
প্রিন্ট: ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:৩২ এএম
তরুণদের নতুন দলের আত্মপ্রকাশ ২৮ ফেব্রুয়ারি

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অবশেষে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের নতুন রাজনৈতিক দল। ২৮ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) রাজধানীর জাতীয় সংসদ ভবন প্রাঙ্গণ সংলগ্ন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হবে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান। বেলা ৩টা থেকে শুরু হবে আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। সোমবার রাজধানীর বাংলামোটরে জাতীয় নাগরিক কমিটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ। এ সময় জানানো হয়, ‘নতুন রাজনৈতিক দলের নাম, প্রতীক এবং সাংগঠনিক কাঠামো এখনো ঠিক করা হয়নি। আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এগুলো উন্মোচিত করা হবে।’
সারজিস আলম বলেন, ‘২৮ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে আরেকটি নতুন অধ্যায় রচিত হতে যাচ্ছে। সংসদ ভবনকে এযাবৎকাল কিছু মানুষের ব্যক্তিগত, গোষ্ঠীগত ও দলীয় পলিসি মেকিংয়ের জায়গা বানিয়ে রাখা হয়েছিল। দেশের ১৮ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক সেই সংসদ ভবনকে সামনে রেখে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটি ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক দলের ঘোষণা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি হাজারও শহিদের জীবনের ওপরে লাখ লাখ ভাই-বোনের রক্তের ওপর দাঁড়িয়েছে যে নতুন বাংলাদেশ, সেখানকার আগামী প্রজন্মকে কাঙ্ক্ষিত দেশ উপহার দেওয়া আমাদের দায়িত্ব। আমরা এই লড়াই করে যেতে চাই।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘আপনার চোখে নতুন বাংলাদেশ শীর্ষক কর্মসূচিতে ২ লাখের বেশি মানুষ মতামত দিয়েছেন। ছাত্র, পেশাজীবী, কৃষক, শ্রমিক, রিকশাচালক, দিনমজুর, ব্যবসায়ী, গৃহকর্মীসহ সব শ্রেণিপেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে আমাদের তাদের মূল্যবান মতামত জানিয়েছেন। দেশের পরিবর্তনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসাবে তারা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় ক্ষমতার অপব্যবহার রোধ, জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণের কথা বলেছেন। সামাজিক ন্যায়বিচার অর্থাৎ সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরির অভিপ্রায় জানিয়েছেন। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্থাৎ সব ধরনের বৈষম্য হ্রাস ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করার দিকে গুরুত্ব আরোপ করেছেন। তারা চান সব ধরনের রাষ্ট্রীয় সংস্কার নিশ্চিত করা হোক।
তিনি বলেন, নতুন দলের কাছে জনগণের প্রত্যাশা একনায়কতন্ত্র ও পরিবারতন্ত্রের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিতে হবে। দলীয় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি আরও বলেন, নতুন দলে নারী ও তরুণদের ক্ষমতায়নে কার্যকর নীতি গ্রহণ করা হবে। রাজনৈতিক সহিংসতা, দখলদারিত্ব ও মাফিয়া কালচার বন্ধ করা হবে।
দলের নাম প্রসঙ্গে আখতার হোসেন বলেন, ‘জুলাই বিপ্লবকে প্রাধান্য দিয়ে রাজনৈতিক দলের নাম নিয়ে মানুষের প্রত্যাশা এসেছে। বাংলাদেশের ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে সংযুক্ত নাম প্রস্তাবিত হয়েছে। গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও ন্যায়বিচারের প্রতিফলন ঘটে এমন নামের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কিছু নামের মধ্যে আছে ‘জনতার দল’, ‘নতুন বাংলাদেশ পার্টি’, ‘বিপ্লবী দল’ ‘নাগরিক শক্তি’ ‘বাংলাদেশ বিপ্লবী পার্টি’ ও ‘রিপাবলিক পার্টি’ ইত্যাদি।
দলের প্রতীক নিয়ে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব বলেন, নতুন দলের প্রতীক হতে হবে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। সংগ্রাম, উন্নয়ন ও ঐক্যের প্রতীকী চিত্র ফুটিয়ে তোলা হবে। প্রস্তাবিত প্রতীকগুলোর মধ্যে আছে ‘উদীয়মান সূর্য’, ‘কলম’, ‘বই’ ‘মুষ্টিবদ্ধ হাত’ ইত্যাদি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব, সহমুখপাত্র মুশফিক উস সালেহীন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল।