স্বাক্ষর জাল করে বোনকে ফ্ল্যাট দেন টিউলিপ

যুগান্তর ডেস্ক
প্রকাশ: ১৫ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ছবি: সংগৃহীত
স্বৈরাচার শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে ব্রিটিশ এমপি ও লেবার পার্টির সাবেক মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে এবার সম্পত্তি হস্তান্তরে জাল স্বাক্ষর ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আপন বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে তিনি জাল নোটারি নথি ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে। খবর ফিন্যান্সিয়াল টাইমসের।
‘টিউলিপ সিদ্দিক ইউজড ফেক সিগনেচার টু ট্রান্সফার ফ্ল্যাট টু সিসটার, বাংলাদেশি প্রসিকিউটর অ্যালেজস’ শিরোনামে বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানিয়েছে, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির অবৈধ বরাদ্দের অভিযোগের তদন্তের অংশ হিসাবে যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা থেকে সদ্য পদত্যাগ করা টিউলিপের বিরুদ্ধে দুদক এ অভিযোগ এনেছে।
দুর্নীতি দমন কমিশনের দাবির বরাতে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস জানায়, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন জমির অবৈধ বরাদ্দের সুবিধা নিতে টিউলিপ সিদ্দিক তার রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে ঢাকার পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে সরকারি প্লট নিজের এবং তার পরিবারের জন্য দখল করেছেন।
বৃহস্পতিবার দুদকের প্রকাশিত একটি অভিযোগে বলা হয়েছে, টিউলিপ তার বোনের নামে একটি পৃথক ফ্ল্যাট হস্তান্তরের জন্য জাল নোটারি ব্যবহার করেছিলেন। দুদক এখন টিউলিপের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ জমা দেবে। মামলাটি বিচারের আওতায় আনার আগে আদালতে অনুমোদন করতে হবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন আরও জানিয়েছে, তারা রাষ্ট্রীয় সম্পদ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগের বিস্তৃত তদন্তের অংশ হিসাবে টিউলিপ সিদ্দিকসহ হাসিনা পরিবারের একাধিক সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে।
দুদক বলছে, শেখ হাসিনা এবং তার আত্মীয়স্বজন যোগ্যতার নিয়ম লঙ্ঘন করে মানসম্মত বরাদ্দ পদ্ধতি উপেক্ষা করে সরকারি জমি অধিগ্রহণ করেছেন।
দুদকের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোমেন এ বিষয়ে বলেন, এটি শুধু একটি হিমশৈলের চূড়া মাত্র। এখন দুদকের তদন্তাধীন আরও অনেক অভিযোগ রয়েছে, যা ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী এবং তার নিকটাত্মীয় পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির বিশাল আকারের কথা বলবে।
দুর্নীতি দমন কমিশন দাবি করেছে, ঢাকার উপকণ্ঠে বৃহৎ আবাসিক উন্নয়ন প্রকল্প পূর্বাচল নিউ টাউন প্রকল্পে ৬০ কাঠা (প্রায় এক একর) সরকারি জমি বেআইনিভাবে হাসিনা, তার সন্তান এবং ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে।
তদন্তকারীরা অভিযোগ করেছেন, টিউলিপকে একটি সম্পত্তির মালিকানা পেতে অযোগ্য ঘোষণা করা উচিত ছিল, কিন্তু তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যরা নিয়মকানুনে হস্তক্ষেপ করেছেন। যোগ্যতার মানদণ্ডকে উপেক্ষা করেছেন।
বৃহত্তর তদন্তের অংশ হিসাবে দুদক আরও দাবি করেছে, টিউলিপ ঢাকার গুলশান এলাকার একটি ফ্ল্যাটের মালিকানা তার বোন আজমিনা সিদ্দিকের নামে হস্তান্তর করার জন্য একটি জাল নোটারি নথি ব্যবহার করেছিলেন।
অভিযোগপত্র অনুসারে, সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী গাজী সিরাজুল ইসলামের ওই নথিতে সিল রয়েছে। তিনি অবশ্য নোটারি করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, স্বাক্ষরটি তার স্বাক্ষরের সঙ্গে মেলেনি।
দুদক অভিযোগ করেছে, নোটারি জালিয়াতি সম্পত্তির আসল মালিকানা গোপন করার প্রচেষ্টার অংশ ছিল। অভিযোগের বিষয়ে টিউলিপ সিদ্দিক তাৎক্ষণিক ভাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।