Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

স্বাগতম মাহে রমজান

রমজানে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসুন

Icon

মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম

প্রকাশ: ০৪ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রমজানে মানবতার সেবায় এগিয়ে আসুন

ফাইল ছবি

মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মাস রমজান। প্রিয় নবি করিম (সা.) হাদিস শরিফে রমজানকে ‘শাহরুল মুওয়াসাত’ তথা সহানুভূতির মাস বলে আখ্যায়িত করেছেন। সন্দেহ নেই-ধৈর্য, সহনশীলতা, তাকওয়া অর্জনই সিয়াম সাধনার মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু এসবের বাইরেও রোজার বড় একটা উদ্দেশ্য হলো, মানবজাতিকে সহানুভূতি-সহমর্মিতার অনুপম শিক্ষা প্রদান করা। আমাদের উচিত এ মাসে দানের হাত প্রসারিত করা।

রমজান মাস দান-খয়রাতের মাধ্যমে আখেরাতের মুনাফা অর্জনের মাস, দুনিয়া অর্জনের মাস নয়। রমজান দয়া ও করুণার মাস। এ মাসে রোজাদার অভাবী লোকের প্রতিদিনকার দুঃখগুলো অনুভব করে নিজেকে উপবাস রেখে, ক্ষুধা ও পিপাসায় নিজেকে কষ্ট দিয়ে।

সিয়াম সাধনা মানুষকে দানশীলতা, বদান্যতা, উদারতা ও মহত্ত্বের শিক্ষা দেয়। কোনো প্রকার অপচয় না করে রোজার মাসে মানুষের সেবায় দান-সদকা করলে অভাবক্লিষ্ট মানুষের কল্যাণ হয় এবং মানবতা উপকৃত হয়।

নবিজি (সা.) বলেন, ‘আমি তিনটি বিষয়ে শপথ করে বলছি, দান দ্বারা সম্পদ কমে না। আর যখনই কোনো মানুষের ওপর জুলম হওয়ার পরও সে ধৈর্য ধরে তখনই আল্লাহ সে কারণে তার সম্মান বাড়িয়ে দেন। আর যখনই কোনো মানুষ শুধু শুধু নিজেকে অভাবী হিসাবে প্রকাশ করবে তখনই আল্লাহ তার জন্য অভাবের দুয়ার খুলে দেন।’ আপনার আশপাশে অগণিত মানুষ ক্ষুধার্ত এবং অভাবের শিকার, তাদের প্রতি নজর দিন। সহস্র লোক বস্ত্রহীন, তাদেরকে বস্ত্র দিন।

আমাদের নবিজি (সা.) মাহে রমজানকে রহমত, ক্ষমা ও মুক্তির মাস বলে ঘোষণা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ এ মাসে মানুষকে রহমত করে অন্যের প্রতি দয়া ও রহমতের শিক্ষা দিয়েছেন। করুণা ও দয়ার উপদেশ দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে- ‘নবিজি (সা.) এমনিতেই অধিক পরিমাণে দান করতেন। যখন থেকে জিবরাইল (আ.) তার কাছে আসা শুরু করেন, তখন থেকে মাহে রমজানে তিনি প্রবাহমান বাতাসের মতো উন্মুক্ত হস্তে অধিকতর দাতা হয়ে যেতেন।’ মহান আল্লাহ বলেন, ‘তোমরা যদি প্রকাশ্যে দান কর, তাহলে তা কতই না উত্তম। আর যদি তা গোপনে অসহায় ও অভাবীদের দিয়ে দাও, তবে তা তোমাদের জন্য আরও বেশি উত্তম। আল্লাহ তোমাদের পাপ মোচন করবেন...।’ (সূরা বাকারা-২৭১)

একটা সময় এটা ভেবে আফসোস হবে, কষ্ট হবে-হায়! আমি কেন দান করে কল্যাণকামী হলাম না, সদকা করে ভালো মানুষের অন্তর্ভুক্ত হলাম না! মহান আল্লাহ বলেন, ‘আমি তোমাদের যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় বলবে, হে আমার রব, আমাকে আরও কিছুকাল অবকাশ দিলেন না কেন? তাহলে আমি দান-সদকা করতাম এবং ভালো লোকদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সূরা মুনাফেকুন-১০) অথচ সেদিন আর এ সুযোগ ফিরে আসবে না।

হাদিসে এসেছে-‘দানে কখনোই সম্পদ কমে না, বান্দা যখন দানের হাত বাড়ায়, তখন সে দান অভাবীর হাতে পড়ার আগেই আল্লাহর হাতে পড়ে।’

আর আল্লাহ তো মানুষের সব বিষয়েই অবগত রয়েছেন। মাহে রমজানে দানের ফজিলত অনেক বেশি। তাই বছরের অন্য মাসগুলোর তুলনায় এ মাসে অধিক দান-সদকা করাই বুদ্ধিমানের কাজ। মাহে রমজানে নবিজির দুয়ারে এসে কেউ খালি হাতে ফিরে যেত না।

প্রিয় পাঠক! যে লোক শুধু প্রথাগত উপবাস করে; মাহে রমজানেও যে লোক দানশীলতা ও বদান্যতার চর্চা করে না, তার উপবাসকে সিয়াম সাধনা বলা যায় না। মাহে রমজানে উপবাসের সঙ্গে সঙ্গে দুস্থ মানবতা অসহায়দের সেবায় সাধ্যমতো দান-সদকা করাই হলো প্রকৃত সিয়াম সাধনা।

লেখক : আমির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম