Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

এক্সে ইলন মাস্ক

দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত

Icon

যুগান্তর ডেস্ক

প্রকাশ: ১৭ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত

দুর্নীতির একাধিক অভিযোগে তদন্ত শুরুর পর সমালোচনার মুখে পদত্যাগ করেছেন যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি) ও বাংলাদেশে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাগনি টিউলিপ সিদ্দিক।

এবার তাকে দুর্নীতিবাজ হিসাবে উল্লেখ করেছেন মার্কিন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ মিত্র ও শীর্ষ ধনকুবের ইলন মাস্ক। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে স্থানীয় সময় বুধবার সন্ধ্যায় এই প্রতিক্রিয়া জানান ইলন। দুর্নীতির অভিযোগে আলোচিত টিউলিপ সিদ্দিকির পদত্যাগের বিষয়ে মারিও নাউফালের একটি টুইট বার্তাও তিনি শেয়ার করেছেন।

ইলন মাস্ক লিখেছেন, শিশু কল্যাণের দায়িত্বে থাকা লেবারমন্ত্রী দুর্নীতিবাজদের রক্ষা করছেন। তাদের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী আজ নিজেই দুর্নীতিগ্রস্ত। যদিও সিদ্দিক সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন, জানিয়েছেন সরকারকে ‘বিভ্রান্তি’ থেকে দূরে রাখতে তিনি পদত্যাগ করেছেন।

সমালোচকরা টিউলিপ ও তার পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত সম্পত্তির পাশাপাশি বাংলাদেশি অবকাঠামো প্রকল্পে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, অবিলম্বে সিদ্দিকের স্থলে এমা রেনল্ডসকে নিয়োগ করেছেন।

লন্ডনে উপহার পাওয়া দুটি ফ্ল্যাটের তথ্য গোপন করেছিলেন টিউলিপ। এ বিষয়ে দুই বছর আগে মিথ্যাও বলেছিলেন তিনি। তখন তিনি বলেছিলেন, ফ্ল্যাটগুলো তাকে তার বাবা-মা দিয়েছেন। তবে সম্প্রতি আসল তথ্য ফাঁস করে প্রতিবেদন করেছে লন্ডনের একাধিক পত্রিকা। এসব প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, টিউলিপকে ফ্ল্যাট দুটি দিয়েছেন তার খালা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন দল আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ দুই ব্যক্তি। তাদের মধ্যে একজন আবাসন ব্যবসায়ী আব্দুল মোতালিফ এবং অন্যজন মঈন গণি। এ খবর প্রকাশিত হওয়ার পর থেকে পদত্যাগের চাপে পড়েন হাসিনার ভাগনি। অবশেষে নানা জল্পনা-কল্পনার পর মঙ্গলবার মন্ত্রিত্ব ছাড়তে বাধ্য হন লেবার পার্টির এমপি টিউলিপ।

উত্তপ্ত পার্লামেন্টে প্রশ্নের মুখে প্রধানমন্ত্রী : যুক্তরাজ্যের ইকনোমিক মিনিস্টারের পদ থেকে টিউলিপ সিদ্দিক পদত্যাগের পরও সমালোচনা শেষ হয়নি। বুধবার উত্তপ্ত ব্রিটিশ পার্লামেন্টে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়েন প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এ সময় টিউলিপের বিরুদ্ধে করা বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের অভিযোগের কথাও উল্লেখ করেন বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান কেমি বেইডনক।

তিনি বলেন, ‘বাজারে যখন অস্থিরতা চলছে, তখন প্রধানমন্ত্রী সাবেক সিটি মিনিস্টারের বিরুদ্ধে ওঠা সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত থেকে তিনি এ বিষয়ে মনোযোগ হারিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী গতকাল (মঙ্গলবার) বলেন, তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু (টিউলিপ) পদত্যাগ করায় তিনি ব্যথিত। (তিনি এমন একজনের জন্য ব্যথিত) যিনি দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী ছিলেন, কিন্তু নিজেই দুর্নীতির জন্য তদন্তের অধীনে আছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের উপদেষ্টা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, সাবেক সিটি মিনিস্টার উপহার হিসাবে লন্ডনের যে ফ্ল্যাট পেয়েছিলেন সেটি হয়তো ডাকাতি করা অর্থের মাধ্যমে গড়া। তো প্রধানমন্ত্রী কী বাংলাদেশকে এই অভিযোগ তদন্তের জন্য আমাদের জাতীয় তদন্ত সংস্থার সহযোগিতার প্রস্তাব দেবেন? যেন জানা যায়, লন্ডনে যেসব সম্পদ চুরির অর্থে কেনা হয়েছে সেগুলো সঠিকভাবে তদন্ত করা যাবে।’

এমন প্রশ্নে কিছুটা উত্তপ্ত হয়ে ওঠা পার্লামেন্টে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্পিকার, সাবেক সিটি মিনিস্টার নিজেই তার বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানান। এতে জানা গেছে, তিনি মন্ত্রিত্বের কোনো নীতি ভঙ্গ করেননি। তার বিরুদ্ধে কোনো অসঙ্গতি পাওয়া যায়নি। তদন্তে তিনি পূর্ণ সহযোগিতা করেছেন। সোমবার তিনি নিজের বিরুদ্ধে তদন্তের আহ্বান জানান। আমি এক সপ্তাহ পর গতকাল এর প্রতিবেদন পেয়েছি।’

এরপর বিরোধী দল ও পুরোনো একটি তদন্তের কথা উল্লেখ করে স্টারমার বলেন, ‘কিন্তু এর (টিউলিপের পদত্যাগ) সঙ্গে ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রীর তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, তিনি মন্ত্রী থাকাকালে নীতি ভঙ্গ করেছিলেন। তার বিরুদ্ধে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছিল, সেটি পুরোপুরি উপেক্ষা করা হয়েছিল। উলটো স্বাধীন তদন্তকারীকেই পদত্যাগ করতে হয়েছিল। কারণ তিনি মনে করেছিলেন তার কথাকে আমলে নেওয়া হচ্ছে না। অথচ ছায়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী এখন নেতার দায়িত্ব পালন করছেন। কী বিপরীত! ব্রিটিশ জনগণকে ধন্যবাদ তারা সাবেক সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিয়েছে।’

এরপর বিরোধীদলীয় নেত্রী কেমি বেইডনক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে তদন্তে সহায়তার প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।’ কিয়ার স্টারমারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, ‘তিনি জেনেশুনে এক প্রতারককে যোগাযোগ সেক্রেটারি বানিয়েছিলেন। যিনি কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করেছেন। মাত্র কয়েকদিন আগেও দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ওপর তার পূর্ণ আস্থা ছিল। তিনিও লজ্জা নিয়ে গতকাল পদত্যাগ করেছেন।’

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম