
প্রিন্ট: ১১ এপ্রিল ২০২৫, ০১:১৭ এএম

সানজিদা জাহান শাম্মী
প্রকাশ: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আরও পড়ুন
‘টেকো মশাই’ নামে পরিচিত এলাকায় রবীন বাবু। তবে সবাই কিপটা নামেও চেনে। সারা দিন শুধু টাকার চিন্তা করে। বউয়ের কাছে আলমারির চাবি রাখে, আর টাকা-পয়সা রাখে সব নিজের বালিশের নিচে। মানে আলমারি ফাঁকা তবু বউকে নিষেধ করে আলমারি যেন না খোলে। রবীন বাবু নিজেকে খুব চালাক মনে করে। সে ভাবে, মেয়েমানুষ তো পেটের কথা সব বলে দেয়। যদি তার বউ গর্ব করে পাড়া-প্রতিবেশীকে বলে বেড়ায়, আমার স্বামী আমাকে ভালোবাসে, বিশ্বাসও করে, তাই আলমারির চাবি আমার কাছে রাখে। আর চোর যদি এ কথা কোনোভাবে শুনে ফেলে তবে আলমারি খুঁজেও কিছু পাবে না। চোর বিশ্বাসও করবে না মাথার বালিশের ভেতর সব টাকা-পয়সা আছে। এ ভেবে রবীন বাবু বেশ আনন্দে আর নিশ্চিন্তে থাকে। কিন্তু একদিন হঠাৎ ঘটল উলটো ঘটনা। সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠেই দেখে বালিশের তুলা সব বের করা, মেঝেতে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে সব তুলা, আর রবীন বাবু বালিশ ছাড়া ঘুমাচ্ছেন।
ঘুম ভাঙতেই বউকে ডেকে বললেন, ‘গিন্নি ও গিন্নি, আমার যে সর্বনাশ হয়ে গেল! বালিশের নিচ থেকে চোর সব টাকা-পয়সা নিয়ে পালিয়েছে। এখন কী করব? যদি টাকা-পয়সাগুলো সব আলমারিতে রাখতাম তাহলে আজ এই দশা হতো না আমার। আমার থেকেও চোর বেশি চালাক। আলমারি না হাতিয়ে বেটা আগে বালিশ হাতিয়েছে।’
রবীন বাবু আফসোসের সুরে বললেন, ‘ও গিন্নি, আমাকে ক্ষমা কর। তোমাকে কোনোদিন গয়নাও বানিয়ে দেইনি। হায় হায় হায় এ কী হয়ে গেল!’
এই বলে রবীন বাবু টাক মাথায় হাত রেখে বসে রইলেন। গিন্নি এবার শাড়ির আঁচলে মুখ লুকিয়ে মুচকি হেসে বললেন, ‘চোর পালালে বুদ্ধি বাড়ে। এইবার শিক্ষা হয়েছে তো? কিপটামি বাদ দাও। খালি আলমারির চাবি আর দিবা আমারে? আসলে চোর তো কিছু নেয়নি। তোমারে উচিত শিক্ষা দেওয়ার জন্যই আমার এই চোরের অভিনয়। আলমারিতে টাকা-পয়সা সব আমি রেখে দিয়েছি। আর বালিশটাও ছিঁড়ে রেখেছি।’।
রবীন বাবু আনন্দে লাফাতে লাফাতে বললেন, ‘গিন্নি, এইবার তোমাকে গয়না আমি বানিয়েই দেব।’ [ঠিকানাবিহীন]