নাহিদের পদত্যাগের গুঞ্জন
নেতৃত্বে থাকছেন নাহিদ-আখতার, দল ঘোষণা বুধবার
আমি পদত্যাগ করিনি। যে খবর ছড়িয়েছে, সেটা গুজব -নাহিদ ইসলাম * গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকছেন হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় এবং ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার পদ থেকে মো. নাহিদ ইসলাম পদত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন উঠেছে। তবে নিজের পদত্যাগের বিষয়টি গুজব বলে জানিয়েছেন উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, আমি পদত্যাগ করিনি। পদত্যাগের যে খবর ছড়িয়েছে, সেটা গুজব। এর আগে রোববার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তিনি। তার এ সাক্ষাতের পর উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগের গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। সূত্র জানায়, উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক সভায় উপদেষ্টার পদ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগ করবেন নাহিদ ইসলাম।
এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নতুন দলের আত্মপ্রকাশ হতে পরে বুধবার। সম্ভাব্য এ তারিখ সামনে রেখে প্রস্তুতি নিচ্ছেন দুটি সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। এই দলের আহ্বায়ক হিসাবে উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং সদস্য সচিব হিসাবে আখতার হোসেনের নাম এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত বলে সূত্রে জানা গেছে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্বদানকারী আলোচিত মুখ হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলম নতুন দলের গুরুত্বপূর্ণ পদেই থাকছেন। হাসনাত আবদুল্লাহকে দলের মুখপাত্র এবং সারজিস আলমকে মুখ্য সংগঠক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক হিসাবে আলী আহসান জোনায়েদ ও যুগ্ম সদস্য সচিব হিসাবে নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর নাম চূড়ান্ত বলে জানা গেছে। মূলত জাতীয় নাগরিক কমিটিতে যুক্ত ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতাদের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে আলী আহসান জোনায়েদকে ওই পদে রাখা হচ্ছে। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি।
এছাড়াও নতুন দলে গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকবেন জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, তাসনিম জারা ও আরিফুল ইসলাম আদীব এবং যুগ্ম সদস্য সচিব অনিক রায়। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক আবদুল হান্নান মাসউদকেও দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে দেখা যেতে পারে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সামনে থেকে ভূমিকা রাখা ছাত্রনেতারা প্রায় সবাই নতুন দলে থাকতে চান। নিজেদের জায়গা নিশ্চিত করতে ব্যাপক সক্রিয় তারা। তবে চাহিদার তুলনায় পদসংখ্যা কম থাকায় নেতৃত্ব নির্বাচনে হিমশিম খাচ্ছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির শীর্ষ নেতারা।
ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দলে অনেক চমক থাকছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সরকারের সাবেক আমলা ও সামরিক বাহিনীর সাবেক কর্মকর্তারা যোগ দেবেন নতুন এ দলে। তারা ইতোমধ্যে ছাত্রনেতাদের প্রস্তাবও দিয়েছেন। নতুন দলকে সমর্থন জানিয়ে শনিবার বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে মতবিনিময় করেন সামরিক বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে নতুন রাজনৈতিক দলের আত্মপ্রকাশ ঘটাতে চান তরুণরা। রাজনৈতিক শক্তিমত্তার জানান দিতে আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে ৫ লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতির টার্গেট নিয়েছে কর্মসূচি বাস্তবায়নবিষয়ক উপকমিটি। ওইদিন সারা দেশ থেকে ঢাকায় আসবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির প্রতিনিধিরা।
জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব যুগান্তরকে বলেন, দলের আত্মপ্রকাশের তারিখ এখনো চূড়ান্ত না হলেও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির বৈঠকে সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২৬ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) টার্গেট করে এগিয়ে যাচ্ছি। এটা দু-একদিন পিছিয়ে যেতে পারে।