Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকেই কার্যকর

ঢাবির অধীনে থাকছে না সাত কলেজ

ঢাবির প্রোভিসি, এসি-ওসি’র পদত্যাগের দাবিতে ফের আলটিমেটাম * বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন ও ঢাবি প্রতিনিধি

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঢাবির অধীনে থাকছে না সাত কলেজ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) থেকে অধিভুক্ত সাত কলেজকে পৃথক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আসন্ন শিক্ষাবর্ষ থেকে সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ভর্তি করা হবে না। পাশাপাশি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনার সুপারিশ করা হয়েছে। সোমবার দুপুরে সাত কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে জরুরি সভা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। সেখানেই এসব সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে লিখিত বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ এসব কথা জানান। 

জানা গেছে, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি শিগগিরই সাত কলেজ নিয়ে একটি রূপরেখা দেবেন। সে অনুযায়ী সাত কলেজ নিয়ে একটি বডি হবে। নতুন এ বডির অধীনে চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। 

তবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুনের পদত্যাগসহ দুই দফা দাবিতে সরকার ও কর্তৃপক্ষকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন ৭ কলেজ শিক্ষার্থীরা। তারা বলেন, শিক্ষার্থীদের ওপর ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় জড়িত নিউমার্কেট জোনের এসি ও নিউমার্কেট থানার ওসিসহ অন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্তসাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় সাত কলেজের সব ধরনের শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। একই সঙ্গে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব দাবি মেনে নেওয়া না হলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও ও সাত কলেজের সামনে দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো যানবাহন চলতে দেওয়া হবে না বলে ঘোষণা দেন তারা। সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঢাকা কলেজের শহিদ মিনারের সামনে সংবাদ সম্মেলনে এ আলটিমেটাম দেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এর আগে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় অংশ নেন শিক্ষার্থীরা।

সন্ধ্যায় সাত কলেজের শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী মুঈনুল ইসলাম বলেন, একটা শান্তিপূর্ণ দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করে। ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের একজন শিক্ষার্থীও তোরণ পার হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সম্পূর্ণ পরিকল্পিতভাবে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালিয়েছে। আমরা এই সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এই বিষয়টির শান্তিপূর্ণ সমাধানের লক্ষ্যে সকালে সংবাদ সম্মেলন করে আমরা ছয় দাবি উপস্থাপন করেছি। সেখানে একটি দাবি ছিল অধিভুক্তি বাতিল করার যৌক্তিক দাবি আমলে নেওয়া। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নেওয়ায় আমরা তাদের সাধুবাদ জানাচ্ছি। এখনো আরও পাঁচ দফা দাবি বাকি আছে এ কথা উল্লেখ করে শিক্ষার্থীদের এই প্রতিনিধি বলেন, এই দাবিগুলো মেনে নেওয়ার বিষয়ে এখনো কর্তৃপক্ষের দিক থেকে কোনো প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি নিয়ে আসার সম্পূর্ণ দায়ভার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (মামুন আহমেদ)। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে তার পদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। এই দাবি যদি মেনে না নেওয়া হয়, তাহলে নিউমার্কেট থানা ঘেরাও করা হবে।

মুঈনুল আরও বলেন, সেই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি উপ-উপাচার্যের বিরুদ্ধে আমাদের দাবি মেনে না নেয় ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা না করে, তাহলে ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের সামনে দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসসহ কোনো যানবাহন চলবে না।

এদিকে বৈঠকে সিদ্ধান্তের বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজ সম্মানজনকভাবে পৃথক করা হবে। অধিভুক্ত সরকারি সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা সংক্রান্ত পূর্ববর্তী সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে এক বছর এগিয়ে এনে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ভর্তি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ২৯ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সভায় জোর সুপারিশ করা হয়। ২০২৪-২০২৫ শিক্ষাবর্ষ থেকে আসন সংখ্যা ও ভর্তি ফি নির্ধারণসহ যাবতীয় বিষয়ে মন্ত্রণালয় গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। যেসব শিক্ষার্থী বর্তমানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান শিক্ষা কার্যক্রমের অধীনে আছে, তাদের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়িত্বশীল থাকবে, যাতে তাদের শিক্ষাজীবন কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। শিক্ষা কার্যক্রম সচল রাখার জন্য সভা থেকে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ ও নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়। বৈঠক শেষে উপাচার্যের কার্যালয়সংলগ্ন অধ্যাপক আবদুল মতিন চৌধুরী ভার্চুয়াল শ্রেণিকক্ষে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য মামুন আহমেদ ও সায়মা হক বিদিশা, কোষাধ্যক্ষ জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী, প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ প্রমুখ। 

