ১২৭৯ সালে মিসরের মামলুক সুলতান সাইফউদ্দীন কালাউনের শাসনামলে প্রথম একটি কাঠের গম্বুজ তৈরি করা হয়। ১৪৮১ সালে মসজিদে নববিতে এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গম্বুজ ধসে পড়ে। এতে নবি (সা.)-এর কবর উন্মুক্ত হয়ে পড়ে। তৎকালীন মিসরের মামলুক সুলতান সাইফউদ্দীন আল-আশরাফ কাইতবে রওজার ওপরে কাঠের তৈরি গম্বুজটি নতুন করে তৈরি করেন এবং একে সিসার পাত দিয়ে ঢেকে দেন।

১৮১৮ সালে ওসমানি সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ কাঠের গম্বুজটির ওপর বর্তমান ইটের তৈরি সবুজ গম্বুজটি তৈরি করেন। বর্তমান গম্বুজটি তৈরি হলে তা-ও প্রথম সাদা রঙে রাঙানো হয়। পরে তা তৎকালীন হিজাজী আরবদের রুচি অনুযায়ী নীল-বেগুনি রঙে রাঙানো হতো। ১৮৩৭ সালে সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদের আদেশে প্রথম গম্বুজটি সবুজ রঙে রাঙানো হয়। সবুজ গম্বুজটি নিচে বর্গাকৃতি এবং ওপরে অষ্টভুজ আকৃতিতে তৈরি করা হয়েছে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম