Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

রিজিক বৃদ্ধির ১০ আমল

Icon

সুহাইল আহমদ

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রিজিক বৃদ্ধির ১০ আমল

আল্লাহ রিজিকদাতা। যখনই কোনো বান্দার রিজিকের প্রয়োজন হয়, আল্লাহ তার জন্য রিজিকের বন্দোবস্ত করে দেন। যে ব্যক্তি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে রিজিক অন্বেষণ করে আল্লাহ তার জন্য যথেষ্ট। আল্লাহতায়ালা বান্দাকে এমন উৎস থেকে রিজিক দান করেন, যে সম্পর্কে তার কোনো ধারণাই নেই। কুরআন হাদিসে বর্ণিত, রিজিক বৃদ্ধির কিছু আমল নিয়ে

বিস্তারিত লিখেছেন-সুহাইল আহমদ

* সালাত আদায়

যথা সময়ে নামাজ আদায় করলে আল্লাহ রিজিকের দরজা উন্মুক্ত করে দেন। নামাজ আদায়কারীর রিজিকের দায়িত্ব তিনি নিয়ে নেন। ইরশাদ করেছেন, ‘আর আপনি পরিবার-পরিজনকে নামাজ আদায়ের আদেশ দিন এবং নিজেও তার ওপর অটল থাকুন। আমি আপনার কাছে কোনো রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর মুত্তাকিদের জন্যই শুভ পরিণাম।’ (সূরা ত্বহা, আয়াত : ১৩২)।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেছেন, রাসূল (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! আমার ইবাদতের জন্য তুমি তোমার অন্তরকে খালি করো। আমি তোমার অন্তরকে অভাবমুক্ত হিসাবে পরিপূর্ণ করে দেব এবং তোমার দরিদ্র্যের পথ দূর করে দেব। আর যদি তা না করো; আমি তোমার হাত (দুনিয়ার) ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেব এবং তোমার অভাব মেটাব না।’ (তিরমিজি, হাদিস ২,৪৬৬)।

তাওবা করা : বেশি বেশি তাওবা ইস্তিগফারের দ্বারা রিজিক বৃদ্ধি পায়। আল্লাহ বলেন, ‘আমি তাদের বলেছি, নিজ প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাশীল। তিনি আকাশ থেকে তোমাদের ওপর প্রচুর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন এবং তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তানসন্ততিতে উন্নতি দান করবেন এবং তোমাদের বাগ-বাগিচা এবং নদীনালা দান করবেন।’ (সূরা নুহ, আয়াত : ১০-১২)।

ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বিবরণে আছে রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি লাগাতার তওবা-ইস্তিগফার করবে; আল্লাহতায়ালা সংকট থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেবেন; সব দুশ্চিন্তা মিটিয়ে দেবেন এবং অকল্পনীয় উৎস থেকে রিজিকের ব্যবস্থা করে দেবেন।’ (আবু দাউদ, হাদিস : ১,৫১৮)।

দান-সদকা করা : রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘প্রতিদিন সকালে দুজন ফেরেশতা অবতরণ করেন। তাদের একজন বলে, হে আল্লাহ! দানকারীকে তার দানের জন্য উত্তম প্রতিদান দিন। অপরজন বলে, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস করে দিন।’ (বোখারি, হাদিস : ১,৪৪২)।

দান-সদকা করার মাধ্যমে রিজিক বাড়ে। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘আর তোমরা যা কিছু আল্লাহর জন্য ব্যয় করো; তিনি তার বিনিময় দেবেন। তিনিই উত্তম রিজিকদাতা।’ (সূরা সাবা, ৩৯)।

শুকরিয়া আদায় করা : শুকর আদায় করার দ্বারা নিয়ামত বৃদ্ধি পায়। আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘যদি তোমরা শোকর আদায় করো, তবে আমি অবশ্যই তোমাদের (নিয়ামত) বাড়িয়ে দেব। আর যদি তোমরা অকৃতজ্ঞ হও, নিশ্চয় আমার আজাব বড় কঠিন।’ (সূরা ইবরাহিম, আয়াত : ৭)।

রাসূল (সা.) আল্লাহর ইবাদত ও শুকরিয়া আদায়ের জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতেন। সাহাবিদেরও তিনি ইবাদত ও শুকরিয়ার জন্য আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে শিখিয়েছেন। মুআজ ইবনে জাবাল বলেন, একদিন রাসূল (সা.) আমার হাত ধরে বললেন, তোমাকে অছিয়ত করছি, প্রত্যেক নামাজের পর এ দোয়াটি পড়-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা আঈন্নী আলা যিকরিকা ওয়া শুকরিকা ওয়া হুসনি ইবাদাতিকা

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার জিকির, আপনার কৃতজ্ঞতা ও শোকর আদায় এবং সুন্দর করে আপনার ইবাদত করতে আপনি আমাকে সাহায্য করুন। (সুনানে আবু দাউদ : ১৫২৪)।

জীবিকার সন্ধান করা : আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অতঃপর নামাজ সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে (জমিনে) ছড়িয়ে পড়ো আর আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করো এবং আল্লাহকে অধিক পরিমাণে স্মরণ করো; যাতে তোমরা সফলকাম হও।’ (সূরা জুমা, আয়াত: ১০)

রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের কেউ যদি রশি নিয়ে সকালবেলা পাহাড়ের দিকে বের হয়। এরপর লাকড়ি সংগ্রহ করে তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে এবং দানও করে। মানুষের কাছে হাত পাতার চেয়ে তার জন্য এটা উত্তম।’ (বোখারি, হাদিস: ১,৪৮০; মুসলিম, হাদিস: ১,০৪২)

আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক : আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) কে আমি বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কামনা করে তার রিজিক প্রশস্ত করে দেওয়া হোক এবং আয়ু দীর্ঘ করা হোক সে যেন তার আত্মীয়দের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখে।’ (বোখারি, হাদিস: ৫,৯৮৫)।

রিজিক বৃদ্ধির অন্যতম আরেকটি আমল হচ্ছে আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা। আত্মীয়ের সঙ্গে সদাচরণ করতে এবং তাদের হক যথাযথভাবে আদায় করার নির্দেশ দিয়েছেন আল্লাহতায়ালা। (সূরা নিসা, আয়াত: ৩৬; সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ২৬)

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম