Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

হাসিনাকে থামাতে ভারতের দূতকে তলব

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হাসিনাকে থামাতে ভারতের দূতকে তলব

দিল্লিতে বসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে বাংলাদেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির লক্ষ্যে শেখ হাসিনা ক্রমাগত মিথ্যা, বানোয়াট মন্তব্য ও বিবৃতি দেওয়ায় ভারতের কাছে প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার ঢাকায় ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে তলব করে তার হাতে একটি প্রতিবাদপত্র তুলে দেয়। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে। ভারত থেকে শেখ হাসিনার বক্তব্য-বিবৃতির কারণে বুধবার ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ি ভাঙচুর ও বৃহস্পতিবার দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটছে বলে দাবি করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, শেখ হাসিনাকে প্রতিহত করার বিষয়ে ভারতকে আমরা লিখিতভাবে অনুরোধ করেছি যে তিনি যাতে এ ধরনের বক্তব্য, বিবৃতি না দেন। এটা বাংলাদেশের বিপক্ষে যাচ্ছে। আমরা এখনো এটার কোনো জবাব পাইনি। গত কয়েক দিনের ঘটনাপ্রবাহের কারণে আজ (বৃহস্পতিবার) আমরা তাদের আবার প্রতিবাদলিপি দিয়েছি। ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারকে ডেকে প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে, যাতে তাকে (শেখ হাসিনা) প্রতিহত করা হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ঢাকায় ভারতের ভারপ্রাপ্ত হাইকমিশনারের কাছে হস্তান্তর করা প্রতিবাদ নোটের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ সরকারের গভীর উদ্বেগ, হতাশা এবং গুরুতর আপত্তির কথা তুলে ধরেছে। কারণ, এ ধরনের বক্তব্য (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের জনগণের অনুভূতিতে আঘাত করছে। পাশাপাশি তার এ ধরনের কর্মকাণ্ড বাংলাদেশের প্রতি একটি শত্রুতামূলক কর্মকাণ্ড হিসাবে বিবেচিত এবং দুদেশের মধ্যে একটি সুস্থ সম্পর্ক স্থাপনের প্রচেষ্টার জন্য সহায়ক নয় বলেও প্রতিবাদলিপিতে জোর দেওয়া হয়।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারত সরকারকে অবিলম্বে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ করেছে। ভারতে থাকাকালীন অবস্থায় তাকে (শেখ হাসিনা) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এবং অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে এ ধরনের মিথ্যা, বানোয়াট এবং উসকানিমূলক বিবৃতি দেওয়া থেকে বিরত রাখতে ভারতকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। গত ৬ মাসে অন্তর্বর্তী সরকার আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা, সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যাসহ নানা ঘটনায় ঢাকায় ভারতীয় কূটনীতিকদের অন্তত চারবার তলব করেছে।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, এ ঘটনাকে (ধানমন্ডি-৩২ এর ঘটনা) ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে দেখব। তারপরও এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করার চেষ্টা করতে হবে আমাদের। একটি ঘটনা ঘটে গেছে এবং পরবর্তীকালে এ ধরনের ঘটনা সব সময় ঘটবে, এমন কোনো কথা নয়। তবে কী পদক্ষেপ নেবে সরকার সেটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয়। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ভালো বলতে পারবেন বলে তিনি জানান। বিদেশিরা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কী বলবেন, সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, প্রথম কয়েক দিনের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির পর আস্তে আস্তে সবকিছু স্থিতিশীল হয়ে আসছিল। একটি জিনিস খেয়াল করবেন, এ ধরনের ঘটনা তখনো ঘটতে পারত, ঘটেনি। কিন্তু এখনকার অবস্থান হচ্ছে, শেখ হাসিনা ভারতে থেকে যেসব বক্তৃতা-বিবৃতি দিচ্ছেন, সেটি ছাত্র-জনতা ভালোভাবে নেননি। তিনি (হাসিনা) অবিরাম উসকে দিচ্ছেন। তারই ফলে এ ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। তিনি এ ধরনের ঘটনা থেকে যদি বিরত থাকতেন, তাহলে এরকম ঘটনা হয়তো ঘটত না।

অপর এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আদানির সঙ্গে চুক্তি একটি খারাপ চুক্তি। এটি অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, চুক্তিটা খুব ভালো হয়নি এবং যারা চুক্তিটি নিয়ে আলোচনা করেছে, তারা বাংলাদেশের স্বার্থ ঠিকমতো রক্ষা করতে পারেনি। আদানির চুক্তির জন্য যে পরিমাণ পয়সা আমাদের দিতে হবে এবং যে পরিমাণ বিদ্যুৎ আমরা নিতে পারি বা না পারি; সবক্ষেত্রে বাংলাদেশের স্বার্থকে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে বলে আমার মনে হয়। এক্ষেত্রে সরকারের কিছু করতে হলে আদানি গ্রুপের সঙ্গে আলোচনা করেই ঠিক করতে হবে বলে তিনি জানান। ইউএসএআইডির সহায়তা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ইউএসএআইডি সহায়তা বন্ধ বাংলাদেশকেন্দ্রিক নয়। যুক্তরাষ্ট্র যদি এ প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়, তবে আমাদের বা অন্য কোনো দেশের করণীয় তেমন কিছু নেই। সেক্ষেত্রে আমাদের খাপ খাইয়ে নিতে হবে। রোহিঙ্গাদের জন্য মার্কিন সহায়তার বিষয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত এটি চলমান আছে, তবে কতদিন চলবে সেটি জানা নেই। যদি এটি বন্ধ হয়ে যায়, তবে অন্য দেশগুলোকে অনুরোধ করতে হবে সহায়তা বৃদ্ধির জন্য।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম