সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ষড়যন্ত্র
সামনে বাম, পেছনে আওয়ামী লীগ
নেপথ্যে কলকাঠি নাড়াচ্ছে বন্ধুপ্রতিম প্রতিবেশী রাষ্ট্র * দেশকে অস্থিতিশীল করতে বেছে নেওয়া হয়েছে শাহবাগ ও শহিদ মিনার

বিশেষ প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ফাইল ছবি
বামদের ওপর ভর করে দেশকে অস্থিতিশীল করার মাস্টার প্ল্যান তৈরি করেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ। ধর্ষণ, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, রাহাজানিসহ বিভিন্ন সামাজিক অপরাধের ইস্যুকে সামনে রেখে বাম রাজনৈতিক দল এবং তাদের সহযোগী সংগঠনগুলোকে পরিকল্পিতভাবে মাঠে নামানো হচ্ছে। একই সঙ্গে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে গণজাগরণ মঞ্চের সেই কুশীলবরাও। যারা প্রায় নিয়মিত শাহবাগ, জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, জাতীয় প্রেস ক্লাব, পল্টন মোড় প্রভৃতি এলাকায় সভা-সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালন করছে। এসব সংগঠনের কর্মসূচিতে যোগ দিচ্ছে আওয়ামী দোসররা। এজন্য বিশ্লেষকদের অনেকে বলছেন, বাস্তবতা হলো-সামনে বাম, পেছনে রয়েছে আওয়ামী লীগ। আর নেপথ্যে থেকে কলকাঠি নাড়ছে আমাদের বন্ধুপ্রতিম একটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র।
সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র যুগান্তরকে জানিয়েছে, মূলত মুখে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কথা বললেও বাস্তবে বেশির ভাগ বাম দল একে অপরের পরিপূরক হিসাবে কাজ করে। এজন্য বাম দলগুলোকে আওয়ামী লীগের বি-টিম হিসাবেও চিহ্নিত করা হয়। অতীতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের জোটবদ্ধ আন্দোলন করার বহু নজির রয়েছে। এছাড়া আমাদের বন্ধুপ্রতিম দেশের কাছে প্রথম পছন্দের দল আওয়ামী লীগ হলেও বিকল্প পুঁজি হচ্ছে বাম দল। আওয়ামী লীগ এবং বাম দলগুলোকে দিয়ে তারা নানা কৌশলে বিভিন্ন এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে। আওয়ামী লীগ এখন অস্তিত্ব সংকটে পড়ায় বাম সংগঠনগুলোকে বিভিন্ন ইস্যুতে মাঠে নামানো হচ্ছে।
এদিকে হঠাৎ করে বামপাড়ার দলগুলো এবং গণজাগরণ মঞ্চের কুশীলবদের এভাবে রাজপথে সক্রিয় হওয়া নিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলে আলোচনা-পর্যালোচনা চলছে। হচ্ছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। বিশেষ করে গত বছরের জুন-জুলাই-আগস্টজুড়ে দেশব্যাপী গড়ে ওঠা কোটাবিরোধী আন্দোলন এবং পরবর্তী সময়ে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পদত্যাগের এক দফা দাবির আন্দোলনে যাদের মাঠেই দেখা যায়নি, সেই বামরাই হুট করে এখন কেন রাজপথে সরব ও সক্রিয়। কিন্তু কেন-গণ-অভ্যুত্থানের পক্ষে থাকা দেশের বেশির ভাগ মানুষ এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে ব্যস্ত।
গণফোরামের কার্যকরী সভাপতি ও সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী এ প্রসঙ্গে রোববার যুগান্তরকে বলেন, বাম দলগুলোর মধ্যে বিভক্তি বেশ পুরোনো। তাদের বিরুদ্ধে সুবিধাবাদী রাজনীতি করার অভিযোগও প্রতিষ্ঠিত। কিছু বাম দল যেমন আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিল, এখনো আছে। তেমনই কিছু বাম দল আবার বিএনপির সঙ্গেও আওয়ামী লীগবিরোধী যুগপৎ আন্দোলনে ছিল, এখনো আছে। আবার কিছু বামপন্থি রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দ্বিদলীয় মেরূকরণের বাইরে নিজস্ব শক্তির বিকাশে কাজ করছে। তাই ঢালাওভাবে সবাইকে এক পাল্লায় মাপা যাবে না। তবে এটা ঠিক, বামপন্থি অনেক দলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের পুরোনো এবং ঐতিহাসিক সখ্য রয়েছে। সুবিধাবাদী রাজনীতির অংশ হিসাবে তারা আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তি করেছে, আওয়ামী লীগের বদান্যতায় মন্ত্রী-এমপি হয়েছে। নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিয়েছে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডন করে দলটির সাধারণ সম্পাদক সরদার রুহিন হোসেন প্রিন্স রোববার যুগান্তরকে বলেন, ঢালাওভাবে এসব অভিযোগ কল্পনাপ্রসূত এবং পরিকল্পিত অপপ্রচার। যার সঙ্গে বাস্তবতার কোনো মিল নেই। তাই আমাদের কাছে এ অভিযোগ একেবারেই গুরুত্বহীন। তিনি আরও বলেন, জুলাই-আগস্টের যে চেতনা, এর মূলে রয়েছে বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। এটা আমাদের মুক্তিযুদ্ধেরও মূল চেতনা ছিল। আমরা মনে করি, বৈষম্যমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার যে লড়াই, সেই লড়াই অব্যাহত রাখতে বাম বিকল্প শক্তির বিকাশ ঘটাতে হবে। পাশাপাশি দেশে গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উত্তরণ এবং জনজীবনে স্বস্তি, শান্তি ও নিরাপত্তায় চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রাখতে হবে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ছাত্র-জনতার নজিরবিহীন গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ চরম অস্তিত্ব সংকটে। দলটির সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫ আগস্ট পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন ভারতের দিল্লিতে। তাকে অনুসরণ করে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সাবেক মন্ত্রী, সংসদ-সদস্যসহ অধিকাংশ শীর্ষ নেতাও এখন ভারতের মাটিতে ঠাঁই নিয়েছেন। রাজনীতির ঘোর অমানিশায় থাকা এ দলটির সাবেক মন্ত্রী ও নেতারা এখন সেখানে বসেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বেকায়দায় ফেলার ছক কষছেন। তাদের মূল চাওয়া, কারণে-অকারণে দেশকে অস্থিতিশীল রাখা। সাধারণ মানুষের স্বাভাভিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত করা। আর এ চাওয়া পূরণে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতারা তাদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও সুহৃৎ বলে বিবেচিত দেশের বামপন্থি রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলোর ঘাড়ে সওয়ার হয়েছেন। নিজেদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য তাদের কাজে লাগাতে শুরু করেছেন। বিশেষ করে ধর্ষণবিরোধীসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের রাজপথের কর্মসূচি বাস্তবায়নে মাঠে নামতে ইন্ধন জোগাচ্ছেন। এজন্য বিদেশের মাটিতে থেকেই প্রয়োজনীয় অর্থেরও জোগান দিচ্ছেন তারা।
বিশ্লেষকদের মতে, গণ-আন্দোলনের মুখে পরাজিত শক্তি আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ মদদেই বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের নামে বামপন্থিদের পদচারণায় সরব হয়ে উঠেছে রাজধানীর শাহবাগ, জাতীয় জাদুঘর প্রাঙ্গণ, কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার, জাতীয় প্রেস ক্লাব ও পল্টন মোড়। সামনে বামপন্থিদের দেখা গেলেও পেছনে রয়েছে মূলত আওয়ামী লীগ। আর এ তৎপরতায় পার্শ্ববর্তী একটি দেশের সায়ও রয়েছে। তারাই পেছন থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটের দুই প্রধান দলের একটি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, আরেকটি জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ। এ দুই দলের দুই শীর্ষ নেতা হলেন রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনু। আওয়ামী লীগের নির্বাচনি প্রতিক নৌকা নিয়ে কখনো রাতের ভোটে, আবার কখনো দিনের বিনা ভোটে সংসদ-সদস্য হন। এমনকি টানা পাঁচ বছর শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায়ও ছিলেন তারা। ৫ আগস্ট-পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে স্বৈরাচারের দোসর হিসাবে রাশেদ খান মেনন ও হাসানুল হক ইনুকে আটক করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। বর্তমানে তারা কারাগারে আছেন।
অভিযোগ রয়েছে, বাম দল হিসাবে পরিচিত ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাসদেরও মদদ রয়েছে সাম্প্রতিক আন্দোলনে। বিশেষ করে ওয়ার্কার্স পার্টির ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্র মৈত্রী’, যুব সংগঠন ‘যুব মৈত্রী’, নারী সংগঠন ‘নারী মুক্তি সংসদ’, শ্রমিক সংগঠন ‘জাতীয় শ্রমিক ফেডারেশন’, গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন ও ‘গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশন’, কৃষক সংগঠন ‘জাতীয় কৃষক সমিতি’ এবং ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা সক্রিয়ভাবে মাঠে নেমেছেন। একইভাবে মাঠে নেমেছেন জাসদের ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্রলীগ’, তাদের যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুব জোট’, নারী সংগঠন ‘জাতীয় নারী জোট’, শ্রমিকদের সংগঠন ‘জাতীয় শ্রমিক জোট’, কৃষকদের সংগঠন ‘জাতীয় কৃষক জোটের নেতাকর্মীরাও। আওয়ামী লীগের শরিক গণতন্ত্রী পার্টির ছাত্র সংগঠন ‘জাতীয় ছাত্র ঐক্য’, যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুব ঐক্য’, সাম্যবাদী দলের (এমএল) ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্র আন্দোলন’, যুব সংগঠন ‘বাংলাদেশ যুব আন্দোলন’, ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-ন্যাপের ছাত্র সংগঠন ‘বাংলাদেশ ছাত্র সমিতি’, যুব সংগঠন ‘বাংলাদেশ যুব সমিতি’র নেতাকর্মীরাও ধর্ষণবিরোধীসহ বিভিন্ন ইস্যুতে আন্দোলনের নামে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এদের বাইরে বামপাড়ার দুই বড় দল বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, যুব ইউনিয়ন, সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট, পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ, বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী, চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, খেলাঘর আসর, সমাজতান্ত্রিক মহিলা ফোরাম, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রসহ (টিইউসি) বেশকিছু সংগঠন রাজপথে নানা ইস্যুতে এখন সরব।
