জবি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে উপদেষ্টা নাহিদ
তিন দিনের মধ্যে পূরণ হবে ৫ দফা দাবি
জবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি আগামী তিন দিনের মধ্যে পূরণের আশ্বাস দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের সব দাবিই যৌক্তিক। এর সঙ্গে আমি একমত। সোমবার বিকাল সাড়ে তিনটায় সচিবালয়ের সামনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীদের সামনে এসে এই প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। এ সময় নাহিদ ইসলামের সঙ্গে ছিলেন শিক্ষা উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ড. আমিনুল ইসলাম।
এর আগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীকে হস্তান্তরসহ পাঁচ দফা দাবিতে সচিবালয় ঘেরাও করেন শিক্ষার্থীরা। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে হস্তান্তর না করা হলে কঠোর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তারা। সোমবার দুপুর ১২টার দিকে ২ হাজারের অধিক জবি শিক্ষার্থী সচিবালয় ও শিক্ষা মন্ত্রণালয় অভিমুখে পদযাত্রা করেন। তারা শিক্ষাভবনের সামনের রাস্তা অবরোধ করে বসে পড়েন। পরে জবি শিক্ষার্থীদের ১২ সদস্যের প্রতিনিধিদল শিক্ষা সচিবের কাছে স্মারকলিপি দিতে যান। এ সময় তাদের সঙ্গে আলোচনা করতে অস্বীকৃতি জানান শিক্ষা সচিব। ক্ষুব্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা সড়কে বসে পড়েন। পরে বিকাল সাড়ে ৩টায় উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।
নাহিদ ইসলাম বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অনেক কষ্টে থাকে। তাদের হল নেই। শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের দাবি সম্পূর্ণ যৌক্তিক। শিক্ষার্থীদের দাবির সঙ্গে আমি পুরোপুরি একমত। আমরা তিন দিনের মধ্যে হল করে দিতে পারব না কিন্তু কাজ আমরা আর্মির কাছে হস্তান্তর করতে পারি। এর জন্য আমাদের বসতে হবে। আমরা তিন দিনের মধ্যে নতুন ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করব।
এ সময় শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা তিন কর্মদিবস সময় দিচ্ছি। সেই সঙ্গে ‘হিট’ প্রজেক্টের ব্যাপারে আজকেই সিদ্ধান্ত চাই। আমাদের সামনে শিক্ষা উপদেষ্টাকে এসে আজই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানাতে হবে।
এদিকে সেনাবাহিনীকে কীভাবে কাজ দেওয়া যায়, সে বিষয়ে আলোচনা করতে আজ মঙ্গলবার বৈঠকে বসবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সোমবার বিকালে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ১২ প্রতিনিধির সঙ্গে বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন, বেলাল আহমেদ, নাসির আহমেদ উপস্থিত ছিলেন।
সচিবালয়ে বৈঠক শেষে আন্দোলনের মুখপাত্র তৌসিব মাহবুব সোহান বলেন, মঙ্গলবার দুপুর ১২টায় উপাচার্য ও প্রজেক্ট ডিরেক্টর দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের সব কাগজপত্র নিয়ে আসবেন। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে দুজন প্রতিনিধিও উপস্থিত থাকবেন। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে কীভাবে সেনাবাহিনীকে কাজ দেওয়া যায়।
শিক্ষার্থীদের ৫ দফা দাবি হলো-স্বৈরাচার আমলে নিয়োগপ্রাপ্ত প্রজেক্ট ডিরেক্টরকে আইনের আওতায় আনতে হবে এবং সাত দিনের মধ্যে সেনাবাহিনীর দক্ষ অফিসারদের হাতে এই দায়িত্ব অর্পণ করতে হবে; শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে সুনির্দিষ্ট রূপরেখাসহ ঘোষণা করতে হবে যে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের কাজ সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর হয়েছে; অবিলম্বে বাকি ১১ একর জমি অধিগ্রহণের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পুরোনো ক্যাম্পাস নিয়ে স্বৈরাচার সরকারের আমলের সব চুক্তি বাতিল করতে হবে; ইউজিসি প্রকল্পে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক বাজেট সর্বনিম্ন ৫০০ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করতে হবে।