নেতাকর্মীদের প্রতি বিএনপি
পোস্টার ও ব্যানার অপসারণ না করলে ব্যবস্থা
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ১২ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
দলীয় সব পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড অপসারণ করতে সারা দেশের নেতাকর্মীদের কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে বিএনপি। সব জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, পৌর, ইউনিয়ন, ওয়ার্ড ও ইউনিটগুলোতে একই নির্দেশ দিয়েছে যুবদলসহ বিএনপির অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনগুলোও। নির্দেশনা অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী যুগান্তরকে বলেন, সারা দেশের নেতাকর্মীদের সব পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন ও বিলবোর্ড অপসারণ করতে বলা হয়েছে। বিএনপি জনস্বার্থে রাজনীতি করে। জনগণের চাওয়া ও প্রত্যাশা নিয়েই বিএনপি এগিয়ে যেতে চায়। যেহেতু বিএনপি জনসম্পৃক্ত একটি রাজনৈতিক দল, সেহেতু জনগণের সমস্যা হয় এমন কাজ থেকে নেতাকর্মীদের বিরত থাকতে হবে। ইতোমধ্যে ঢাকা মহানগরসহ অনেক এলাকায় অপসারণের কাজ শুরুও করেছেন নেতাকর্মীরা। সোমবার যুবদলের কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভুঁইয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে (বুধবার বিকাল) জরুরি ভিত্তিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে লাগানো ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টারসহ সব ধরনের বিলবোর্ড অপসারণ করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আব্দুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নয়ন।
এর আগে একই নির্দেশনা পেয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এবং এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটগুলো থেকে ফেস্টুন, ব্যানার, পোস্টারসহ সব ধরনের বিলবোর্ড অপসারণের কাজ শুরু করে। সোমবার দুপুরেও নেতাকর্মীদের নিয়ে পল্লবীর ইস্টার্ন হাউজিং ঘরোয়া মোড় ও দোয়ারীপাড়া এলাকার বিভিন্ন স্পটে দলীয় ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও দলীয় অফিস অপসারণ করেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে আমাদের এলাকার মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ব্যানার, পোস্টার, ফেস্টুন, বিলবোর্ডসহ বিভিন্ন জিনিস লাগাতে হয়, আবার অনেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষ এটাকে ভালো চোখে দেখে না। মানুষ এটাকে ভালোভাবে নেয় না। সেই জায়গা থেকেই আমরা চিন্তা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি দলীয় বিলবোর্ড, ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন নামিয়ে সবকিছু পরিষ্কার করে ফেলতে হবে এবং সব দলীয় কার্যালয় অপসারণ করতে হবে। তিনি বলেন, মানুষ ভাবছে আওয়ামী লীগ যা করেছে, বিএনপি সেটাই করছে-সেই বদনামের দায়ভার আমরা নিতে চাই না। আওয়ামী লীগ যে ভুল করেছে, আমরাও যদি একই ভুল করি তাহলে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আমাদের পার্থক্য রইল কোথায়? আওয়ামী লীগ গত ১৭ বছরে অবৈধভাবে জায়গা দখল করে অফিস বানিয়েছে। কিন্তু বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনকে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে একটা অফিসও ব্যবহার করতে দেয়নি। তারপরও আমরা হাসিনা সরকারের পতন ঘটাতে পেরেছি।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দলের অনেকেই অতি উৎসাহী হয়ে, ভুল করে আওয়ামী লীগের দখলকৃত জায়গা পুনরুদ্ধার করতে গিয়েছে। আসলে পুনরুদ্ধার করতে গেলে কিন্তু সেটাকে আর পুনরুদ্ধার বলে না! অনেকেই এটাকে নিয়ে ভাবছে আওয়ামী লীগ দখল করেছে, বিএনপিও এসে আবার এটাকে পুনরায় দখল করে নিয়েছে। আমরা কিন্তু এই বদনামের ভাগীদার হতে চাই না। এ কারণেই গত শনিবার রাতে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে ঢাকা মহানগর উত্তরের ২৬টি থানা ও ৭১টি ওয়ার্ডের সব দলীয় নেতাকর্মীকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে ব্যানার, ফেস্টুন, পোস্টার ও দলীয় কার্যালয় অপসারণ করতে নির্দেশনা দিয়েছি। তারই অংশ হিসাবে ব্যানার, পোস্টার ও ফেস্টুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ নিজ হাতে করছি।
এর আগে গত ৮ সেপ্টেম্বর জনগণকে দুর্ভোগের মধ্যে না ফেলে মোটরসাইকেল বহর বা অন্য কোনো যানবাহনের শোভাযাত্রা পরিহার করার জন্য কেন্দ্রীয়সহ তৃণমূল নেতাকর্মীদের নির্দেশ দিয়েছিল বিএনপি। এছাড়া পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন প্রদর্শন করা থেকে নেতাকর্মীদের বিরত থাকার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। নির্বাহী কমিটি, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিল, সব সাংগঠনিক জেলা ও মহানগর এবং এর সব অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনকে এ দুই বার্তা দিয়ে তখন এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠানো হয়।