অল্প আমল অধিক সওয়াব
সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলত
মো. আব্দুল ওহাব
প্রকাশ: ১৭ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সূরা কাহাফ পাঠের ফজিলত
পৃথিবীতে সবচেয়ে ভয়াবহ ফেতনা হলো দাজ্জালের ফেতনা। এ ফেতনা এতই ভয়াবহ যে, যদিও রাসূল (সা.)-এর জীবনে দাজ্জালের ফিতনা সংঘটিত হওয়ার কোনো সম্ভাবনা ছিল না, তবুও তিনি প্রত্যেক নামাজের পর দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচার জন্য দোয়া করতেন। আমাদের জন্য আশার বাণী হচ্ছে এই যে, যদি আমরা সূরা কাহাফের প্রথম ১০ আয়াত মুখস্থ করি তাহলে দাজ্জালের ফেতনা আমাদের স্পর্শ করতে পারবে না। যেমন হাদিসে এসেছে, আবু দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফের প্রথম দশ আয়াত মুখস্থ করবে সে দাজ্জালের ফেতনা থেকে হেফাজতে থাকবে [মুসলিম, হাদিস নং : ৮০৯]।
আবার অন্য এক হাদিসে এসেছে, নাওয়াস ইবনে সাময়ান (রা.) থেকে বর্ণিত এক হাদিসে রাসূল (সা.) বলেন, তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি দাজ্জালকে পাবে, সে যেন সূরা কাহাফের শুরুর অংশ পড়ে [মুসলিম, হাদিস নং : ২৯৩৭]। এছাড়া এ সূরা কাহাফ দাজ্জালের ফেতনা থেকে বাঁচানোর পাশাপাশি পাঠকারীর জন্য আলো হবে। যেমন হাদিসে এসেছে, আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ যেমনভাবে নাজিল হয়েছে সেভাবে পড়বে, তার জন্য কেয়ামতের দিন সেটা নূর (আলো) হবে [শুয়াবুল ইমান, হাদিস নং: ২২২১]।
অন্য এক হাদিসে এসেছে, আবু সাইদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেন, যেমনভাবে নাজিল করা হয়েছে, সেভাবে যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ পড়বে, তার জন্য সেটা নিজের স্থান থেকে মক্কা পর্যন্ত আলো হবে এবং যে শেষ দশ আয়াত পড়বে, সে দাজ্জালের গণ্ডির বাইরে থাকবে এবং দাজ্জাল তার ওপর কোনোরূপ প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না [সুনানে নাসাঈ, হাদিস নং : ১০৭২২]।
সূরার অলৌকিক এক ফজিলত অন্য এক হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। যেমন-হজরত বারা ইবনে আজেব (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাতে সূরা কাহাফ তেলাওয়াত করছিলেন। তার কাছে দুটি রশি দিয়ে একটি ঘোড়া বাঁধা ছিল। এরই মধ্যে একটি মেঘখণ্ড এসে তাকে ঘিরে ফেলে। এরপর যখন মেঘখণ্ডটি তার খুব কাছে চলে আসছিল, তখন তার ঘোড়া ছোটাছুটি করতে লাগল। সকালে ওই ব্যক্তি রাসূল (সা.)-এর কাছে এসে রাতের ঘটনা জানালেন। তিনি বললেন, ওটা ছিল সাকিনা (আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ রহমত), যা কুরআন তিলাওয়াতের বরকতে নাজিল হয়েছিল [বোখারি, হাদিস নং : ৫০১১, ৩৬১৪]।
জুমার দিনে সূরা কাহাফ পাঠের ভিন্ন ফজিলতও হাদিসে বর্ণিত আছে। যেমন আবু সাঈদ আল্ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা আল কাহাফ পড়বে, তার (ইমানের) নুর এ জুমা থেকে আগামী জুমা পর্যন্ত চমকাতে থাকবে [মিশকাত ২১৭৫]।