Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ

নির্বাচনে কারসাজি আখেরে ভালো হয় না: সিইসি

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৩ মার্চ ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নির্বাচনে কারসাজি আখেরে ভালো হয় না: সিইসি

প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দীন বলেছেন, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় ইলেকশন ইঞ্জিনিয়ারিং (নির্বাচনে কারসাজি), ভোট সন্ত্রাস করে আপাতদৃষ্টিতে জেতা যায়; কিন্তু আখেরে নিজের জন্য, দলের জন্য, দেশের জন্য সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে, আখেরে ভালো হয় না। আমার প্রত্যাশা, কেউ এজাতীয় উদ্যোগ নেবেন না, চেষ্টা করবেন না। রোববার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে ‘জাতীয় ভোটার দিবস’-এর আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এদিন ২০২৪ সালে হালনাগাদ হওয়া ভোটার তালিকার তথ্য জানান সিইসি। তিনি জানান, গত বছর ১৮ লাখ ৮২ লাখ ১১৪ জন নতুন ভোটার যুক্ত হয়েছেন, যাদের মধ্যে পুরুষ ১২ লাখ ১৭ হাজার ২৮, মহিলা ৬ লাখ ৬৫ হাজার ২৪ এবং হিজড়া ৬২ জন। সবমিলিয়ে দেশে এখন ভোটার ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। এতে পুরুষ ভোটার ৬ কোটি ৩৩ লাখ ৬১ হাজার ৬১৫, মহিলা ৬ কোটি ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৬৫ এবং হিজড়া ৯৯৪ জন।

সিইসি আরও বলেন, দেশের ১৮ কোটি মানুষের কাছে আমার আবেদন থাকবে-আমাদের পাশে থাকুন। আপনাদের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমরা যুদ্ধে আছি। অত্যন্ত সীমিত সময়ের মধ্যে আমরা খুব কষ্ট করে এগিয়ে যাচ্ছি। মানুষ নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখছে। এখন ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সময় এসে গেছে। ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া শুধু আর অধিকার নয়, এটা একটা দায়িত্বও। আমাদের ওপরে মানুষের প্রত্যাশা অনেক বেশি। অন্য কোনো ইসির ওপর এত প্রত্যাশ ছিল না।

রাজনৈতিক দলগুলোর বিপরীতমুখী বক্তব্যের বিষয়ে সিইসি বলেন, দলগুলোর ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য গণতন্ত্রের সৌন্দর্য। রাজনৈতিক দলগুলো যখন বিপরতমুখী বক্তব্য দেয়, তখন আমি আশাহত নই। আমি বিশ্বাস করি, একপর্যায়ে দলগুলো একমত হবে। তিনি বলেন, আমাদের এখানে অনেকেই আছেন, যারা মনে করেন আমার দলই দেশপ্রেমিক আর কোনো দল নয়। এটি ঠিক না। মানুষ কিন্তু জন্মগতভাবেই দেশপ্রেমিক। জন্মের পর দেশপ্রেমটা পারিপার্শ্বিক অবস্থার কারণে কমবেশি হয়।

ঐকমত্য কমিশনের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সিইসি বলেন, বেশি বলা হয়ে যায় কি না জানি না, ওনারা যখন সব দলকে ডাকেন। যদি বলতেন আপনারা কি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন চান? তো বলতেন যে চাই। তখন বলতেন, সই করেন, নির্বাচনি আচরণবিধি মানবেন, আপনার দলের প্রার্থী যদি কোনো গোলমাল করে দলীয়ভাবে ব্যবস্থা নেবেন এবং সুন্দর একটি নির্বাচনের জন্য সহযোগিতা করবেন। এ রকম একটি ডকুমেন্ট যদি সব দলের থেকে স্বাক্ষর করে নিত। তাহলে নির্বাচনে আচরণবিধি মানার ক্ষেত্রে একটি চাপ থাকত। এটি যদি হয়, তাহলে আমাদের কাজটা কিন্তু অনেকটা সহজ হয়ে যাবে।

সভায় নির্বাচন কমিশনার বেগম তাহমিদা আহমদ বলেন, আমি চাই বদ্ধঘরের পরিবর্তে খোলা মাঠে নির্বাচনটা হোক। স্কুলের খোলা মাঠে নির্বাচন করতে কি পারব না? আপনারা সহযোগিতা করলে এটা করা সম্ভব। কিছুটা ভিন্নমত প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশনার আব্দুর রহমানেল মাছউদ বলেন, খোলা মাঠে নির্বাচন হতেই পারে। স্বচ্ছতা থাকা ভালো। তবে প্র্যাকটিকেল কিনা এটি ভাববার বিষয় আছে। এটি আলোচনা, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত নয়। তিনি আরও বলেন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলতে কেউ হয়তো বলবেন, সব দলের অংশগ্রহণ হলেই সেটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হয়। আমি যদি একলাইন বাড়িয়ে বলি, জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণই হলো অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের অন্যতম প্রধান নিয়ামক। ভোটারদের মতামতের তখনই প্রতিফলন হবে যদি সঠিকভাবে ভোট দিতে পারে।

নির্বাচন কমিশনার মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, কোনো অপরাধ সংঘটিত হলে তার দায় কেউ না কেউ নেবেন। যদি বিগত নির্বাচনগুলো ভালো না হয়ে থাকে এর দায় নির্বাচন কমিশনকে নিতে হবে। কেউ এর দায় এড়াতে পারেন না। তিনি বলেন, আমাদের ভাবতে হবে আমরা কঠিন পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমরা ভেঙে যাব; কিন্তু মচকাব না। তবে নির্বাচন কমিশনের একার পক্ষে ভালো নির্বাচন করা সম্ভব নয়।

চারটি বিষয় তুলে ধরে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে গণতন্ত্র উত্তরণের একটি বাস্তব সম্ভাবনা ও পরিবেশ তৈরি হয়েছে। যখন জাতীয় ভোটার দিবস উদযাপন করছি, তখন ভঙ্গুর নির্বাচনব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভোট ব্যবস্থাপনা ও ভোট অনুষ্ঠানের সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তাদের ভূলুণ্ঠিত ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ভোটবিমুখ জনগোষ্ঠীর ভোটে ফেরার আগ্রহ তৈরি হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা রক্ত, হানাহানি, চুরি, বাটপাড়ি, ব্যালট পেপার ছিনতাই দেখতে চাই না। রাতে সিল মারা দেখতে চাই না। কোনো কর্তৃপক্ষের প্রভাব দেখতে চাই না। আমরা দেখতে চাই, একটি স্বচ্ছ, সুন্দর ভোট উৎসব।

ইসি সচিব আখতার আহমেদের সভাপতিতে অনুষ্ঠানে জুলাই আন্দোলনে আহত ১৩ জনের হাতে স্মার্টকার্ড তুলে দেন সিইসি।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম