পল্টনে বিজয় দিবসের সমাবেশ
জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি কেন: জামায়াত আমির
![Icon](https://cdn.jugantor.com/uploads/settings/icon_2.jpg)
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
![জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি কেন: জামায়াত আমির](https://cdn.jugantor.com/assets/news_photos/2024/12/17/গুমে-জড়িত-(14)-676089f1e960b.jpg)
জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি কেন প্রশ্ন রেখে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, স্বাধীনতা ছিনতাই করে এক পরিবারের সম্পদ বানানো হয়েছে। শেখ মুজিবুর রহমান কবে, কোথায় স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছেন সেটি এ দেশের কারও জানা নেই। ৭ মার্চ যদি শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়ে থাকেন, তাহলে ২৩ মার্চ পাকিস্তান দিবসে শেখ মুজিবুর রহমান নিজের বাসভবনে কেন পাকিস্তানের পতাকা ঝুলিয়েছেন? তৎকালীন ছাত্ররা সেই পতাকা খুলে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা ঝুলিয়ে দিয়েছিল।
সোমবার সকালে রাজধানীর পল্টন মোড়ে জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিক্রি করে দিয়েছে তারাই দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। তারা যে দেশের আদর্শ ধারণ ও লালন করে সেই দেশেই চলে গেছে। শেখ হাসিনা এ দেশে ফিরে এসেছে শুধু তার পিতা হত্যার প্রতিশোধ নিয়ে ভারতের কাছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ক্ষমতার বিনিময়ে বন্ধক দিতে। শেখ মুজিবকে কারা হত্যা করেছে? স্বাধীনতার সপক্ষের সেনা সদস্যরা হত্যা করেছে। কেন করেছে? কারণ শেখ মুজিব মুক্তিযুদ্ধের চেতনা থেকে বেরিয়ে বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এ দেশে ভারতীয় আধিপত্যবাদের যাত্রা শুরু করেছিলেন। তার কন্যাও পরবর্তীতে ভারতের তাঁবেদারি করতে এ দেশের আলেম-ওলামা, ছাত্র, কৃষক, শ্রমিক সাধারণ জনগণকে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, এই পল্টন ময়দানে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বৈঠা দিয়ে মানুষকে সাপের মতো পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহিদ আবু সাঈদের বক্তব্য ছিল ‘বুকের ভিতর তুমুল ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর’-এই তুমুল ঝড় এ দেশের ১৮ কোটি জনগণের বুকের ভেতরের ঝড়। জামায়াতে ইসলামী রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত সব হত্যাকাণ্ডের সঠিক তদন্ত ও ন্যায়বিচার করা হবে।
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো. নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের পরিচালনায় সমাবেশে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, এই বিজয় দিবসের অঙ্গীকার হবে-ভারতীয় আধিপত্যবাদ নিপাত যাক, পরাজিত শক্তি ভারতের দোসর আওয়ামী লীগ নিপাত যাক; জাতীয় স্বার্থে সব বিভেদ ভুলে আমরা ঐক্যবদ্ধ।
আরও বত্তব্য দেন-ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির ও অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ দেলোয়ার হোসাইন, কামাল হোসেন, ড. আব্দুল মান্নান, ইসলামী ছাত্র শিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব সভাপতি মুজাফফর হোসেন প্রমুখ।
সমাবেশ শেষে ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে বিজয় র্যালি পল্টন মোড় থেকে প্রেসক্লাব, মৎস্যভবন মোড়, কাকরাইল মোড় হয়ে পুনরায় পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।
উত্তরায় বিজয় র্যালি : সকাল ১০টায় রাজধানীর উত্তরায় জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা জোনের উদ্যোগে র্যালি পরবর্তী আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। বিজয় র্যালিটি উত্তরার জমজম টাওয়ারের সামনে থেকে শুরু হয়ে আজমপুর গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। আরও ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির মোহাম্মদ আব্দুর রহমান মূসা ও ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, মহানগরী সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য জামাল উদ্দিন, মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি এইচ এম আতিকুর রহমান প্রমুখ।
স্বাধীনতাকে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল আ.লীগ-ছাত্রশিবির সভাপতি : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম বলেছেন, ২৪-এর জুলাই বিপ্লবের ন্যায় ১৯৭১ সালেও দলমত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে দেশের আপামর জনতা স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ঐতিহাসিক এই সংগ্রামের বিজয় ছিল পুরো জাতির ঐক্যবদ্ধ ত্যাগ ও তিতিক্ষার ফল। কিন্তু স্বাধীনতার স্বাদ পাওয়ার আগেই আওয়ামী লীগ সেই বিজয়কে ছিনতাই করে একে ব্যক্তিগত সম্পত্তিতে পরিণত করেছিল। সোমবার বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা মহানগর আয়োজিত বর্ণাঢ্য র্যালি পরবর্তী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
সকাল ৯টায় রাজধানীর বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেট থেকে শাহবাগ পর্যন্ত র্যালি হয়। এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নূরুল ইসলাম, সাহিত্য সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, প্রকাশনা সম্পাদক আজিজুর রহমান আযাদ, প্রচার সম্পাদক সাদেক আব্দুল্লাহ, ছাত্রকল্যাণ ও ফাউন্ডেশন সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মামুন, প্ল্যানিং ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক মুতাসিম বিল্লাহ, অর্থ সম্পাদক তৌহিদুল হক মিজবাহ, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আহমদ তাওফিক এবং পাঠগার সম্পাদক অহিদুল ইসলাম আকিক। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আবু সাদেক কায়েম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ সভাপতি আলা উদ্দিন আবির, উত্তর সভাপতি আনিসুর রহমান, পশ্চিম সভাপতি সালা উদ্দিন মাহমুদ, পূর্ব সভাপতি মোজাফফর রহমান, ঢাকা কলেজ সভাপতি মানিকসহ অন্যান্য শাখা সেক্রেটারি ও মহানগর পর্যায়ের নেতারা।