Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার বৈঠক

ডাক দেবেন জাতীয় ঐক্যের

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ডাক দেবেন জাতীয় ঐক্যের

বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্য গড়ার আহ্বান জানাবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা, বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অবমাননা এবং ভারতের জাতীয় নেতাদের বক্তব্যে বৃহৎ প্রতিবেশী দেশটির সঙ্গে সৃষ্ট উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে তিনি এই জাতীয় ঐক্যের ডাক দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছেন। এ লক্ষ্যে রাজনৈতিক দল, ছাত্রনেতাসহ সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন তিনি। এর অংশ হিসাবে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। আজ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বসবেন সরকারপ্রধান। মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম এসব তথ্য জানান।

সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে এই মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান উপদেষ্টা শিক্ষার্থীদের বলেন, দেশের মানুষ ছাত্রদের ওপর ভরসা করে। এই বিশ্বাস ধরে রেখো। হাতছাড়া করো না। তোমরা কখনোই আশাহত হবে না। তোমরা অসম্ভবকে সম্ভব করেছ। দেশ বদলিয়ে ফেলেছ। তোমরাই পারবে। মানুষের আশা তোমাদের পূরণ করতে হবে। অন্তত সে পথে তোমাদের অগ্রসর হতে হবে। এক বিজয় করেছ, আরেক বিজয় আসবে। তোমরা বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেবে যেন আমরাও সতর্ক হই, সজাগ হই। বৈঠকের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ভারত আওয়ামী লীগের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দেখে। আমরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছি। কিছু বিষয় নিয়ে টেনশন শুরু হয়েছে। ভারতের আগরতলায় সোমবার বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা হয়েছে। বিশ্ব মিডিয়ায় দেখানো হচ্ছে যে, বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা অনিরাপদে আছে। এসব বিষয় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা মাঠের অবস্থা তাকে জানানোর চেষ্টা করেছি। অধ্যাপক ইউনূস শিক্ষার্থীদের বলেন, আলাদা-আলাদাভাবে কয়েকজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে আগে দেখা হয়েছে। আজকে অনেকের সাথে দেখা হলো। তোমাদের কথা শুনতেই মূলত আজকে বসা। তোমরা সরকারের কাছে কী চাচ্ছ, আশাগুলো কী, পরামর্শ আছে কি না এটি জানতে চাওয়া। তোমরা রাষ্ট্রের অভিভাবক, তোমাদের কারণেই রাষ্ট্র। নিজেদের ভূমিকা ভুলে যেও না। অনেকে এখানে আছে, অনেকে নেই। যারা নেই, তারাও রাষ্ট্রের অভিভাবক। তোমাদের দায়িত্ব আছে রাষ্ট্র যেন ঠিক পথে চলে, যেন বিচ্যুত না হয়। এটুকু মনে রাখলে রাষ্ট্র ঠিক থাকবে। নিজের অভিভাবকত্ব ভুলে যেও না। এ সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, নিহতদের রাষ্ট্রীয় খেতাব দেওয়া, আহতদের সুচিকিৎসায় সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া এবং জুলাই গণহত্যায় জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে জোর দিতে বলেন। এছাড়া গণমাধ্যম ও সোশ্যাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চলছে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। 

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরামর্শকে স্বাগত জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, দ্রব্যমূল্য ঠিক থাকতে হবে। সিন্ডিকেট নাকি কী এ ধরনের ব্যাখ্যা আমরা চাই না। কতগুলো লোক বাজারমূল্য কবজা করে থাকবে সেটা হতে পারে না। আমরা চেষ্টা করছি দ্রব্যমূল্য ঠিক রাখার। স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করার পরামর্শে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, স্থানীয় সরকার সংস্কারের জন্য কমিশন আছে। তারা পরামর্শ দেবে আমরা কাজ করব। আমরা চাই স্থানীয় সরকারের কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়া। খুব কম জিনিস উচ্চ পর্যায়ে থাকবে। জুলাইয়ে শহিদদের রাষ্ট্রীয় সম্মান ও খেতাবের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পরামর্শে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমরা এটি নিয়ে কাজ করছি। জুলাইয়ে যারা শহিদ হয়েছে তাদের অবদান আমরা ভুলব না। তাদের যথাযথ রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কার প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের এমন পরামর্শের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। যেন বাংলাদেশে কেউ শিক্ষিত না হয়ে উঠতে পারে, দক্ষ হয়ে উঠতে না পারে সেজন্য পরিকল্পিতভাবে এটা করা হয়েছে। বেকারত্ব তৈরি করা হয়েছে। উদ্যোক্তাদের জন্য উৎসাহব্যঞ্জক কিছু নেই। এটা আমদের ঠিক করতে হবে। তরুণদের দক্ষ হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। 

মতবিনিময়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বারবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও গণমাধ্যমে সরকারের কাজ সঠিকভাবে প্রচার না হওয়ার বিষয়টি উঠে আসে। শিক্ষার্থীদের এমন বক্তব্যে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় কথা বলে তারা সরকারের বিরুদ্ধে সরব এটা ঠিক। সরকারের নিজের কোনো পত্রিকা নেই। আছে শুধু প্রেস উইং। তারা পত্রিকায় প্রেস রিলিজ পাঠায়। কেউ ছাপে, কেউ ছাপে না কিংবা তাদের মনমতো শেষ পাতায় বা কোনায় ছোট করে দেয়। প্রেস উইং ওদের মতো করে চেষ্টা করছে, কাজ করছে। সরকার কোনো গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ করবে না। সংবাদপত্র স্বাধীনভাবে কাজ করবে-এটাই আমাদের নীতি। আমরা এই নীতিতে থাকব। আমি বুঝতে পারছি তোমরা কিছুটা মনোক্ষুণ্ন। এটা আসলে কিছুটা মন খারাপ হওয়ার মতো যে, সরকারের কাজ মানুষের কাছে পৌঁছাচ্ছে না। 

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পুরো সিস্টেমই ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। চারদিকে চুরি-চামারি। ব্যাংক কাজ করে না। কমিটি অর্থনীতির শ্বেতপত্র দিয়েছে। আমি বলেছি, এটা একটা ঐতিহাসিক দলিল। আমি মনে করি এটা প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানো উচিত। দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার দায় আওয়ামী লীগের। তবে যারা উন্নয়নের জোয়ার বয়ে যাচ্ছে বলে ঘোষণা দিয়েছে-তাদেরও ধরতে হবে। যে ধ্বংসস্তূপ রেখে গেছে সেখান থেকে বের হওয়া কঠিন। যেদিকে হাত দেই সেদিকেই ভাঙাচোরা। এই ভাঙাচোরা পরিষ্কার করেই যাচ্ছি। কাজ শুরু করতে গিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে।

শিক্ষার্থীরা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কারকাজে সর্বোচ্চ সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দেন। তারা বলেন, দেশের মানুষ সরকারের পাশে আছে। এটি গণমানুষের সরকার। জনগণ চায় অন্তর্বর্তী সরকার যেন প্রয়োজনীয় সংস্কারের কাজটি সম্পন্ন করে। 

হাসনাত আবদুল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, আমরা বলেছি, ভারত সরকারের সঙ্গে বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের যে সম্পর্ক ছিল, যে চুক্তিগুলো হয়েছে, সেগুলো যেন প্রকাশ করা হয়। ফেলানী হত্যাসহ, সীমান্তের সব হত্যার বিচার নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে হবে। পানির ন্যায্য হিস্যা বাস্তবায়ন করতে হবে। ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক যেন ন্যায্যতার সঙ্গে হয়, তাও নিশ্চিত করার কথা বলেছি।

হাসনাত আরও বলেন, সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীসহ বাংলাদেশের সব নাগরিক সাম্য ও মানবিক মর্যাদার ভিত্তিতে যে বসবাস করছি এবং এখানে যে সম্প্রীতি আছে, তা যেন বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করা হয়, তার ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।

তিনি বলেন, ভারত এতদিন বাংলাদেশকে আওয়ামী লীগের চোখ দিয়ে দেখেছে। এতে জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ক হয়নি, রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের সম্পর্ক হয়নি। আমরা প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, ভারতের জনগণের সঙ্গে আমাদের দেশের জনগণের বিমাতাসুলভ সম্পর্ক নেই। ভারতের সরকার দেড় যুগের বেশি সময় বাংলাদেশকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আওয়ামী লীগকে অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছে। আমি আহ্বান জানাব, ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক যেন জনগণের সঙ্গে জনগণের এবং রাষ্ট্রের সঙ্গে রাষ্ট্রের হয়, যোগ করেন হাসনাত আবদুল্লাহ।

প্রেস সচিবের ব্রিফিং : ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে মঙ্গলবার আয়োজিত সংবাদ ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ লক্ষ্যে মঙ্গলবার ছাত্রনেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তিনি। আজ প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর নেতাদের সঙ্গে সংলাপ করবেন। আগামীকাল সংলাপ করবেন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে। এসব বৈঠকের উদ্দেশ্য ‘জাতীয় ঐক্য’। প্রধান উপদেষ্টা সবাইকে জাতীয় ঐক্যের ডাক দেবেন। 

তিনি বলেন, ভারতীয় গণমাধ্যম অপতথ্য ছড়িয়ে সে দেশের জনগণকে খেপিয়ে তুলছে। দেশটি আমাদেরকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাইছে। এসব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। প্রধান উপদেষ্টার উপপ্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার এবং অপূর্ব জাহাঙ্গীর এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রতিবেশী দেশ ভারতে চলে যান। এরপর থেকেই দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক শীতল হচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে এই বৈরী সম্পর্কের বিষয়টি প্রকাশ্যে এসেছে। বিভিন্ন ইস্যুতে একে অপরকে অভিযুক্ত করছে। এ অবস্থায় ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের রাজধানী আগরতলায় সোমবার বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা করে একটি উগ্রবাদী হিন্দু সংগঠন। এর নেতাকর্মীরা সহকারী হাইকমিশন অফিসে ব্যাপক ভাঙচুরের পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা পুড়িয়ে দেয়। এরপর বিষয়টি আরও জটিল আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মাকে মঙ্গলবার তলব করে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এছাড়াও বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে ভারতের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-মিছিল সমাবেশ চলছে। ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশন ও বিভিন্ন স্থাপনার নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। 

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, বুধবার বিকাল ৪টায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক হবে। তবে কোন কোন রাজনৈতিক দল সংলাপে অংশ নেবে এটা তখন জানা যাবে। ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে কখন কোথায় বৈঠকটি হবে তা এখনো চূড়ান্ত হয়নি। 

শফিকুল আলম বলেন, ইদানীং কিছু ঘটনা নিয়ে অপতথ্য ছড়ানোর প্রয়াস দেখা যাচ্ছে। যেখানে ভারতের গণমাধ্যম আক্রমণাত্মক কাজ করছে। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের প্রতিবেদনে বড় ধরনের গলদ আছে। তাদের প্রতিবেদনই নিচ্ছেন ভারতীয় সাংবাদিকরা। ভারত আমাদের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে চাইছে। তারা পূর্বনির্ধারিত ধারণা নিয়েই অপতথ্যগুলো ছড়াচ্ছে। আগে থেকেই এমন ধারণা করে রাখলে আলোচনার আর উপায় থাকে না। 

তিনি আরও বলেন, ভারতীয় মিডিয়ায় বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে অপপ্রচার চালিয়ে দেশটির জনগণকে খেপানোর চেষ্টা করছে। তারা মিস ইনফরমেশন (অপতথ্য) ছড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। 

এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, আমরা দায় চাপাব ভারতীয় মিডিয়ার ওপর। তারা যাচাই না করে সংবাদ প্রচার করছে। আমরা বিশ্বের নামকরা অনেক গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের বিষয়গুলো ব্যাখ্যা করেছি। কিন্তু ভারতের মিডিয়া আগে থেকে ঠিক করে রাখা প্রতিবেদনই প্রচার করছে। 

শফিকুল আলম আরও বলেন, আগস্টের শেষে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনূসের সঙ্গে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কথা হয়েছিল। সে সময় প্রধান উপদেষ্টা ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে বাংলাদেশে প্রতিনিধি পাঠিয়ে ভিজিট করাতে আহ্বান জানিয়েছিলেন। আমরা বারবারই আমাদের সাইড থেকে বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছি। কিন্তু তারা তাদের পছন্দনীয় সূত্র থেকে তথ্য নিচ্ছে। আমরা সব ক্ষেত্রেই খোলাখুলিভাবে সবকিছু জানাতে চাই। কিন্তু চোখ-কান বন্ধ করে থাকলে তারা সত্যটা জানতে পারবে না। শুনেও না শোনার ভান করছে ভারতীয় মিডিয়া। তবে এসব গুজব ও মিথ্যা তথ্য কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অনুযায়ী মোকাবিলা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। 

তিনি আরও বলেন, অপতথ্য ছড়ানোর সঙ্গে দেশের ভাবমূর্তির প্রশ্ন জড়িত। তাই আমাদের পত্রিকাগুলোকে বলব আপনারা এই ভয়াবহ তথ্য-সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রকৃত ঘটনা তুলে ধরুন। ভারতীয় মিডিয়ায় ৯ জনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে। কিন্তু তার কোনোটি সাম্প্রদায়িক কারণে হয়নি। মৃত্যুগুলোর পেছনে ছিল রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত কারণ। সংগঠনটি নেত্র নিউজের প্রতিবেদন নিয়ে কোনো প্রতিবাদ জানায়নি। বাংলাদেশ নিয়ে অপতথ্য চালানোর ফলাফল হলো আগরতলায় বাংলাদেশ মিশনে হামলা। এটার জন্য দায় চাপাব ভারতীয় গণমাধ্যমকে। শফিকুল আলম বলেন, অপতথ্য প্রচারের বিরুদ্ধে আমাদের নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দল, প্রবাসী সবাই মিলে সোচ্চার হতে হবে। এক প্রশ্নের জবাবে প্রেস সচিব বলেন, আমরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চাই। তারা আমাদের বৃহৎ প্রতিবেশী। আমরা মনে করি এ সুসম্পর্ক হতে হবে ন্যায্যতা ও সমতার ভিত্তিতে।


Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম