Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

দ্বীনি মজলিসের ফজিলত

Icon

জান্নাতুল ফেরদৌস

প্রকাশ: ০৩ মে ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দ্বীনি মজলিসের ফজিলত

দুনিয়ায় আমরা বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন ধরনের আসর বসাই বা মজলিসে বসি। তার মধ্যে সবচেয়ে ফজিলতপূর্ণ, দামি, মূল্যবান এবং মহান আল্লাহর কাছে প্রিয়, পছন্দের মজলিস হলো দ্বীনের মজলিস। মজলিশ অর্থ আসর, বৈঠক, সভা, সমিতি, আলোচনার স্থান ইত্যাদি।

জ্ঞান অর্থ আলো। যার জ্ঞান নেই তার আলোও নেই। আর যার আলো নেই , সে অন্ধকারে নিমজ্জিত-পথভ্রষ্ট। এ জ্ঞান শিখার অন্যতম একটি মাধ্যম হলো দ্বীনের মজলিস। ইলম হলো জান্নাতের একটি বাগান, যার ফুল কখনো শুকায় না। যার সুভাস চিরন্তন। যে ইলম চর্চা করে, নিয়মিত মজলিসে যায়, ইলমের অন্বেষণ করে, অন্যকে শিক্ষা দেয় মহান আল্লাহতায়ালার কাছে তার মর্যাদা সুমহান ও সুউচ্চ।

স্বয়ং রাসূল (সা.)-এর ওপর প্রথম ওহি নাজিল হয়েছিল, ‘পড়, তোমার প্রভুর নামে যিনি সৃষ্টি করেছেন।’ (সূরা আলাক-১)। রাসূল (সা.) বলেছেন-‘জ্ঞান অর্জন প্রত্যকে নর-নারীর জন্য ফরজ।’ মহান আল্লাহ ও রাসূল (সা.) ইলম শিক্ষার ওপর সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন। কাজেই আমি জানি না-এ কথা বলাও একটা বড় গুনাহ। একজন মুসলমান, সে জ্ঞানী হবে-এটা ইমানের অন্যতম দাবি। এ কারণেই আমাদের কে ইলমের মজলিসে যাওয়া এত জরুরি।

হজরত আবদুল্লাহ বিন আমর (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! জিকিরের মজলিসের গনিমত কী? তিনি বলেন, জিকিরের মজলিসগুলোর গনিমত বা লাভ হলো- জান্নাত।’

মুসনাদে আহমাদ ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি দুনিয়ায় জান্নাতের বাগানে থাকতে চায়, সে যেন জিকিরের মজলিসে অবস্থান করে, কেননা এগুলোই জান্নাতের বাগান।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘জিকিরের মজলিস হলো-ফেরেশতাদের মজলিস, আর অসার কথাবার্তা ও গাফিলতির মজলিস হলো- শয়তানের মজলিস। তাই বান্দার উচিত এ দুটির মধ্যে যা তার অধিক পছন্দনীয় ও সবচেয়ে উত্তম তা বেছে নেওয়া; কেননা সে দুনিয়া ও আখেরাতে এদের সঙ্গেই থাকবে।’

কাজেই দ্বীনের মজলিসে যাওয়া এবং তার সঙ্গে লেগে থাকার এ ফজিলত যে পেল না তার মতো দুর্ভাগা আর কে? আমরা দুনিয়া নিয়ে এত ব্যস্ত থাকি, কত কিছুতে কত সময় দেই। কিন্তু দ্বীনের মজলিসের তালাশ করি না, যাই না। তাই আমাদের অন্তর মরে যায়। দ্বীনের মজলিসে আসা বান্দার অন্তরে আল্লাহতায়ালা মানসিক প্রশান্তি দেন, তার ওপর মহান আল্লাহর রহমত নাজিল হয়, যতক্ষণ সে মজলিসে বসে থাকে আল্লাহতায়ালার ফেরেশতারা তাকে বেস্টন করে রাখেন। ফলে সে মজলিসে আসতে যেমন শান্তি পায়, তেমনি মজলিস থেকে একটা প্রশান্তি নিয়ে বের হয়। দুনিয়ার কোনো মজলিস আপনাকে এতটা প্রশান্তি দেবে না, যা দ্বীনের মজলিস আপনাকে দিতে পারবে।

আপনি যে পায়ে হেঁটে ইলমের মজলিসে আসবেন- সে পা, কান কেয়ামতের মাঠে সাক্ষী দেবে যে, একটা নেক কাজ করেছিলেন। একজন মুমিনের সবচেয়ে বড় কাজ, দায়িত্ব দ্বীনের সঙ্গে আঠার মতো লেগে থাকা, আল্লাহর সন্তুষ্টি, তাকওয়া ভীতি অর্জন করা।

মহান আল্লাহ বলেছেন, ‘মহাকালের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত! তবে তারা ছাড়া যারা ইমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে।’ (সূরা আসর, ১-৩)।

রাসূল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষকে ভালো কথা শিক্ষা দিয়ে থাকে তার জন্য স্বয়ং আল্লাহতায়ালা, তাঁর ফেরেশতাগণ, আসমানবাসী, জমিনবাসী, এমনকি গর্তের পিপীলিকা পর্যন্ত দোয়া করে (তিরমিযি শরিফ)।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম