Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন শেখ হাসিনা: চিফ প্রসিকিউটর

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন শেখ হাসিনা: চিফ প্রসিকিউটর

ফাইল ছবি

জুলাই-আগস্টে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার প্রধান আসামি শেখ হাসিনার হেট স্পিচ (বিদ্বেষমূলক বক্তব্য) গণমাধ্যমে প্রচার না করতে আহ্বান জানিয়েছেন প্রসিকিউশন। চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেখছি শেখ হাসিনা ভারতে বসে হেট স্পিচ দিয়ে যাচ্ছেন। হুমকি-ধমকি দিচ্ছেন। সাক্ষীদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য তিনি এসব করছেন।’

এদিকে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের আবেদন এদিন খারিজ করে দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, ‘তার আবেদনটি অপরিপক্ব। কারণ, এ মামলার তদন্ত এখনো চলমান। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জের আবেদন খারিজ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এর ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারে কোনো বাধা নেই।’ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এ আদেশ দেন।

জিয়াউল আহসানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী ও নাজনীন নাহার। আর প্রসিকিউশন পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

আদেশের পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেফতার সাবেক সেনা কর্মকর্তা ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক জিয়াউল আহসানের পক্ষ থেকে আবেদনটি করা হয়। আবেদনে ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার ও ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে জারি করা অধ্যাদেশ চ্যালেঞ্জ করা হয়। আমরা বলেছি, এটা করলে সাংবিধানিক আদালত তথা হাইকোর্টে করতে হবে। এটা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল তথা এই ফৌজদারি কোর্টে চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ নেই। এছাড়া তারা বর্তমান সরকারের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেছেন। সে ক্ষেত্রেও আমরা বলেছি এটি এখানে করার সুযোগ নেই। এছাড়া আমরা বলেছি যুদ্ধাপরাধ বা মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ যার বিরুদ্ধে থাকবে, তার কোনো মৌলিক অধিকার থাকবে না এবং তার বিচারের জন্য করা কোনো আইন যদি সংবিধানের কোনো অনুচ্ছেদের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণও হয়, সেটা চ্যালেঞ্জ করা যাবে না।

সাংবিধানিকভাবে এক্ষেত্রে সুরক্ষা দেওয়া আছে। এছাড়া ট্রাইব্যুনালের সংশোধিত আইনে গুমের বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে, যেটি তারা চ্যালেঞ্জ করেছেন। আমরা দেখিয়েছি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইনে এটি বিচারের সুযোগ আছে, সেটি আগে বা পরে যখনই হোক না কেন। সর্বোপরি মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করে আসামির খালাস চেয়ে তারা আবেদন করেছিলেন।

আমরা সে আবেদন সরাসরি খারিজের পাশাপাশি এ ধরনের আবেদন করায় তাদের জরিমানা করার আবেদন জানাই। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল উভয় পক্ষকে শুনে এ বিষয়ে আদেশ দেন। আদেশের আবেদনটি খারিজ করেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল বলেছেন, তার আবেদনটি অপরিপক্ব। কারণ, এ মামলার তদন্ত এখনো চলমান। একই সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জের আবেদন খারিজ করেছেন ট্রাইব্যুনাল। এর ফলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে বিচারে কোনো বাধা নেই।

তিনি বলেন, যে আইনে এই ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠিত; অর্থাৎ ১৯৭৩ সালের ক্রাইম ট্রাইব্যুনাল অ্যাক্ট, সেই আইনের কোনো বৈধতা বা সেই আইনের সংশোধন বৈধতা চ্যালেঞ্জ করার জায়গা এ ট্রাইব্যুনাল নয়। কোনো আইন যদি সংবিধানের সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয় বা চ্যালেঞ্জ করার প্রশ্ন আসে, তাহলে অবশ্যই তাকে সাংবিধানিক আদালতে যেতে হবে। তা না করে বিচারিক আদালতে এসেছেন, এটা কোনো সঠিক পদ্ধতি নয়।

তাজুল ইসলাম বলেন, ট্রাইব্যুনালের আদেশ রয়েছে শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার না করার। এরপরও দেখছি কিছু গণমাধ্যম শেখ হাসিনার হেট স্পিচ প্রচার করছে। আমরা অনুরোধ করব তার হেট স্পিচ প্রচার না করার। ট্রাইব্যুনালের বিচারকে প্রভাবিত ও বাধাগ্রস্ত করে শেখ হাসিনার এমন বক্তব্য যদি প্রচার অব্যাহত রাখা হয়, তাহলে আমরা পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবব।

আইনজীবী নাজনীন নাহার বলেন, ‘এ আদেশের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাব কি না, সেটা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকীর সঙ্গে আলাপ করে সিদ্ধান্ত নেব।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম