Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান থাকছে না

উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক: দুর্বল কারখানা বন্ধে কমিটি হচ্ছে * ছাত্ররা যেন কোনো উসকানিতে না পড়ে

Icon

যুগান্তর প্রতিবেদন

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান থাকছে না

ছবি: সংগৃহীত

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন হচ্ছে। এতে অপরাধের সংজ্ঞা যুগোপযোগী করা, দায় নির্ধারণ, অডিও ও ভিডিওর মাধ্যমে বিচারকাজ ধারণ ও সম্প্রচারের সুযোগ রাখা হচ্ছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে বুধবার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এসব ব্যাখ্যা দেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের বিধান আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইনে থাকছে না। এ সময় উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল সংশোধন অধ্যাদেশের খসড়ায় বিভিন্ন হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশন, সাংবাদিক, দেশি-বিদেশি আইনজীবীর মতামত নেওয়া হয়েছে। এছাড়া জাতিসংঘের হিউম্যান রাইটস অর্গানাইজেশনের কাছে পাঠানো হয়েছিল। সব মতামতের ভিত্তিতে আমরা একটা খসড়া করেছি। এটা উপদেষ্টা পরিষদে উত্থাপন করা হয়েছিল। উপদেষ্টা পরিষদে গৃহীত হয়েছে। তবে একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়েছে সংশোধনী দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। আমরা যে আইনের সংশোধনীটা করেছিলাম সেখানে রাজনৈতিক দলকে শাস্তি দেওয়ার বিধান ছিল। খসড়ায় বলা ছিল, আদালত যদি মনে করেন তারা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য কনসার্নড অথোরিটির (সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ) কাছে সুপারিশ করতে পারেন। তিনি বলেন, আইনের সংশোধনীতে রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি তিন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার বিচারের বিধান রাখা হয়েছে। ১৯৭৩ সালের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করা হয়েছে। ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো পরিবর্তন করে স্বচ্ছ উপায়ে বিচারের জন্য আইন সংশোধন করা হয়েছে। রোম স্ট্যাটিউট অবলম্বন করে জেনোসাইড, মানবাধিকারবিরোধী অপরাধের সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়েছে সংশোধনীতে। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে তিন বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থারও বিচারের বিধান রাখা হয়েছে সংশোধনীতে। আসিফ নজরুল বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের আলোচনায় বলা হয়েছে, আমরা এই বিচারকে অন্য কোনো বিষয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত করতে চাই না। রাজনৈতিক দল কিংবা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন এলে, এই আইনকে অযথায় প্রশ্নবিদ্ধ করার

সুযোগ সৃষ্টি হবে। আমরা সেই সুযোগ দিতে চাই না। স্বচ্ছভাবে বিচারটা করতে চাই। এজন্য প্রভিশনটা বাতিল করা হয়েছে। তবে কোনো রাজনৈতিক দল কিংবা সংগঠনকে নিষিদ্ধ করার জন্য দাবি উঠলে, অন্যান্য আইন আছে। তিনি আরও বলেন, এই আইনে অভিযুক্ত পক্ষকে সমান সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সাক্ষীর নিরাপত্তার যথেষ্ট সুযোগ থাকবে। সাক্ষ্যপ্রমাণের অডিও-ভিডিও প্রয়োজনে প্রচার করতে পারবে। আন্তর্জাতিক বা দেশীয় মানবাধিকার সংগঠন ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত থেকে বিচার পর্যবেক্ষণ করতে পারবে।

ছাত্ররা যেন কোনো উসকানিতে না পড়ে : তিতুমীরসহ সাত কলেজের আন্দোলন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, এ বিষয়গুলো দুঃখজনক। যখন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলন করছিল তখন প্রতিনিধিদলের সঙ্গে শিক্ষা উপদেষ্টাসহ আমি বসেছিলাম। আলোচনার মাধ্যমে বিষয়গুলো সেখানেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তিনি বলেন, তিতুমীর কলেজকেন্দ্রিক যে ঘটনাটা ঘটেছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক। মানুষের মাথা ফেটে গেছে। এ ধরনের দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে। আজকেও ঢাকা ও সিটি কলেজের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে, এখনো স্পষ্ট নয় যে, আসলে তাদের মধ্যে কী বিষয়ে এ সংঘর্ষ হয়েছে। এই অঞ্চলটায় প্রায়ই এ ধরনের ঘটনা দেখে থাকি। ছাত্রদের প্রতি আমাদের আহ্বান থাকবে কোনো প্রকার উসকানির মধ্যে যেন না পড়ে। যেন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখার ক্ষেত্রে আমাদের যে নাগরিক দায়িত্ব সেটা যেন বজায় রাখি। উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, আমরা বারবার বলেছি, কোনো উসকানি কিংবা যে নেগেটিভ অ্যালার্জি আছে সেগুলো না করে সরকারের সঙ্গে প্রপার চ্যানেলে আসেন, কথা বলেন, সরকার আপনাদের কথা শুনতে ইচ্ছুক এবং সমাধানের দিকে এগিয়ে যেতে চায়। ছাত্ররা যেহেতু একটা গণ-অভ্যুত্থান সফল করতে পেরেছে, আমার মনে হয় তারা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবে। প্রবাসীদের পাসপোর্ট সমস্যা প্রসঙ্গে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা বলেন, শুধু মালয়েশিয়া নয়, অনেক দেশেও পাসপোর্টের জন্য অনেক ঝামেলা হচ্ছে। প্রবাসীরা আমাকে অনেক মেসেজ লেখেন। তারা হয়তো ভাবেন আমি পড়ি না। আমি সবই পড়ি।

দুর্বল কারখানা বন্ধে কমিটি হচ্ছে : এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেন, শুরুর দিকে শ্রম অঞ্চলে অনেক বেশি অসন্তোষ ছিল। কিন্তু মালিক পক্ষ থেকে বেতন না দেওয়া হলে, শ্রমিক বসে থাকবে না, এটা স্বাভাবিক। বেক্সিমকো গ্রুপের গত দুই মাসের বেতন সরকার ব্যাংকের মাধ্যমে ম্যানেজ করে দিয়েছে। এটা এভাবেই চলতে থাকবে, সেটা আমরা চাই না। স্থায়ী সমাধানে যেতে চাই। সেজন্য একটা উচ্চ পর্যায়ের কমিটি করা হবে। তারা একটা প্রস্তাব দেবে। কারণ অনেকগুলো কারখানা আছে। যেগুলো আর চলমান রাখার বাস্তবতা নেই। কাজের অর্ডার নেই, এক্সপোর্ট নেই-সেখানে শ্রমিকদের রেখে কন্টিনিউ করা সম্ভব নয়। যেসব (কারখানা) সম্ভব নয়, শ্রমিকদের পাওনা ও বেতন দিয়ে সেগুলো বন্ধ করার ব্যাপারে বিবেচনা করা হবে। কমিটি সরকারকে এ বিষয়ে একটা প্রস্তাবনা দেবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম