রোহিতের ভারত অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন

ক্রীড়া ডেস্ক
প্রকাশ: ১০ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
-67cdf2ad461e6.jpg)
এক ভেন্যুতেই টুর্নামেন্টের সব ম্যাচ খেলায় দুবাইয়ের উইকেট হাতের তালুর মতোই চেনা ভারতের। আগের চার ম্যাচের মতো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির রবিবাসরীয় ফাইনালেও তাই টস হারের পরও অধিনায়ক রোহিত শর্মার মুখে ছিল চওড়া হাসি। ফাইনালে নিজের ৭৬ রানের অসাধারণ ইনিংসে দলের অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কীর্তিতে ম্যাচ শেষে দুবাইয়ের নীল সমুদ্র উত্তাল করে সেই হাসি আরও উজ্জ্বল হলো। নিউজিল্যান্ডকে চার উইকেটে হারিয়ে ফেভারিটের মতোই রেকর্ড তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতল রোহিতের ভারত। ২০০০ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ও ২০২১ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে কিউইদের কাছে হারের মধুর প্রতিশোধও নিলেন রোহিতরা।
দুবাইয়ের মন্থর উইকেটে আগে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডকে সাত উইকেটে ২৫১ রানে বেঁধে ফেলে কাজ অর্ধেক সেরে রেখেছিলেন ভারতের চার স্পিনার। ড্যারিল মিচেল (৬৩) ও মাইকেল ব্রেসওয়েলের (৫৩*) ফিফটির পরও লক্ষ্যটা ভারতের নাগালের মধ্যে ছিল। পুরো আসরে ফিফটি না পাওয়া রোহিত জ্বলে
উঠলেন একদম মোক্ষম সময়ে। তার ঝড়ো ফিফটিতে ছয় বল বাকি থাকতেই জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে যায় ভারত।
৪১ বলে ফিফটি ছুঁয়ে রান তাড়ায় দলকে সামনে থেকেই পথ দেখান অধিনায়ক। রোহিত ও শুবমান গিলের ১০৫ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙার পর দ্রুত আরও দুই উইকেট হারালেও পথ হারায়নি ভারত। সাত চার ও তিন ছক্কায় ৮৩ বলে ৭৬ রান করা রোহিতকে থামান রাচিন রবীন্দ্র। ৫০ বলে ৩১ করে আউট হন গিল। দারুণ ফর্মে থাকা বিরাট কোহলিকে এক রানের বেশি করতে দেননি ব্রেসওয়েল। চতুর্থ উইকেটে ৬১ রানের জুটিতে মাঝের ধাক্কা সামাল দেন শ্রেয়াস আয়ার (৪৮) ও অক্ষর প্যাটেল (২৯)। তাদের বিদায়ের পর হার্দিক পান্ডিয়া (১৮) ও রবীন্দ্র জাদেজাকে (৯*) নিয়ে বাকি কাজ সারেন লোকেশ রাহুল (৩৪*)। এক যুগ পর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে শিরোপা সংখ্যায় অস্ট্রেলিয়াকে (২) ছাড়িয়ে গেল ভারত (৩)। এবারের আসরে পাঁচ ম্যাচের সবকটিই তারা জিতেছে।
এরআগে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নিউজিল্যান্ডের শুরুটা ছিল উড়ন্ত। অষ্টম ওভারে বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে ভারতের দুই পেসার মোহাম্মদ শামি ও হার্দিক পান্ডিয়ার ওপর চড়াও হয়ে ৫৭ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন উইল ইয়াং ও রাচিন রবীন্দ্র। প্রথম দশ ওভারে কিউইদের রান ছিল এক উইকেটে ৬৯। কিন্তু ভারতের স্পিনাররা আক্রমণে আসার পর ভালো এই শুরুটা ধরে রাখতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। নিজের দ্বিতীয় ওভারে ইয়াংকে এলবিডাব্লুর ফাঁদে ফেলে প্রথম আঘাত হানেন রহস্য স্পিনার বরুণ চক্রবর্তী। ২৯ বলে ৩৭ রান করা রাচিনকে বোল্ড করেন আরেক স্পিনার কুলদীপ যাদব। দলীয় ৭৫ রানে কুলদীপের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন নিউজিল্যান্ডের ব্যাটিং স্তম্ভ কেইন উইলিয়ামসন। দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর ভারতের চার স্পিনারকে সামলাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়েছে কিউইদের। এ সময় রানের গতি কমে যায়। টম ল্যাথাম ৩০ বলে ১৪ করে রবীন্দ্র জাদেজার শিকার হওয়ার পর এক প্রান্ত আগলে রেখে ফিফটি তুলে নিলেও ৬৩ রান করতে ১০১ বল খেলেন ড্যারিল মিচেল। তাকে ফেরান শামি। মিচেলের বিদায়ের পর মাইকেল ব্রেসওয়েলের ঝড়ো ফিফটিতে একটু গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে নিউজিল্যান্ড। শেষ পাঁচ ওভারে তারা ৫০ রান তোলে। তিন চার ও দুই ছক্কায় ৪০ বলে ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন ব্রেসওয়েল। বরুণ ও কুলদীপ নেন দুটি করে উইকেট। এক উইকেট নেওয়া শামি নয় ওভারে দেন ৭৪ রান। ভারতের চার স্পিনার ৩৮ ওভারে দেন মাত্র ১৪৪ রান। তাতেই লক্ষ্যটা থাকে নাগালের মধ্যে।