শহিদপরিবারে চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে আইন উপদেষ্টা
মামলা বাণিজ্য শুরু হয়েছে, এদের চিহ্নিত করা হবে
বিপ্লব ঘিরে বিভেদের অপচেষ্টা চলছে : রিজওয়ানা হাসান * হাসিনার বিচার এ দেশের মাটিতে করা হবে : ফরিদা আখতার * শহিদদের বিচার নিয়ে কেউ সমঝোতার চেষ্টা করবেন না : সারজিস আলম
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জুলাই বিপ্লবে শহিদপরিবারের মামলা নিয়ে বাণিজ্য শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। তিনি বলেছেন, মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যার বিচারের দাবিতে ব্যবসা শুরু হয়েছে। যারা এ কাজ করছেন, তাদের আমরা চিহ্নিত করব। অবশ্যই তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।
সোমবার রাজধানীর নগর ভবনে দ্বিতীয় ধাপে ঢাকা বিভাগের শতাধিক শহিদপরিবারকে আর্থিক সহায়তার চেক হস্তান্তর অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে শহিদপরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, তাদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। তাই তারা আতঙ্কের মধ্যে আছেন। এ অবস্থায় তারা সরকারের কাছে নিরাপত্তা দাবি করেন।
সঠিকভাবে মামলা করার আহ্বান জানিয়ে আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘অবশ্যই শুদ্ধভাবে মামলা করতে হবে। শহিদপরিবারের মামলাগুলোয় আইনি সহযোগিতার জন্য আলাদা সেল গঠন করবে আইন মন্ত্রণালয়। আমি কথা দিচ্ছি, ৭ দিনের মধ্যে এটা করে দেব। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার, সেটা করে দেব।’
পুলিশ কাজ না করার ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, ‘গত সরকারের আমলে বলত গোপালগঞ্জের ছেলেদের রিক্রুট করা হবে। ছাত্রলীগের ছেলেকে রিক্রুট করা হবে। এখন পুলিশবাহিনীর ১০ জনের মধ্যে যদি আটজনের হৃদয়ে বাকশাল থাকে এবং তারা যদি আওয়ামী লীগ পরিবার ও গোপালগঞ্জের হয়, সেই পুলিশ নিয়ে কি কাজ করা সোজা ব্যাপার?’
তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘যেই পুলিশ গণহত্যাকারীদের প্রধান বাহিনী ছিল, তারা কি তাদের বিচারের প্রতি আগ্রহ দেখাবে?’ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, জুলাই বিপ্লব ঘিরে বিভেদের অপচেষ্টা চলছে। এজন্য তিনি শহিদদের পরিবারের সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আমাদের বা তোমাদের কোনো বিভেদ নেই। কিন্তু বিভেদের অপচেষ্টা চলছে। তাই শহিদপরিবারের সবাই সতর্ক থাকুন। এ যাত্রায় আমাদের জিততেই হবে। জেতার বিকল্প নেই।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, এখনো শহিদপরিবারের অনেকে হুমকি পাচ্ছেন, এটা দুঃখজনক। আমারা আপনাদের পাশে আছি। হত্যাকারী শেখ হাসিনার বিচার এ দেশের মাটিতে করা হবে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, শহিদদের হত্যার বিচারের সঙ্গে সরকার একমত। জুলাই শহিদস্মৃতি ফাউন্ডেশন ছাড়াও সরকারের পক্ষ থেকেও শহিদপরিবারকে সহায়তা করা হবে।
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্য সংগঠক ও জুলাই শহিদস্মৃতি ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সারজিস আলম বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহিদদের পরিবার আর্থিক সহায়তা চায় না, তারা হত্যার বিচার চায়। তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান ঘিরে শহিদদের হত্যাকারীদের বিচার করা অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় দায়। শহিদদের বিচার নিয়ে কেউ সমঝোতার চেষ্টা করবেন না। এ বিচার করা না গেলে সেটা হবে আমাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা।
শহিদদের জাতীয় বীর হিসাবে ঘোষণার দাবি জানিয়ে সারজিস আলম বলেন, শহিদদের প্রাথমিক তালিকা শিগ্গিরই গেজেট হবে। শহিদ ভাইদের জাতীয় বীর হিসাবে ঘোষণা করতে হবে।