Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

আওয়ামী দুষ্কর্মের দোসর ‘শিক্ষিত তস্কর’

ব্যাংক বিনাশে তিন গভর্নর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ব্যাংক বিনাশে তিন গভর্নর

ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী সরকারের সাড়ে ১৫ বছরে দেশের অর্থনীতি ও ব্যাংক খাতে রীতিমতো ‘লুটপাটের মহোৎসব’ হয়েছে। একসঙ্গে এত ব্যাংক লুট বিশ্বের কোথাও হয়নি। নজিরবিহীনভাবে পাচার হয়েছে এসব টাকার সিংহভাগ। আশঙ্কাজনভাবে বেড়েছে খেলাপি ঋণ। এতে অতি মাত্রায় দুর্বল হয়ে পড়েছে গোটা ব্যাংক খাত। এরপর থেকেই দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে শুরু হয় ‘রক্তক্ষরণ’। যা এখনো অব্যাহত। এসব নীতিবহির্ভূত কর্মকাণ্ডে সহায়তা করেছেন ব্যাংক ও অর্থনীতি সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক তিন গভর্নর-ড. আতিউর রহমান, ফজলে কবির ও আব্দুর রউফ তালুকদার। তাদের নীতিগত ও প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ব্যাংক দখল, লুট, বড় বড় জালিয়াতির ঘটনা ঘটে। ব্যাংক বিনাশে আওয়ামী দুষ্কর্মের এই তিন দোসর ‘শিক্ষিত তস্কর’ হিসাবে সবার কাছে পরিচিত। তাদের বিচারের দাবিও উঠেছে বিভিন্ন মহল থেকে। আলোচিত রিজার্ভ চুরিসহ অর্থনীতি ও ব্যাংক খাতে লুটপাটের প্রথম সুযোগ করে দিয়েছেন ড. আতিউর রহমান। তিনি সরকারের পতনের আগেই দেশত্যাগ করেন। ফজলে কবিরের আমলে আতিউরের প্রণীত নীতির মাধ্যমে অপকর্মের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। শুরু হয় ব্যাংক দখল। আর আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে অর্থনীতি ও ব্যাংকে নজিরবিহীন লুটপাট ও টাকা পাচারের ঘটনা ঘটে। এমনকি তিনি নিজেই উদ্যোগী হয়ে ব্যাংক দখলে সহায়তা করেন।

আতিউরের আমলে নানা অপকর্ম শুরু

ড. আতিউর রহমান ২০০৯ সালের ১ মে থেকে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে একটি শক্তিশালী ব্যাংক খাত পেয়েছিলেন। কিন্তু অদক্ষতা, ব্যবস্থাপনাগত দুর্বলতা, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের স্বকীয়তাকে খর্ব করা, ঋণখেলাপিদের সুবিধা দেওয়ায় খাতটি দুর্বল হতে থাকে। তিনি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের শৃঙ্খলা ভেঙে ফেলেন, পরিদর্শনব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেন, ব্যাংক লুটপাটের সুযোগ করে দেন। তার সময়ে নীতিমালার শিথিলতায় শুরু হয় জালিয়াতি। ওই সময়ে হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, ক্রিসেন্ট, অ্যাননটেক্সের জালিয়াতি প্রকাশিত হয়। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে দেওয়া নয় ব্যাংকের কোনোটিই দাঁড়াতে পারেনি। অপরিকল্পিত ও অদক্ষ আইটি ব্যবস্থাপনা সম্প্রসারণের কারণে রিজার্ভ চুরির সুযোগ তৈরি হয়।

২০১০ সালের শুরুতে সোনালী ব্যাংকে হলমার্ক ও বেসিক ব্যাংক কেলেঙ্কারি হয়। দুটি ব্যাংকে বড় জালিয়াতি হলেও আতিউরের নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক কঠোর পদক্ষেপ নেয়নি। তার সময়ে লুটপাটকারীদের নজর পড়ে জনতা ব্যাংকে। দুর্বল তদারকির পাশাপাশি প্রচলিত নীতিমালাগুলো শিথিল করে লুটাপাটকারীদের আরও বেশি সুযোগ করে দেন।

