নির্বাচন যত দেরি হবে, সমস্যা ততই বাড়বে: মির্জা ফখরুল
ফেনী ও ছাগলনাইয়া প্রতিনিধি
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
ফাইল ছবি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, নির্বাচন যত দেরি হবে, ততই দেশে নতুন নতুন সমস্যা সৃষ্টি হবে। তিন মাস পার হলেও এখনো নির্বাচনি ব্যবস্থা সংস্কারের কোনো রূপরেখা তৈরি হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বসে সংস্কার করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন। সংস্কার হবে সুষ্ঠু নির্বাচনের। নির্বাচিত সরকার দেশের বাকি সংস্কারকাজ সম্পন্ন করবে। বুধবার বিকালে ফেনীর ছাগলনাইয়া আদালত মাঠে বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষ্যে বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফখরুল বলেন, আমরা দুই বছর আগেও বলেছি, ৩১ দফা দিয়েছি। আমরা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট পার্লামেন্ট গঠন করব। যার মাধ্যমে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। জনগণ ভোট দিয়ে তাদের পছন্দের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। আমরা জনগণের ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই। জনগণ তাদের পছন্দের লোককে ভোট দিতে পারলেই সুষ্ঠু নির্বাচন বলে প্রতীয়মান হবে। তিনি প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনি নিরপেক্ষ প্রমাণ করতে গিয়ে আওয়ামী লীগকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার চেষ্টা করবেন না।
ফখরুল আরও বলেন, গত ১৫ বছরে বিএনপির ৭০০ লোক গুম হয়েছে। তাদের পরিবার এখনো তাদের অপেক্ষায় রয়েছে। ৬০ হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে শত শত মামলা দেওয়া হয়। জেলখানায় অনেক নেতাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে রাজনৈতিক সরকার গঠন না হলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব নয়।
ফেনী-১ আসনের নির্বাচনি সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সাবেক সংসদ-সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, চেয়ারম্যানের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শিমুল বিশ্বাস, বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম প্রমুখ। বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু তালেবের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাবেক সংসদ-সদস্য আবদুল ওয়াদুদ ভূঁঞা, বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সহসম্পাদক রেহেনা আক্তার রানু, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবদুল লতিফ জনি, জালাল উদ্দীন মজুমদার, অ্যাডভোকেট সাহানা আক্তার সানু, ফেনী জজকোর্টের পিপি অ্যাডভোকেট মেছবাহ উদ্দিন খান, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব, ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল প্রমুখ। বিএনপির সমাবেশকে ঘিরে ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী, পরশুরামসহ জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা যোগ দেন। এতে সমাবেশস্থল জনসভায় পরিণত হয়। দীর্ঘ ১৭ বছর পর ফেনীতে বিএনপির প্রকাশ্যে এত বড় সমাবেশে আসতে পেরে তৃণমূলের নেতাকর্মীরা উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
কে রাজনীতি করবে, তা ঠিক করবে জনগণ : এদিকে দুপুরে ১৩ বছর পর ফুলগাজীর শ্রীপুরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বাড়িতে গেলেন মির্জা ফখরুল। তিনি সেখানে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও জনসাধারণের মাঝে শিক্ষা উপকরণ ও ঢেউটিন বিতরণ করেন। দুপুরে শ্রীপুরে ইস্কান্দার মজুমদার বাড়ির প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফখরুল বলেন, দেশে কে রাজনীতি করবে আর কে করবে না, তা ঠিক করবে বাংলার জনগণ। আওয়ামী লীগকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে আমার বক্তব্যের ভুল ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। একটি রাজনৈতিক দলের নেতা হিসাবে আমি অন্য কোনো রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করতে বলতে পারি না। তা নির্ধারণ করবে এ দেশের জনগণ। ফুলগাজী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ফখরুল আলম স্বপনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, সাবেক সংসদ-সদস্য অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপি, রেহানা আক্তার রানু, চট্টগ্রাম বিভাগের সংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান শামীম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মশিউর রহমান বিপ্লব।
সার্বিক তত্ত্বাবধান করেন ফেনী-১ আসনের নির্বাচনি সমন্বয়ক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল আলম মজনু এবং সদস্য সচিব মোহাম্মদ রবিন।