কেয়ামত কবে?
আবু আল কাসেম মোহাম্মদ ফেরদাউস
প্রকাশ: ২৪ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
পৃথিবীর সর্বকালের সর্বযুগের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব আমাদের প্রিয় নবি হজরত মোহাম্মদ মোস্তাফা (সা.) কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে যে সতর্ক বা ভবিষ্যদ্বাণী রেখে গেছেন অনাগত কালের মানুষের জন্য তা সত্যি বিস্ময়ের উদ্রেক করে। আজ পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তথা পৃথিবীর সমগ্র মানবগোষ্ঠীর মাঝে এর সুস্পষ্ট প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।
অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে সে ঘটনাগুলোকে আমাদের ভেবে দেখার এখনই সময়। প্রিয় নবি (সা.)-এর ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর কিছু কিছু তাই সদয় জ্ঞাতার্থে নিম্নে লিপিবদ্ধ করা হলো। নবিজি (সা.)-এর ওফাতের পর কেয়ামতের আলামতগুলো প্রকাশ পেতে থাকবে। এক সময় যারা দারিদ্র্যের নিষ্ঠুর কশাঘাতে জর্জরিত ছিল অর্থাৎ যারা সমাজের অতিদরিদ্র শ্রেণির লোক হিসাবে পরিগণিত হতো তারা সুউচ্চ বা সুরম্য অট্টালিকা নির্মাণে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। আর অকুলিন কুলিন হবে।
অন্যদিকে ধন প্রাচুর্য এত বেড়ে যাবে তখন দান-অনুদান প্রদানের জন্য লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হবে। বাড়ি বাড়ি মসজিদ তৈরি হবে এবং রাজপ্রাসাদের মতো মসজিদের সৌন্দর্য, চাকচিক্য, জৌলুস বৃদ্ধি পাবে। উম্মতেরা ৭৩ ফেরকায় বিভক্ত হয়ে পড়বে। এর মধ্যে ৭২ ফেরকার উম্মতরা দোজখের বাসিন্দা হবে। নতুন নতুন ফতোয়াবাজ আলেমের উদ্ভব ঘটবে এবং এতে নানাবিধ জটিল সমস্যা দেখা দেবে। মসজিদ বা ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে চরিত্রহীন, ভণ্ড ও লেবাসধারীদের প্রভাব বা দৌরাত্ম্য বৃদ্ধি পাবে। সত্যবাদীর চেয়ে মিথ্যাবাদীদের পক্ষে লোক সমাগম বেশি হবে।
হত্যা, রাহাজানি, খুন-খারাবি, যুদ্ধ-বিগ্রহ বেড়ে যাবে। নানা অর্থে নানা নামে সুদের ব্যাপক প্রচলন অর্থাৎ সুদের বহুমুখী ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে। বিচারের নামে অবিচার অর্থাৎ ন্যায়বিচার নির্বাসিত হবে। আমানতে খেয়ানত বৃদ্ধি পাবে ও সততা নির্বাসিত হবে। শাসক জনগণের সম্পদের রক্ষক না হয়ে ভক্ষকে পরিণত হবে। আখেরাতের কথা ভুলে মানুষ দুনিয়া নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়বে।
নতুন নতুন রোগব্যাধি, বালামুসিবত, ভূকম্পন ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে যাবে। খাদ্যদ্রব্যের স্বাদ-গন্ধ ও বরকত কমে আসবে। শিক্ষিতের হার বেড়ে যাবে, জ্ঞানচর্চা কমতে থাকবে। ইলম থাকবে, আমল কমে আসবে। মা-বাবা, ভাইবোন ও রক্তের সম্পর্কের আত্মীয়স্বজনকে পর মনে হবে এবং পরকে বেশি আপন মনে হবে।
আজ থেকে প্রায় পনেরোশ বছর আগে কেয়ামতের আলামত সম্পর্কে মহানবি (সা.) যে সতর্কবাণী পবিত্র মুখে উচ্চারণ করেছেন, এখন তা দিবালোকের মতো সত্য হিসাবে প্রতীয়মান হচ্ছে। একবার অন্তর্দৃষ্টি দিয়ে দেখুন ও ভাবুন প্রতিটি পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র অর্থাৎ বিশ্ব মানবগোষ্ঠীর মাঝে মহামানবের মহাবাণীর বাস্তব প্রতিফলন।