২০০৯ সালের ১৯ এপ্রিল শিল্প খাতের খেলাপি ঋণ ডাউন পেমেন্ট ছাড়া নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। ফলে নির্বিচারে ঋণখেলাপিরা এর সুযোগ নেন। ওই সময়ে খেলাপি ঋণ নবায়ন করতে ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিতে হতো। এতেও ক্ষান্ত হননি ঋণখেলাপিরা। তারা আরও ছাড় নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওপর চাপ প্রয়োগ করেন। ফলে ২০১২ সালের ১৪ জুন খেলাপি ঋণের নীতিমালা শিথিল করে দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ফলে খেলাপি ঋণের ঊর্ধ্বগতি কমানো সম্ভব হয়নি। ২০১৩ সালের ১৯ মে খেলাপি ঋণ নবায়নের মেয়াদ বাড়ানো হয়। সেখানে বলা হয়, প্রথম দফায় ২ বছর, দ্বিতীয় দফায় এক বছর এবং তৃতীয় দফায় ৬ মাসের জন্য নবায়ন করা যাবে।

২০১৫ সালে ঋণখেলাপিদের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ইতিহাসে নজিরবিহীন ছাড় দেওয়া হয়। ওই বছরের ২৯ জানুয়ারি খেলাপি ঋণ নবায়নে বড় ছাড় দেওয়া হয়। এতে ৫০০ কোটি টাকা এবং এর বেশি মেয়াদি ঋণ ১২ বছর ও চলমান ঋণ ৬ বছর মেয়াদে নবায়ন করার সুযোগ আসে। কিস্তির ১ থেকে ২ শতাংশ অর্থ জমা দিয়েই এ সুযোগ দেওয়া হয়। ব্যাংকের ‘কস্ট অব ফান্ড’-এর সঙ্গে ১ শতাংশ সুদ যোগ করে সুদ নির্ধারণের কথা বলা হয়। এ সুযোগ সীমিত সময়ের জন্য দেওয়া হলেও তা চলমান থাকে। আগে খেলাপি ঋণ ছয় মাস থেকে সর্বোচ্চ দুই বছরের জন্য নবায়ন করা যেত। এ নীতিমালার ফলে বেক্সিমকো গ্রুপসহ সরকারের ঘনিষ্ঠ শিল্পগ্রুপগুলো দফায় দফায় খেলাপি ঋণ দীর্ঘমেয়াদে নবায়ন করেছে।

২০১৪ সালের ১৬ জানুয়ারি বড় অঙ্কের ঋণ নীতিমালা শিথিল করা হয়। ফলে বড় গ্রাহকরা বেপরোয়া গতিতে বড় অঙ্কের ঋণ নিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের আপত্তি উপেক্ষা করে আতিউর আন্তর্জাতিক লেনদেন নিষ্পত্তির সংস্থা সুইফটের সঙ্গে আরটিজিএস-এর সংযোগ দিয়েছিলেন। যাতে ব্যাংকগুলো অনলাইনে লেনদেন করতে পারে। এতেই রিজার্ভ চুরির পথ সুগম হয়। ২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ সিস্টেমসের নিউইয়র্ক শাখায় রক্ষিত বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে এখনো ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। অপরিকল্পিত তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবস্থাপনা ও সম্প্রসারণের কারণেই ওই চুরি হয়েছিল। ড. আতিউরের সময় ব্যাংকের সব সূচকে অবনতি ঘটে। গভর্নর হওয়ার সময় খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। পদত্যাগের সময় ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা।

জালজালিয়াতি আড়াল করেছেন ফজলে কবির

২০১৬ সালের ২০ মার্চ থেকে ২০২২ সালের ৩ জুলাই পর্যন্ত গভর্নর ছিলেন ফজলে কবির। তার প্রতি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এতোটাই সন্তুষ্ট ছিলেন যে, আইন সংশোধন করে প্রথমবারের মতো গভর্নর পদে তার মেয়াদ বাড়ানো হয়। কারণ তিনি ব্যাংক খাতে সব জালজালিয়াতি নানা কূটকৌশলে আড়াল করেছেন। পাশাপাশি লুটপাটের সুযোগ অবারিত রেখেছেন। তার আমলে জালিয়াতির দায়ে কাউকে বড় শাস্তির মুখে পড়তে হয়নি। বরং ব্যাংক দখল করে লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছেন।

যেসব জালজাতিয়াতির ঘটনা প্রকাশিত ও ব্যাংক দখল হয়েছে তার সবগুলোরই সূত্রপাত হয়েছিল আতিউরের আমলে। তিনি সেগুলোকে ‘ধরি মাছ, না ছুঁই পানি’ নীতি অনুসরণ করে পরিস্থিতি মোকাবিলা করেছেন।

সালমান এফ রহমানের পরামর্শে ২০১৬ সালের ঋণ খেলাপিদের আরও বড় ছাড় দেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ওই বছরের ১৬ মে জারি করা সার্কুলারে ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে খেলাপি ঋণ ১০ বছর মেয়াদে নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়। এছাড়া ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এককালীন এক্সিট সুবিধাও দেওয়া হয়। বিভিন্ন খাতের খেলাপি ঋণ নবায়নে ২০১৯ সালের ১৬ মে বিশেষ নীতিমালা জারি করা হয়। এতে এক বছর গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরের জন্য নবায়নের সুযোগ দেওয়া হয়।

২০১৬ সালে প্রথমে রাতের আঁধারে ইসলামী ব্যাংক দখল হয়। এরপর থেকে একের পর এক বেসরকারি ব্যাংক দখল হতে শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ১০টি ব্যাংক ও একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান দখল করা হয়। এরপর এগুলোতে শুরু হয় নজিরবিহীন লুটপাট। কেন্দ্রীয় ব্যাংক দখল জেনেও এগুলোর বৈধতা দেয়। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের নির্দেশেই ব্যাংক দখল হয়েছে।

ফজলে কবিরের সময়ই খেলাপি ঋণ প্রথম লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। তার যোগদানের সময় ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৫৯ হাজার ৪১১ কোটি টাকা। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ২ হাজার ৪৫০ কোটি টাকায়। ২০২২ সালের জুনে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়ায় এক লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। তার সময়ে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৫ হাজার ৮৪৭ কোটি টাকা।

টাকা ছাপানোর হিড়িক রউফের সময়

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর হিসাবে ২০২২ সালের ১২ জুলাই নিয়োগ পান আব্দুর রউফ তালুকদার। আওয়ামী লীগের শাসনামলের শেষ গভর্নর ছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়ে তিনি নানা প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন। সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে-ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা ফেরানো, তারল্য সংকটের সমাধান করা এবং খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা। কিন্তু পরিস্থিতি হয় উলটা। খেলাপি ঋণ কমেনি, বরং তা বেড়ে রেকর্ড হয়েছে। তারল্য সংকট বেড়েছে। ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা না ফিরে বরং ব্যাংক দখল ও ডাকাতি হয়েছে। আর এ সুযোগ করে দিয়েছেন স্বয়ং গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। এজন্য তিনি ব্যাংকগুলোর প্রচলিত নীতিমালা শিথিল করে লুটপাটের সুযোগ করে দেন। এতেই তিনি ক্ষান্ত হননি। লুটপাটের কারণে দুর্বল হওয়া ব্যাংকগুলোয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে টাকা ছাপিয়ে বেপরোয়াভাবে ঋণ দেওয়া হয়েছে। সরকারকে লাগামহীনভাবে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দেওয়ার কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তার আমলেই সবচেয়ে বেশি ছাপানো টাকা বাজারে ছাড়া হয়েছে। নিজে উদ্যোগী হয়ে একটি ব্যাংককে দখলদারের হাতে তুলে দেওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। এছাড়া সুদের হার ও ডলারের দাম নির্ধারণে ঘনঘন নীতির বদল করে অর্থনীতিকে অস্থিতিশীল করে তুলেছিলেন। অর্থনীতি ও ব্যাংক খাতে স্থিতিশীলতা রক্ষায় তার দেওয়া কোনো প্রতিশ্রুতিই বাস্তবায়ন হয়নি। ব্যাংক লুটেরাদের প্রতি গভর্নরের নৈতিক, নীতিগত ও প্রত্যক্ষ সমর্থন এ খাতে বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ। আব্দুর রউফ আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রকাশ্যে আসেননি। তার অনৈতিক কর্মকাণ্ডের কারণে তিনি আর কেন্দ্রীয় ব্যাংকে আসার সাহস পাননি। আড়ালে থেকেই পদত্যাগ করেছেন।

তার দায়িত্ব নেওয়ার মাত্র ৬ দিনের মধ্যে ১৮ জুলাই একটি সার্কুলার জারি করে খেলাপি ঋণ নবায়নের ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে খেলাপি ঋণ দীর্ঘমেয়াদে নবায়নের পাশাপাশি ডাউন পেমেন্টর হারও কমানো হয়। আগে যেখানে সর্বনিু ১০ শতাংশ ডাউন পেমেন্ট নেওয়া হতো, ওই নীতিমালায় আড়াই থেকে সর্বোচ্চ ৭ শতাংশে নেওয়ার বিধান করা হয়। বড় অঙ্কের খেলাপিদের ডাউন পেমেন্টর হারও কামনো হয়।

আগে খেলাপি ঋণ তিন দফা নবায়ন করা যেত। ওই সার্কুলারের মাধ্যমে চার দফা নবায়ন করার বিধান করা হয়। কিন্তু এ বিধান পালিত হয়নি।

২০২২ সালের ১৬ নভেম্বর জারি করা এক সার্কুলারে বলা হয়, ব্যাংকগুলো ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে তহবিল ব্যবস্থাপনার ব্যয়ের সমান অর্থের চেয়ে বেশি অর্থ মওকুফ করতে পারবে। এর মাধ্যমে ব্যাংকের খরচের টাকা না তুলেই বাড়তি সুদ মওকুফের সুযোগ দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের আয় কমেছে, দুর্বল হয়েছে ব্যাংক। লাভবান হয়েছেন প্রভাবশালী গ্রাহক।

ব্যাংকগুলোর দুর্বলতার মধ্যেও ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রেও বড় গ্রাহকদের একাধিকবার বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। এতেও ব্যাংক দুর্বল হয়েছে, লাভবান হয়েছেন প্রভাবশালী গ্রাহক।

আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে ব্যাংক খাতে সব সূচকে অবনতি ঘটেছে। লুটপাট হয়েছে বেপরোয়া গতিতে। টাকা পাচার ও খেলাপি ঋণ বেড়েছে। তারল্য সংকট প্রকট হয়েছে। ডলার সংকটে পুরো অর্থনীতি নাকাল হয়েছে। কমেছে টাকার মান। বেড়েছে মূল্যস্ফীতি।

রউফ যোগ দেওয়ার আগে ২০২২ সালের ৩০ জুন খেলাপি ঋণ ছিল ১ লাখ ২৫ হাজার ২৫৮ কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ৮৫ হাজার কোটি টাকায়।

আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়ে ব্যাংক খাতে ঋণের নামে এমনভাবে লুটপাটের সুযোগ দেওয়া হয়েছে যে ওই সময়ে বিতরণ করা ঋণের সিংহভাগই পাচার হয়ে গেছে।

সুদের হার নিরূপণের ক্ষেত্রেও রউফ পরিস্থিতিকে বিশৃঙ্খল করে গেছেন। ২০২৩ সালের জুলাইয়ে স্মার্ট রেট চালু করা হয়। এতে সুদের হার মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়। ২০২৪ সালের ৮ মে স্মার্ট রেট প্রত্যাহার করে বাজারভিত্তিক সুদহার চালু করা হয়। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। একই অবস্থা করে যান ডলারের বাজারে।

অর্থনৈতিক সংকটে দক্ষ ব্যবস্থাপনায় ব্যর্থ হয়ে সরকারকে নজিরবিহীনভাবে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দেওয়া হয়। ২০২২ সালের ৩০ জুন ছাপানো টাকায় সরকারের ঋণের স্থিতি ছিল ৬০ হাজার কোটি টাকা। গত ৩১ জুলাই স্থিতি বেড়ে ১ লাখ ৫৭ হাজার কোটি টাকা হয়। আলোচ্য সময়ে টাকা ছাপিয়ে ঋণ দেওয়া হয়েছে ৯৭ হাজার কোটি টাকা।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম