অক্টোবর মাসের বেতনের দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো চন্দ্রা-নবীনগর সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের শ্রমিকরা।

বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে আন্দোলনকারী শ্রমিকরা গাজীপুর মহানগরীর চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নেন। এদিকে ১২ দফা দাবি নিয়ে একই দিন সড়কে অবস্থান নিয়েছেন হা-মীম গ্রুপের ‘দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড’ কারখানার শ্রমিকরা।

অন্যদিকে বাসের ধাক্কায় দুই শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় চক্রবর্তী ও জিরানী এলাকায় নবীনগর-চন্দ্রা সড়ক অবরোধ করে কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন নরবান ফ্যাশন লিমিটেডের শ্রমিকরা। এতে অসহনীয় যানজটে পড়েন যাত্রীরা। কারখানার শ্রমিক ও শিল্প পুলিশ জানায়, গাজীপুরের সারাবো এলাকার বেক্সিমকো ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের প্রায় ৪০ হাজার শ্রমিকের অক্টোবর মাসের বেতন বাকি আছে।

বেতনের দাবিতে গত শনিবার থেকে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে আসছেন। এ ছাড়া তারা ওই দিন থেকেই চন্দ্রা-নবীনগর সড়কের চক্রবর্তী এলাকায় অবস্থান নিয়ে অবরোধ সৃষ্টি করছেন। অন্যান্য দিন কিছু অটোরিকশা চলাচল করলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অটোরিকশাও চলতে দিচ্ছে না।

শ্রমিক আন্দোলনের খবরে সকাল থেকেই চক্রবর্তী, জিরানীসহ আশপাশের এলাকায় শিল্প পুলিশ, থানা পুলিশ, র‌্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিকেএসপির সামনে অবস্থান করছেন। বেক্সিমকোর শ্রমিক মো. আশরাফুল বলেন, ‘কয়েকবার পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা বেতন দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরে আর বেতন পাইনি। তাই বেতন না পাওয়া পর্যন্ত সড়ক অবরোধ চলবে।’ আরেক শ্রমিক কবির হোসেন বলেন, ‘টাকা ছাড়া সংসার চলছে না। আন্দোলন করেই বেতন আদায় করব।’

এদিকে বুধবার থেকে ১২ দফা দাবিতে জিরানী এলাকার হা-মীম গ্রুপের দ্যাটস ইট নিট লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা আন্দোলন শুরু করেছেন। বুধবার সেনাবাহিনীর সদস্যরা তাদের নিয়ে বসে সমাধানের চেষ্টা করলেও সমাধান হয়নি।

এ কারণে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা আবার জিরানী এলাকায় চন্দ্রা-নবীনগর সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ করেছেন। ফলে ওই রুটে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন। উত্তরবঙ্গের যানবাহন বিকল্প পথে গাজীপুরের ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ও ধামরাই-কালিয়াকৈর আঞ্চলিক সড়ক ব্যবহার করে চলাচল করছে।

গাজীপুর শিল্পাঞ্চলের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম বলেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে সড়ক থেকে সরানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, শিল্প ও থানা পুলিশ রয়েছে।

এদিকে নরবান ফ্যাশন লিমিটেডের বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা বলেন, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টার দিকে চক্রবর্তী এলাকায় তাদের দুজন নারী শ্রমিক কাজে যোগদান করতে আসার সময় একটি দূরপাল্লার বাস ধাক্কা দিয়ে পালিয়ে যায়। এতে এই দুই নারী শ্রমিক আহত হন। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এ ঘটনার প্রতিবাদে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এতে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়, ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রীরা।

ধামরাইয়ে মহাসড়ক অবরোধ : যুগান্তর প্রতিবেদক ঢাকা উত্তর ও ধামরাই প্রতিনিধি জানান, ধামরাই উপজেলায় বুধবার রাতে গ্রাফিক্স টেক্সটাইলের শ্রমিকবাহী বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে চার পোশাক শ্রমিক নিহত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকরা।

এ সময় তারা তিন দফা দাবি জানান। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-শ্রমিকদের যাতায়াতের জন্য পরিবহণের ব্যবস্থা, নিহত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ও আহত শ্রমিকদের চিকিৎসা করতে হবে। শ্রমিকদের দাবি কারখানার কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়ে একদিনের সাধারণ ছুটি ঘোষণা করলে অবরোধ তুলে নেন শ্রমিকরা।