হাসিনা পরিবারের নামে প্লট বরাদ্দ
ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে : দুদক
যুগান্তরে সংবাদ প্রকাশের পর

যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৬০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ১০ কাঠা আয়তনের মোট ছয়টি প্লট বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনিয়মের পর্যাপ্ত তথ্য এসেছে বলে দুদকের তরফে জানানো হয়।
বুধবার দুদকের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ বিষয়ে শিগগিরই আরও ভালো কিছু তথ্য আমরা জানাতে পারব। আমরা যেসব তথ্য-উপাত্ত পেয়েছি, সেগুলোতে স্পষ্টভাবেই ক্ষমতার অপব্যবহারের প্রমাণ পাওয়া গেছে।’ প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনাসহ তার পরিবারের ছয় সদস্যের নামে পূর্বাচলে প্লট বরাদ্দ নিয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করে যুগান্তর। এরপর ঘটনা অনুসন্ধানে মাঠে নামে দুদক। এছাড়া উচ্চ আদালত থেকেও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অনুসন্ধানের নির্দেশ দেওয়া হয়। পরে একাধিক ব্যক্তি হাসিনার প্লট কেলেঙ্কারি নিয়ে দুদকে লিখিত অভিযোগ জমা দেন।
অভিযোগে বলা হয়, সরকারের বিশেষ ক্ষমতাবলে শেখ হাসিনা ও পরিবারের সদস্যরা পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট নেন। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে এসব প্লট বরাদ্দের ঘটনা ঘটে। শেখ হাসিনা ছাড়াও প্লট গ্রহীতাদের মধ্যে রয়েছেন তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, বোনের ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ওরফে ববি ও মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পের ২৭ সেক্টরের কূটনৈতিক জোনের ২০০৩ নম্বর রোডে তাদের প্রত্যেককে ১০ কাঠা করে মোট ৬০ কাঠার ছয়টি প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। পরে বেআইনিভাবে সবগুলো প্লট একত্রিত করার সুযোগ দেয় রাজউক।
এ সংক্রান্ত অনুসন্ধানের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে বুধবার দুদক কর্মকর্তা আক্তার হোসেন বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের অনেক অগ্রগতি আছে। অনুসন্ধান দল এ নিয়ে অনেক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। আমাদের হাতে পর্যাপ্ত তথ্য এসেছে। অভিযোগটির বিষয়ে মামলা হওয়ার মতো কোনো তথ্য-প্রমাণ এসেছে কিনা-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনই মন্তব্য করা ঠিক হবে না। অনুসন্ধান দল প্রতিবেদন দাখিল করলে তখন আমরা জানাতে পারব।’
ছাত্র-জনতার রক্তাক্ত অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে হাসিনা সরকারের পতন ঘটে। ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে তিনি ভারতে চলে যান। এখন পর্যন্ত তিনি সে দেশেই অবস্থান করছেন। এদিকে জুলাই অভ্যুত্থানে হত্যা-নিপীড়নের একাধিক মামলায় বিচারের জন্য হাসিনাকে ফেরত চেয়েছে বাংলাদেশ। ইতোমধ্যে তার পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে। তবে ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার বাংলাদেশের চিঠি পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি। বরং ভারত সরকার সে দেশে অবস্থানের জন্য হাসিনার ভিসার মেয়াদ আরেক দফা বাড়িয়েছে।