এছাড়াও রাজপথ থেকে উধাও হয়ে যাওয়া গণজাগরণ মঞ্চের সেই কুশীলবরাও সম্প্রতি সক্রিয় হয়ে উঠেছে রাজনীতির মাঠে। মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার প্রক্রিয়া চলার সময় বিরোধী রাজনীতিকদের চাপে রাখার অংশ হিসাবে ১৯৯৩ সালে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রত্যক্ষ মদদ ও পৃষ্ঠপোষকতায় গড়ে উঠেছিল গণজাগরণ মঞ্চ। এ মঞ্চের শীর্ষ নেতা ছিলেন ডা. ইমরান এইচ সরকার, লাকী আক্তারসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া সেই সময়কার কিছু শিক্ষার্থী। যারা সবাই ছিলেন বাম অথবা আওয়ামী ঘরানার। বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর তাদের আর কোথাও দেখা যায়নি। এমনকি কোটাবিরোধী আন্দোলনসহ আওয়ামী লীগের শাসনামলে জনজীবনের কোনো সংকটেই তাদের পাওয়া যায়নি। পুরো সময় তারা ছিলেন লাপাত্তা। ডা. ইমরান এইচ সরকার, লাকী আক্তাররা কোথায় ছিলেন-অনেকে এমন প্রশ্ন করলেও তখন কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই ধর্ষণবিরোধী আন্দোলনকে পুঁজি করে শাহবাগ মোড়ে এবং পরদিন কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে সমাবেশ করার মধ্য দিয়ে নতুন করে আলোচনায় আসেন বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি ও গণজাগরণ মঞ্চের সংগঠক লাকী আক্তার।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নে নতুন করে মাঠে নেমেছে বামপাড়ার দলগুলো। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জনরোষের ভয়ে যখন দেশে-বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন, তখন তাদের উদ্ধারের জন্য ত্রাণকর্তা হয়ে মাঠে নেমেছেন লাকী আক্তারের মতো বাম দলগুলোর নেতাকর্মীরা। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কৌশল অবলম্বনের চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। আর এ কৌশলের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের ব্যানারে দাবি আদায়ের কর্মসূচি দেওয়া। যাতে সরকার এবং দেশ অস্থিতিশীল থাকে, আর নেপথ্যে আওয়ামী লীগ সুবিধা পায়। ইতোমধ্যে লাকী আক্তারের হঠাৎ আবির্ভাব নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে জন্ম দিয়েছে ব্যাপক আলোচনা। অনেকের ধারণা, লাকী আক্তার প্রকাশ্যে আসার নেপথ্যে রয়েছে আওয়ামী লীগ। তাই তাকে ফ্যাসিবাদী আখ্যা দিয়ে দ্রুত গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে ইনকিলাব মঞ্চসহ একাধিক সংগঠন মিছিলও করেছে।
এর আগে ধর্ষণের শিকার মাগুরার আট বছরের শিশু আছিয়াসহ হত্যা, ধর্ষণ, নিপীড়নের বিচার এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণের দাবিতে শনিবার কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার থেকে টিএসসি পর্যন্ত গণমিছিলের ডাক দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী বাম দলের নেতাকর্মীরা শহিদ মিনারে জড়ো হয়েছিলেন। যদিও এতে লাকী আক্তারকে দেখা যায়নি। একাধিক সূত্র জানায়, আওয়ামী লীগের ইন্ধনে এই কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছিল। এতে আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদেরও যোগ দেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। ‘বঙ্গবন্ধুর সৈনিক’ নামের একটি ফেসবুক গ্রুপে ওই কর্মসূচিতে অংশ নিতে আওয়ামী লীগের দলীয় নেতাকর্মী এবং সমর্থকদের আহ্বান জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘সকলকে আহ্বান জানাচ্ছি, কোনো দলীয় স্লোগান নয়, দলীয় ব্যানার নয়, ১৫ মার্চ ধর্ষণবিরোধী যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, শাহবাগে সেই কর্মসূচিতে যার যার মতো করে সবাই অংশগ্রহণ করবেন। এটাই হতে পারে আমাদের জন্য টার্নিং পয়েন্ট।’
গোয়েন্দা সূত্র জানায়, বামদের সামনে রেখে জনসমর্থিত দাবি নিয়ে ওই কর্মসূচির মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াই আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্য ছিল, এতে পতিত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা অংশ নিত, তা আগেই টের পেয়েছেন তারা। এ কারণে আগে থেকেই শহিদ মিনার এলাকায় নজরদারিতে রাখা হয়। পুলিশের একাধিক সূত্রও বলছে, এ কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের’। বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ইনকিলাব মঞ্চসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র-যুব সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরাও নিয়মিত রাজপথে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।