Logo
Logo
×

ইসলাম ও জীবন

মুমিনের জন্য হালাল উপার্জন

Icon

মুফতি সফিউল্লাহ

প্রকাশ: ১৩ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মুমিনের জন্য হালাল উপার্জন

ইবাদত করা যেমন ফরজ, ঠিক তেমনি হালাল উপার্জন বা হালাল রুজির অন্বেষণ করাও ফরজ। আল্লাহ পাকের নির্দেশ-সালাত সমাপ্ত হয়ে গেলে পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড় আর আল্লাহর অনুগ্রহে জীবিকা অন্বেষণ কর, তথা উপার্জন কর (সূরা জুমুয়া-১০)।

আল্লাহর শাস্তি থেকে বাঁচার জন্য মুমিন ব্যক্তির জন্য জরুরি হালাল জীবিকা গ্রহণ করা এবং হারাম উপার্জন থেকে বিরত থাকা। আর এটাই হলো আল্লাহতায়ালার চূড়ান্ত ফায়সালা। আল্লাহতায়ালা বলেন; হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু আছে তা থেকে তোমরা আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কর না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু (সূরা বাকারাহ, আয়াত : ১৬৮)।

রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, অন্যান্য ফরজ কাজ আদায়ের সঙ্গে হালাল রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা গ্রহণ করাও একটি ফরজ (বায়হাক্বি-শু’আবুল ইমান, হাদিস : ৮৩৬৭)।

হালাল উপার্জনে রয়েছে অনেক উপকারিতা ও বরকত। হালাল মানুষের হৃদয়কে আলোকিত করে। হৃদয়কে প্রশান্তি ও পরিতৃপ্তি দান করে। রাসূলুল্লাহ (সা.) বিশিষ্ট সাহাবি সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.)-কে ডেকে বলেন, ‘হে সাদ, তোমার খাবার পবিত্র কর। তাহলে তোমার দোয়া কবুল হবে (তাবরানি, মুজামুল আওসাত, হাদিস : ৬৪৯৫)।

হারাম পন্থায় উপার্জন করা মন্দ ও নিন্দনীয়। হারাম পন্থায় উপার্জন করার কারণে অধিকাংশ সময় অন্যের হক নষ্ট হয়। হারাম মানুষের জীবন থেকে বরকত তুলে নেয়। পবিত্র কুরআনে মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহ সুদকে নিশ্চিহ্ন করেন আর দান-সদকা বাড়িয়ে দেন’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ২৭৬)।

এমনিভাবে হারাম উপার্জন মানুষের রিজিক কমিয়ে দেয়। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হালাল ও বৈধ উপায়ে সম্পদ অর্জন করে, তাকে বরকত দান করা হয়। আর যে ব্যক্তি হারাম ও অবৈধ পন্থায় সম্পদ অর্জন করে, সে এমন ব্যক্তির মতো-আহার করেও তৃপ্ত হয় না (অর্থাৎ সে যতই ভক্ষণ করুক না কেন; তার ক্ষুধা নিবারণ হয় না)’ (মুসলিম, হাদিস : ১,০৫২)।

তা ছাড়া হারাম উপার্জন করলে দোয়াও কবুল হয় না। হালাল ভক্ষণ দোয়া কবুলের পূর্বশর্ত। রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘একজন মানুষ লম্বা পথ সফর করেছে, ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত। এরপর সে না ঘুমিয়ে রাতে নামাজ পড়ে এবং আল্লাহকে ডেকে ডেকে দোয়া করে হে আল্লাহ! তুমি আমার গুনাহ মাফ কর। কিন্তু তার খাদ্য হারাম, পানীয় হারাম, কাপড়-চোপড় হারাম। তার সব কিছুই হারাম। সুতরাং ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত শরীরে, না ঘুমিয়ে সে যত মনোযোগসহকারেই দোয়া করুক না কেন, আল্লাহর দরবারে তা কবুল হবে না’ (সহিহ মুসলিম ১০১৫)।

হারাম পন্থায় উপার্জিত সম্পদের মাধ্যমে হারামখোর যদিও সাময়িকভাবে সুখী হয়; কিন্তু হারাম খাওয়ার কারণে তাকে জাহান্নামে যেতে হবে। রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে দেহের গোশত হারাম মালে গঠিত, তা জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। হারাম মালে গঠিত দেহের জন্য জাহান্নামই সমীচীন’ (মুসনাদে আহমদ)। রাসূল (সা.) আরও বলেন, ‘এমন দেহ জান্নাতে প্রবেশ করবে না, যাকে হারাম খাবার দ্বারা পরিপুষ্ট করা হয়েছে’ (সহিহ তারগিব : ১৭৩০)।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম