প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে মিশ্রির বৈঠক
সম্পর্কে মেঘ এসেছে, এটি দূর করতে হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১০ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিতে এবং জোরদার করতে আগ্রহী ভারত। একই সঙ্গে বিভিন্ন কারণে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কে যে কালো মেঘ জমেছে, সেটিও দূর করতে চান তারা। সোমবার বিকালে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠকে এমন আগ্রহ জানান ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। বৈঠকের পর যমুনার সামনে আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মোহাম্মদ শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের রিজওয়ানা হাসান বলেন, অপপ্রচারের জবাব লিখিত ও মৌখিক-বহুভাবেই বলেছি। যত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোকে সাম্প্রদায়িক দেখানোর সুযোগ খুবই কম। সেগুলো কখনো কখনো ব্যক্তিগত, বেশির ভাগই রাজনৈতিক। আমাদের স্পষ্ট অবস্থান হচ্ছে-বাংলাদেশ সরকার না এটির অংশ, না এটি কোনোভাবেই বরদাশত করছে। যেখানে যেখানে এ রকম অভিযোগ এসেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে আইনগত প্রক্রিয়া গ্রহণ করা হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের সচিবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিভিন্ন কারণে আমাদের সম্পর্কের মধ্যে যে একটি মেঘ এসেছে, এ মেঘটি দূর করতে হবে। আমরাও বলেছি, এ মেঘটি দূর করতে হবে।
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, বৈঠকে বারবার তারা বলেছে, বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক এগিয়ে নিতে এবং জোরদার করতে আগ্রহী ভারত। তারা জুলাই ও আগস্টে যে বিপ্লব হয়েছে, সে বিষয়ে অবগত রয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে ভারতকে বলা হয়েছে, আমরা সার্ককে শক্তিশালী ভূমিকায় দেখতে চাই। একই সঙ্গে ভারতে বাংলাদেশ নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে যেসব প্রোপাগান্ডা হয়েছে এবং হচ্ছে, সেসব ব্যাপারেও আমাদের পক্ষ থেকে উদ্বেগ জানানো হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী (শেখ হাসিনা) যিনি সেখানে (ভারতে) আশ্রয় নিয়েছেন এবং সেখান থেকে কথাবার্তা বলে নানা ধরনের উত্তেজনা তৈরির চেষ্টা করছেন, সেটির ব্যাপারে খুব স্পষ্টভাবে উদ্বেগ জানানো হয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করে এবং জুলাই-আগস্টের বিপ্লবকে প্রশ্নবিদ্ধ করে ভারতে এমন অপপ্রচার ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের দায় ভারত সরকার নেয়নি। এগুলোর ব্যাপারে ভারতের বক্তব্য হচ্ছে, তারা কোনোভাবেই এসব বিষয়ে দায়ী নয়। সরকারের পক্ষ থেকে এগুলো করা হচ্ছে না কিংবা প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে না। বরং বিভিন্ন মিডিয়া ও সংগঠনের পক্ষ থেকে এসব করা হয়েছে।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ভারতীয় ভিসা দেওয়া অনেক কমিয়ে রাখা হয়েছে, যে কারণে অনেক অসুবিধা হচ্ছে। এ বিষয়টিও ভারতকে বলা হয়েছে। বিপরীতে তাদের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে তারা শিগ্গিরই ভিসা বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করবে।
আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার ব্যাপারে ভারতকে কিছু জিজ্ঞাসা করা হয়েছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাংলাদেশের হাইকমিশনে হামলার ব্যাপারে আগেই প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। সে ব্যাপারে তারা দুঃখপ্রকাশ করেছেন। আজও তারা সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এবং জোরদার করার কথা বলেছেন।
ভারতের পররাষ্ট্র সচিব নির্বাচনের ব্যাপারে জানতে চেয়েছেন। নির্বাচনের ব্যাপারে আমরা স্পষ্টভাবে বলেছি, নির্বাচন অবশ্যই অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে। একটি গণতান্ত্রিক দেশ হিসাবে ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় বর্তমান সরকার বদ্ধপরিকর। এ ব্যাপারে সবাইকে আমাদের পাশে থাকার আহ্বান জানিয়েছি।