বিষয়টি নিয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাত কলেজে নতুন কোনো শিক্ষার্থী ভর্তি নেবে না। ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজের নেতৃত্বে যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়েছে, তারা শিগগিরই সাত কলেজ নিয়ে একটি রূপরেখা দেবেন। তাদের রূপরেখা অনুযায়ী সাত কলেজ নিয়ে একটি বডি হবে। নতুন এ বডির অধীনে চলতি শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

এর আগের দিন রোববার ভর্তি পরীক্ষায় অযৌক্তিক কোটা পদ্ধতি বাতিলসহ পাঁচ দফা দাবির অগ্রগতি জানতে বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদের সঙ্গে কথা বলতে যান সাত কলেজের একদল শিক্ষার্থী। এ সময় তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ তোলেন। এ সময়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাওয়া যায়। এতে দেখা যায়, অধ্যাপক মামুন আহমেদ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে উত্তেজিত হয়ে কথা বলছেন। শিক্ষকের এমন আচরণে ক্ষুব্ধ হন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। প্রতিবাদে তারা সন্ধ্যার দিকে ঢাকা কলেজের সামনে জড়ো হন। পরে অশোভন আচরণের অভিযোগ তুলে অধ্যাপক মামুনকে প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে সায়েন্স ল্যাব, টেকনিক্যাল মোড় ও তাঁতীবাজার সড়ক অবরোধ করেন। রাত ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্যের (শিক্ষা) বাসভবন ঘেরাওয়ের ঘোষণা দিয়ে সাইন্স ল্যাব মোড় থেকে মিছিল নিয়ে ঢাকা কলেজে প্রবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তারা ঘোষণা দেন, এক ঘণ্টার মধ্যে উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) ক্ষমা না চাইলে তারা ঢাবিতে প্রবেশ করবেন। এদিকে ঢাবি শিক্ষার্থীরা আগে থেকেই বিভিন্ন হল থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যার এ এফ রহমান হলের সামনে অবস্থান নেন। পরে সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে রওয়ানা হলে তাদের সঙ্গে যোগ দেন ঢাকা কলেজের বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরাও। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশমুখ নীলক্ষেতসংলগ্ন মুক্তি ও গণতন্ত্র তোরণের দিকে এলে রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দেন। এতে শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেতের দিকে চলে যান। শিক্ষার্থীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পুলিশ মাঝখানে শক্ত অবস্থান নিয়ে দুপক্ষকেই শান্ত করার চেষ্টা চালায়। 

পরে রাত ১২টা ৪০ মিনিটে উভয়পক্ষের শিক্ষার্থীদের থামাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ ঘটনাস্থলে যান। তিনি নীলক্ষেত মোড় থেকে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এরপর হাসনাত সবাইকে শান্ত করার চেষ্টা করলে উভয়পক্ষের তোপের মুখে পড়েন। পরে তিনি ক্যাম্পাসের দিকে চলে যান। অন্যদিকে ইডেন মহিলা কলেজের শিক্ষার্থীরা কলেজের সামনে এসে অবস্থান নেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়। একপর্যায়ে নীলক্ষেত ও নিউমার্কেট এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে আর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিউমার্কেট এলাকায় শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান নেন। পরে রাত পৌনে ৩টার দিকে অবস্থান ছেড়ে নিজেদের ক্যাম্পাসে ফিরে যান তারা। রাত ৩টার দিকে সাত কলেজের পক্ষ থেকে নতুন কর্মসূচি (সড়ক অবরোধ) ঘোষণা করা হয়। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনেরও ঘোষণা দেন তারা। অন্যদিকে সোমবার দুপুরে ছয় দফা দাবি জানান অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা। এগুলো হলো : ১. ঢাকা কলেজসহ সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সংঘাতের দায় নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মামুন আহমেদকে পদত্যাগ করতে হবে। ২. ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী রাকিবকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলাসহ ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের ওপর নিউমার্কেট থানা-পুলিশের ন্যক্কারজনক হামলার ঘটনায় এসি-ওসিসহ জড়িত পুলিশ কর্মকর্তাদের প্রত্যাহার করে তদন্ত সাপেক্ষে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ৩. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কর্তৃক ইডেন কলেজ, বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজের নারী শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও অশালীন অঙ্গভঙ্গির সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। ৪. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সাত কলেজের একাডেমিক ও প্রশাসনিক সম্পর্কের চূড়ান্ত অবসান ঘটিয়ে ৪ ঘণ্টার মধ্যে বাতিল করে শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে। ৫. উদ্ভূত পরিস্থিতি সমাধানের জন্য প্রধান উপদেষ্টা, শিক্ষা উপদেষ্টা, উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম, ইউজিসির সদস্য ও ঢাবির উপাচার্যের সমন্বয়ে সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি টিমের সঙ্গে তাৎক্ষণিক উচ্চ পর্যায়ের মিটিংয়ের মাধ্যমে এই ঘটনার সমাধান করতে হবে। ৬. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংশ্লিষ্ট এলাকায় সিটি করপোরেশনের রাস্তা জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দিতে হবে। এদিকে দফায় দফায় ধাওয়া-পালটাধাওয়া ও সংঘর্ষে অন্তত ৪০ জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন ২৫ জন। তাদের মধ্যে তিনজন এখনো ঢামেকে ভর্তি রয়েছেন। তারা হলেন-উজ্জ্বল (৩২), সাইদ মুন্সি (২৪) ও রাকিব (২২)। ঢামেকে ভর্তি তিনজনের মধ্যে উজ্জ্বল পথচারী ও সাঈদ মুন্সি এবং তারেক ঢাকা কলেজের ছাত্র বলে জানা গেছে। আর বাকিরা বিভিন্ন প্রাইভেট মেডিকেল ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। 

এ ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, সংঘর্ষের ঘটনায় ঢামেক হাসপাতালে ভর্তি তিনজনের চিকিৎসা চলছে। তাদের অবস্থা শঙ্কামুক্ত। 

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক বলেন, রাতে সংঘর্ষের ঘটনায় ভোররাত পর্যন্ত একে একে ২৫ জন আহত ঢামেকের জরুরি বিভাগে আসেন। সেখানে তাদের চিকিৎসা দেওয়া হয়। ভর্তি তিনজনের মাথায় আঘাত রয়েছে। এদিকে ধানমন্ডির পপুলার হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, আহতদের সাতজন সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঢাকা কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের কতজন আহত হয়েছেন, তার সঠিক পরিসংখ্যান নেই। তবে পপুলার হাসপাতালে সাতজন চিকিৎসা নিয়েছেন। 

সোমবার দুপুরে ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলন থেকে ছয় দফা দাবি জানান তারা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ঢাকা কলেজ শাখার সদস্য সচিব সজিব উদ্দীন। তিনি ছয় দফা দাবি তুলে ধরেন। এরপর অনুষ্ঠিত বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় ঢাবির অধীনে থাকছে না সাত কলেজ।

মিরপুরে সড়ক অবরোধ : ঢাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ধাওয়া-পালটাধাওয়া ও সংঘর্ষের জেরে রোববার রাত ৩টায় সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে অবরোধ কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দেন। এরই অংশ হিসাবে সোমবার দুপুর সাড়ে ১১টার দিকে মিরপুর বাঙলা কলেজের সামনের সড়ক অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। তারা দাবি আদায়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। অবরোধের ফলে বাঙলা কলেজের আশপাশের বিভিন্ন সড়কে যান চলাচল বন্ধ হলে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। যাত্রীরা পড়েন চরম ভোগান্তিতে। পরে দুপুর সাড়ে ১২টায় তারা সড়ক ছাড়েন।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম