ছাত্র অধিকারের সংবাদ সম্মেলন
জাতীয় পার্টিকে নিয়ে বিএনপির অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে
ঢাবি প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে বিএনপি পার্লামেন্টে বসতে চায় কিনা-এ বিষয়ে দলটির অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। রোববার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে ‘ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা’র ব্যানারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন আহ্বান জানান।
ইয়ামিন মোল্লা আরও বলেন, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্য আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। যেখানে ‘তিনি বলেছেন-বিএনপি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ চায় না। আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিষিদ্ধের লড়াইকে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির ষড়যন্ত্র বলেও তিনি মন্তব্য করেছেন। উনার কাছে ভুল তথ্য থাকায় এমন কথা বলেছেন না কি এটা তাদের দলীয় অবস্থান?’ এ ব্যাপারে বিএনপিকে অবস্থান পরিষ্কার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, টিএসসিতে শত শত শহিদ-আহত পরিবারের লোকজন বিচারের দাবি জানাচ্ছেন, তারা আওয়ামী লীগ ও তার দোসরদের পুনরুত্থান চান না। যারা গুম, খুন, হত্যা করেছে তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে।
বিএনপি দুর্বল বিরোধী দল নিয়ে নির্বাচনের খেলা খেলতে চাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে ইয়ামিন মোল্লা বলেন, এ মুহূর্তে আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি হলো সবচেয়ে দুর্বল বিরোধী দল। তাদের নির্বাচনে এনে নিজেদের বিজয় সুনিশ্চিত করার জন্য বিএনপি কোনো খেলা খেলতে চাচ্ছে কিনা তা বিএনপির কাছে প্রশ্ন রইল। তিনি বলেন, ইনিয়ে-বিনিয়ে আওয়ামী লীগকে ফিরিয়ে আনার কাজ করছে জাতীয় পার্টি। রংপুরে লাঠিসোঁটা নিয়ে তারা জঙ্গি মিছিল করেছে। তাদের সমাবেশে আওয়ামী লীগ সারা দেশ থেকে লোক পাঠাচ্ছে। জিএম কাদের এটা স্বীকারও করেছেন। জাতীয় পার্টির অফিসের সামনে মশাল মিছিলে আওয়ামী লীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা হামলা চালিয়েছে। অথচ সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ২৪-এর নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছে-দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মাধ্যমে তাদের সম্পদের তদন্ত করার দাবিও জানান তিনি। অন্তর্বর্তী সরকার ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে ইয়ামিন মোল্লা বলেন, ছাত্রলীগকে যেভাবে গেজেটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেভাবে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদী দলগুলোকে নিষিদ্ধ করুন, দোষীদের গ্রেফতার করুন। কেননা জনতার রায় হলো-ফ্যাসিবাদী শত্রুদের নিষিদ্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, সরকারকে জনগণের ভাষা বুঝতে হবে। গণঅভ্যুত্থান আইন মেনে হয়নি-তাই আইনের বাইরে গিয়ে সরকারকে অ্যাকশন নিতে হবে। জাতীয় ঐকমত্যের সরকার বা বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে। গণভবনের মতো জাতীয় পার্টির কার্যালয়কে জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা বানাতে হবে। সংবিধান পরিবর্তন করে ফ্যাসিবাদী প্রথার বিলোপ সাধন করতে হবে, না হলে জনগণকে ভুগতে হবে।
পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে ইয়ামিন মোল্লা বলেন, সোমবার দুপুর ২টায় টিএসসিতে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদী দলের নেতাদের প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হবে। সেখানে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের, মুজিবুল হক চুন্নুসহ ফ্যাসিবাদী নেতাকর্মীদের প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হবে।
সংবাদ সম্মেলনে ফ্যাসিবাদবিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতার পক্ষে দুটি দাবি জানানো হয়। এগুলো হলো-আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদের দোসর যে দলগুলো গুম, খুন, গণহত্যা করেছে তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করতে হবে।