ইউনূস-হোর্তা বৈঠক
পূর্ব তিমুরের সঙ্গে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি সই
বাসস
প্রকাশ: ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশ ও পূর্ব তিমুর সরকারের মধ্যে কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের ভিসা অব্যাহতি সংক্রান্ত একটি চুক্তি সই হয়েছে। এ চুক্তির আওতায় দুই দেশের কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীরা ভিসা ছাড়াই একে অপরের দেশে প্রবেশ, অবস্থান ও প্রস্থান করতে পারবেন। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠায় সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে।
রোববার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট জোসে রামোস হোর্তা এবং প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বৈঠকের পর তাদের উপস্থিতিতে এ চুক্তি সই হয়। পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। চারদিনের সফরে শনিবার রাতে ঢাকায় আসেন প্রেসিডেন্ট হোর্তা। হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় হোর্তাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বাংলাদেশ ও পূর্ব তিমুরের মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমেই গভীর এবং প্রসারিত করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমাদের সম্পর্ক ক্রমেই শক্তিশালী হচ্ছে। আমরা কিছু চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। তবে চুক্তির বাইরে, আমরা নিশ্চিত করছি যে আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ক অব্যাহত থাকবে এবং প্রসারিত হবে। প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তিমুর-লেস্তে শিগগিরই আসিয়ান ফোরামের সদস্য হবে এবং তিমুর-লেস্তের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছেন, আসিয়ান সদস্য হিসাবে তার দেশ রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে আসিয়ানের সমর্থন নিশ্চিত করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে। হোর্তার বন্ধু হওয়ায় সন্তুষ্টি প্রকাশ করে ড. ইউনূস বলেন, তিনি বিস্মিত হয়েছিলেন যখন হোর্তা নোবেল পুরস্কারের সব অর্থ ক্ষুদ্রঋণের জন্য দান করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে হোর্তা বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের তার দেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে হোর্তা বলেন, আমি মনে করি, আমরা বাংলাদেশ থেকে আরও পণ্য আমদানি করতে পারি এবং বাংলাদেশি কোম্পানিগুলোকে তিমুর-লেস্তে (পূর্ব তিমুর) আসার জন্য আমন্ত্রণ জানাই। আগামী বছর আমরা আসিয়ানের সদস্য হব এবং সেই সঙ্গে ৭০০ মিলিয়ন জনগোষ্ঠীর অঞ্চলের অংশ হয়ে উঠব। প্রেসিডেন্ট হোর্তা আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ তার দেশের উন্নয়নে অংশীদার হবে।
তিনি বলেন, নোবেল শান্তি পুরস্কার বিজয়ী অধ্যাপক ইউনূস বিশ্বের অন্যতম সম্মানিত নেতা, যিনি এখনো সক্রিয়ভাবে অফিসে কাজ করছেন। তিনি বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টাকে নেলসন ম্যান্ডেলা, জন এফ কেনেডি, মহাত্মা গান্ধী, ফিদেল ক্যাস্ত্রো এবং চে গুয়েভারের মতো বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তুলনা করেন। হোর্তা বলেন, বাংলাদেশ অত্যন্ত সৌভাগ্যবান, খুবই ভাগ্যবান যে এমন একজন নিরহংকার ও বিনয়ী মানুষ দেশের নেতৃত্বে রয়েছেন। তিনি আপনাদের তরুণদের সঙ্গে কাজ করছেন দেশের পরিবর্তনের জন্য।
পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন সফররত প্রেসিডেন্ট হোর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। রোববার সকালে হোটেল সোনারগাঁওয়ে এ বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বিএনপি নেতাদের সাক্ষাৎ : পূর্ব তিমুরের প্রেসিডেন্ট রামোস হোর্তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বিএনপির নেতারা। রোববার দুপুরে প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে এই সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। বিএনপির মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান এ তথ্য জানিয়েছেন। সাক্ষাতে বিএনপির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন আহমেদ অসীম, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের শিক্ষা ও গবেষণা উপদেষ্টা ড. মাহদী আমিন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি তাবিথ আউয়াল উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকালে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েনের সঙ্গে দূতাবাসে বৈঠক করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান।