Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

মরুরাজ্যে পাক ভারত ক্রিকেট মহাঝড়

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সবচেয়ে উত্তেজক ম্যাচ আজ

Icon

পারভেজ আলম চৌধুরী

প্রকাশ: ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

মরুরাজ্যে পাক ভারত ক্রিকেট মহাঝড়

ছবি: সংগৃহীত

দুবাই সাজুগুজু করা এক চিরযৌবনা শহর। সব কিছু যেন ফ্রেমে বাঁধিয়ে রাখা ছবির মতো। সাজানো-গোছানো। দেখার মতো অনেক কিছুই আছে। বুর্জ খলিফা, দুবাই মিরাকল গার্ডেন, সাফারি পার্ক, গ্লোবাল ভিলেজ-আরও কত কী! কিন্তু পারস্য উপসাগরের সাজগোজ দেখার সময় কোথায় আজ ক্রিকেটপ্রেমীদের। বিশেষ করে ভারত-পাকিস্তানের সমর্থকদের। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সবচেয়ে উত্তেজক ম্যাচে আজ দুবাই কাঁপবে। আর সেই দ্বৈরথ চাক্ষুষ করতে এই গ্রহের তাবৎ ক্রিকেটপ্রেমী ঝাঁপাবে টিভির পর্দায়। আজ দুবাই হবে বিশ্বের ক্রিকেট-রাজধানী। এ তো সবারই জানা যে, আয়োজক পাকিস্তান হলেও তাদের দুবাইয়ে গিয়ে খেলতে হচ্ছে ভারতের কারণে। ‘টাকা দাও দুবাই যামু’ একসময় বিটিভির জনপ্রিয় নাটকের বহুল চর্চিত এই সংলাপের মতো ভারতও এবার ঠিক করেছে, করাচি-লাহোর নয়, ‘দুবাই যামু’। পাকিস্তানকেও দুবাই যেতে হয়েছে তাদের বিমানবাহিনীর একটি বিশেষ বিমানে। এসবই হাইব্রিড মডেলের ফসল।

এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ভারত ও পাকিস্তান শুরু করেছে যথাক্রমে জিতে এবং হেরে। পাকিস্তানের জন্য এই ম্যাচ তাই ‘ডু অর ডাই’। সেদেশের সাবেক ক্রিকেটার বাসিত আলীর কথায়, ‘ফাইনাল’। বাসিত মানছেন, ভারত এই ম্যাচে ফেভারিট। পাকিস্তান জিতলে সেটি হবে অঘটন। কেননা, সাম্প্রতিককালে রিজওয়ান-বাবরদের খেলায় মরচে ধরেছে। পাকিস্তান ৬০ রানে নিউজিল্যান্ডের কাছে হেরেছে নিজেদের প্রথম ম্যাচে। ভারত ছয় উইকেটে হারিয়েছে বাংলাদেশকে। এ-গ্রুপে দুই পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রয়েছে নিউজিল্যান্ড। দুইয়ে ভারত। শ্রেয়তর রানরেটের (+১.২০০) দরুন কিউইরা ভারতের (+০.৪০৮) চেয়ে এগিয়ে। চার দলের গ্রুপে সবার নিচে স্বাগতিক পাকিস্তান। তাদের উপরে বাংলাদেশ। দুদলেরই কোনো পয়েন্ট নেই। বাংলাদেশের নেট রানরেট (-০.৪০৮) পাকিস্তানের (-১.২০০) চেয়ে ভালো।

সুতরাং, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে, এই ব্লকবাস্টার ম্যাচে যত চাপ সব বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তানের ওপর। হারলে নিজেদের ঘরেই প্রায় ‘মেহমান’ হয়ে যাবে তারা। জিতলে দুবাইয়ের সেমিফাইনালে এক পা বাড়িয়ে রাখবে ভারত। বাসিত আলীর মতো শহীদ আফ্রিদিও নিজেদের সম্ভাবনা তেমন দেখছেন না। সাবেক অলরাউন্ডার আফ্রিদির কথায়, ‘একা হাতে যে ম্যাচ জেতায়, এমন কোনো খেলোয়াড় এখন পাকিস্তান দলে নেই।’

পাকিস্তানের বোলিং গ্রেট ওয়াকার ইউনুস মনে করেন, ‘দুবাইয়ের উইকেট ও কন্ডিশন ভারতকে সুবিধা দেবে। ওদের দলে পাঁচজন স্পিনার। পাকিস্তান দলে মাত্র একজন বিশেষজ্ঞ স্পিনার।’ ভারতের চেতেশ্বর পূজারাও নিজেদের এগিয়ে রাখছেন। তবে উইকেট মন্থর ও স্পিনবান্ধব হওয়ায় পাকিস্তানের সুযোগ বেড়েছে বলে তার ধারণা। পরিসংখ্যানও ভারতের পক্ষে। শেষ ছয়টি ওডিআই’র পাঁচটিই জিতেছে ভারত। একটির ফল হয়নি। ভারতের বিপক্ষে এই ফরম্যাটে পাকিস্তান শেষবার জয় পেয়েছিল ২০১৭ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে। ওয়ানডেতে ১৩৫ ম্যাচে পাকিস্তানের জয় ৭৩টি। ভারত জিতেছে ৫৭টি ম্যাচ। বাকি পাঁচটি ম্যাচের ফল হয়নি। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুদলের পাঁচবারের সাক্ষাতে তিনটি জয় পাকিস্তানের, দুটি ভারতের।

এদিকে কাল ম্যাচ-পূর্ব সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তানকে নিয়ে শুবমান গিল বলেছেন, ‘ভারত-পাকিস্তান অনেক বড় ম্যাচ। ফাইনাল হলে তো আরও বড়। আমরা ভালো খেলছি। পাকিস্তানকে খাটো করে দেখার কোনো অবকাশ নেই।’ দুবাইয়ের মাঠে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে একটু হলেও সমস্যায় পড়েছিল ভারত। তাই পাকিস্তান ম্যাচে টসে জিতলে হয়তো আগে ব্যাট করতে পারে ভারত। এ প্রসঙ্গে শুবমান বলেন, ‘আসল কাজ হলো পরিস্থিতি বোঝা। প্রথম ম্যাচে আগে ফিল্ডিং করতে পেরে সুবিধা হয়েছে। পিচ কেমন আচরণ করছে সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। ব্যাটার হিসাবে পরিস্থিতি বোঝা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা আগ্রাসী ক্রিকেট খেলতে চাই। তবে পিচের ওপর সব নির্ভর করবে। এই উইকেটে ৩০০-৩২৫ রান ভালো স্কোর।’

বাংলাদেশকে হারাতে বড় ভূমিকা ছিল শুবমানের শতকের। ভারতীয় ওপেনার আপ্লুত শতরান করতে পেরে। বলেছেন, ‘আমার খেলা অন্যতম তৃপ্তিদায়ক ইনিংস। অনেক চাপ ছিল। হেরে গেলে পাকিস্তান ম্যাচ মরণ-বাঁচন হয়ে দাঁড়াত। মাঝের দিকে আমাদের ওপর চাপ ছিল। তবে লক্ষ্য বড় না হওয়ায় সমস্যা হয়নি। আমি প্রতি ম্যাচেই রান করতে চাই।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম