Logo
Logo
×

প্রথম পাতা

ডিসি নিয়োগে লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার জনপ্রশাসন সচিবের

ঘুসের খবরে তোলপাড়

আমিরুল ইসলাম

আমিরুল ইসলাম

প্রকাশ: ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঘুসের খবরে তোলপাড়

ডিসি (জেলা প্রশাসক) নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ ওঠায় ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত খবর প্রকাশের পর বাংলাদেশ সচিবালয় থেকে শুরু করে সারা দেশের মাঠ প্রশাসন এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার ঝড় বইছে। বেশ উদ্বিগ্ন সরকারের সংশ্লিষ্টরাও। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। 

এ ব্যাপারে তিনজন উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তারা ঘটনার তদন্তে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠন করবেন। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপদেষ্টারা হলেন-ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম, আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।

বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে সমাজকল্যাণ এবং মহিলা ও শিশুবিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ তদন্তসংক্রান্ত বিভিন্ন তথ্য জানান।

এদিকে ডিসি নিয়োগে ঘুস লেনদেনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোখলেস উর রহমান।

এছাড়া তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে এ বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. সফিকুল আলম। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সচিব, অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্মসচিবকে অপসারণ চেয়েছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। অন্যথায় রোববার সকালে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে সংগঠনটি। 

অন্য কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠলে জনপ্রশাসন সচিব তদন্ত করেন। তার (সিনিয়র সচিব) বিরুদ্ধে ওঠা ডিসি নিয়োগের ঘুস লেনদেনের অভিযোগ সরকার তদন্ত করবে কি না-জানতে চাইলে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘অবশ্যই আমরা এটির তদন্ত করব, সরকার (তদন্ত) করবে। কিন্তু এখানে দুটি জিনিস মিডিয়াকে মাথায় নিতে হবে। এটাও কিন্তু আমরা তলিয়ে দেখছি-যে ক্লিপটা সোশ্যাল মিডিয়ায় বহুলপ্রচারিত হয়ে গেল, সেটা কতখানি এআই (কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা) প্রডিউসড। সেটা কতখানি রিয়েল, কতখানি ফেক-আমাদের মতো সাধারণ মানুষ বলতে পারে না। ইমিডিয়েটলি যে সিদ্ধান্তটা হয়েছে-এটার টেকনিক্যাল ইন্টিগ্রিটি কী, সেটা জানার জন্য উপদেষ্টা পরিষদে কথা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘সেটি ইনভেস্টিগেট করে ইমিডিয়েটলি দেখতে হবে। আমরা অবশ্যই তদন্ত করব। অত্যন্ত দায়িত্বশীল জায়গায় প্রতিষ্ঠিত কর্মকর্তাদের কোনো ধরনের দায়িত্বহীনতা মেনে নেওয়া যাবে না। এটাও আমাদের অনুশাসনের অধীনে আনতে হবে।’

এ বিষয়ে উপদেষ্টাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একটি কমিটি করে তারা এটা দেখবেন। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা; আইন উপদেষ্টা এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ তিনজনের কথা বলা হয়েছে, এর মানে এ নয় যে অন্যরা এতে যুক্ত হতে পারবেন না। একটি কমিটি করে এটি তদন্ত করা হবে।’ 

এক প্রশ্নের জবাবে উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, ‘একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে নিয়ে এরকম কথা। এটি নিয়ে অবশ্যই আমরা উদ্বিগ্ন। এ কথাটা (ঘুস লেনদেনের অভিযোগ) কেন উঠল, এটির সূত্র কী, কারণ কী-সেটি তলিয়ে (খতিয়ে) দেখতে হবে। আমরা তো এখন অ্যানালগ যুগে নেই, এজন্য আমাদের বাড়তি কষ্ট হচ্ছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় যেটাই আসছে, আমরা লাফ দিয়ে ধরে নিতে পারছি না-এটাই সত্য। আমাদের এটিকে যাচাই করতে হয়।’

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমান ডিসি নিয়োগে ঘুস নেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব সাংবাদিকদের বলেন, এ অভিযোগের বিন্দু-বিসর্গের সত্যতা নেই। যারা এটা করেছে, তাদের আমরা কতটুকু গুরুত্ব দেব?

একটা রাস্তার লোক আমাকে অনেক কিছু বলতে পারে, আমি রাস্তার লোকের পেছনে কেন লাগতে যাব। তদন্তের কোনো উদ্যোগ নেবেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাব তিনি এড়িয়ে গিয়ে বলেন, আমাকে প্রশ্ন করার আগে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করেন, আমাকে এ প্রশ্ন করা কতটুকু যৌক্তিক হচ্ছে?

অপরদিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং দুর্নীতির ঘটনায় দায়ী অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্মসচিবকে চাকরি থেকে অপসারণপূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী কর্মচারী ঐক্য ফোরাম। বৃহস্পতিবার সংগঠনের সমন্বয়ক এবং বিএনপি চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আব্দুস সাত্তারের গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে এ দাবির কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘আমাদের দাবি পূরণ না হলে ৬ অক্টোবর রোববার সকাল ৯টায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি ঘোষণা করছি।’

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মোখলেস উর রহমান এবং কয়েকজন অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্মসচিবের অবিশ্বাস্য রকম দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতা সম্পর্কে বিভিন্ন মিডিয়ায় সম্প্রতি যেসব তথ্যনির্ভর খবর পরিবেশিত হয়েছে, তা জেনে আমরা স্তম্ভিত ও উদ্বিগ্ন। তারা উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়া কয়েকজন ‘সমন্বয়কারীর’ নাম ভাঙিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে। তাদের এ অপকর্ম বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, জনপ্রশাসন, দেশ ও জাতিকে গভীরভাবে হেয়প্রতিপন্ন করেছে। তাদের এ কুকর্ম কখনোই মেনে নিতে পারি না।’

সম্প্রতি গণহারে জেলা প্রশাসক বদলাতে গিয়ে বিপুল অঙ্কের আর্থিক লেনদেনের যে অভিযোগ সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা ভিত্তিহীন বলেও উল্লেখ করেন জনপ্রশাসন সচিব। ডিসি নিয়োগের ক্ষেত্রে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও একটি জাতীয় পত্রিকায় পরপর দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত দ্বিতীয় প্রতিবেদনে দৈনিকটি হোয়াটসঅ্যাপে ঘুস সংক্রান্ত বার্তা আদান-প্রদানের বিষয়ে কিছু স্ক্রিনশট প্রকাশ করে। ওই আলাপচারিতায় দুজন যুগ্মসচিবের সঙ্গে জনপ্রশাসন সিনিয়র সচিবের কথোপকথনের বিষয়টি উঠে আসে। ডিসি নিয়োগে ৫ কোটি থেকে ১০ কোটি টাকা লেনদেনের কথা রয়েছে সেখানে।

হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথনের বিষয়ে সিনিয়র সচিব বলেন, ‘আমার মোবাইল ফোন হলো স্যামসাং, ওখানে পত্রিকার প্রতিবেদনে যেটা শো করছে, সেটা আইফোন। কালবেলা কর্তৃপক্ষ কী দেখাল, সেটা ওনাদের জিজ্ঞাসা করবেন। আমি এটা সম্পর্কে কিছুই জানি না। আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সরকার যে মোবাইল ফোন দিয়েছে, সেটাও আমি ব্যবহার করি না। আমার আগের যে নম্বর, সেটাই আমি ব্যবহার করছি।’ ওই কথোপকথনের সত্যতা আছে কি না-জানতে চাইলে জনপ্রশাসন সচিব বলেন, যদি স্টান্টবাজি নিউজ করতে চান, তাহলে এগুলো প্রশ্ন করতে পারেন।

খবর যদি মিথ্যা হয়, তাহলে কী ব্যবস্থা নেবেন-এমন প্রশ্নে সিনিয়র সচিব বলেন, ইতোমধ্যে আমরা তিনটি পদক্ষেপ নিয়েছি। পত্রিকটির নাম উল্লেখ করে আমরা তথ্যসচিবকে চিঠি দিয়েছি। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারি চিঠি দেওয়া হয়েছে। প্রেস কাউন্সিল আছে, অন্যান্য যে নিয়মকানুন আছে, সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যে ভুয়া লোককে কেন্দ্র করে এতকিছু, তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র সচিবকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এক-দুইদিনের মধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হবে। যে ব্যাংকারের ভুলের কারণে এ ধরনের একটা অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে, তার বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে বৃহস্পতিবার সিনিয়র সচিবের বিরুদ্ধে প্রকাশিত নিউজে তার সম্পৃক্ততার কারণে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা স্পষ্ট করেননি। তিনি মানহানির মামলা করবেন কি না-এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি। 

প্রসঙ্গত, ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর মাঠ প্রশাসনেও ব্যাপক রদবদল আনার সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এর অংশ হিসাবে ৫৯ জেলায় নতুন কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক হিসাবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু ১০ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে দিনভর হট্টগোল করেন আগের সরকারের আমলে বঞ্চিত উপসচিবরা। শেষ পর্যন্ত প্রজ্ঞাপন বাতিলের আশ্বাসে তারা মন্ত্রিপরিষদ সচিবের কার্যালয় ত্যাগ করেন।

নতুন দায়িত্ব পাওয়া ৫৯ জন জেলা প্রশাসকের মধ্যে আটজনকে পরদিনই প্রত্যাহার করে নেয় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে চারজনের কর্মস্থল বদলে দেওয়া হয়। আর একজন উপসচিবকে করা হয় ওএসডি। হট্টগোলের ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয় কমিটি। এর মধ্যে এক যুগ্মসচিবের কক্ষ থেকে তিন কোটি টাকার একটি চেক এবং ডিসি নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু চিরকুট উদ্ধারের খবর দিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে একটি জাতীয় পত্রিকা। 

সেই প্রতিবেদন নিয়ে তোলপাড় তৈরি হলে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। তদন্তে একটি কমিটি গঠন করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তদন্তের পর ৩০ সেপ্টেম্বর সংবাদ সম্মেলন ডেকে ওই পত্রিকার ওই প্রতিবেদনকে গুজব, সম্পূর্ণ ভুয়া এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করেন সিনিয়র সচিব। এরপর বৃহস্পতিবারের প্রতিবেদনে খোদ মোখলেস উর রহমানের বিরুদ্ধেই আর্থিক লেনদেন নিয়ে আলোচনার অভিযোগ তুলে ধরল ওই পত্রিকাসহ দুটি জাতীয় দৈনিক।

প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে-একটি মেসেজে সচিব নিজেকে নির্লোভ দাবি করে মাত্র ৫ কোটির একটি আবদার করেন। জিয়া (যুগ্মসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ) তাকে সুখবর দিয়ে বলেন ১০ কোটি রাখার কথা। এতে সন্তুষ্ট হয়ে সচিব তাকে বলেন, আচ্ছা ঠিক আছে, তোমার যেটা ভালো মনে হয়। তবে টাকাপয়সার প্রতি নিজের তেমন লোভ নেই বলেও জিয়াকে জানান সচিব।

এ প্রসঙ্গে জনপ্রশাসনের সিনিয়র সচিব সাংবাদিকদের জানান, সরকারের পজিশনে থেকে জনগণের স্বার্থে কাজ করি। যেভাবে আছি, সেভাবেই কাজ করব। যতদিন আল্লাহ হায়াত রেখেছে, নিয়ম অনুযায়ী কাজ করব। অভিযোগের বিষয়ে কোনো তদন্ত কমিটি হবে কি না-জানতে চাইলে মোখলেস উর রহমান বলেন, এই অভিযোগকারী আমার বিবেচনায় নেই এবং এই অভিযোগকে আমি মূল্যহীন মনে করি। এটি একটি ফেক নিউজ।’

প্রেস সচিবের বক্তব্য : প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব মো. সফিকুল আলম বলেছেন, আপনারা দেখেছেন কালবেলায় একটি রিপোর্ট এসেছে। রিপোর্টটি জনপ্রশাসন সচিবকে নিয়ে। বিষয়টি সরকার খতিয়ে দেখছে, এ রিপোর্টের সত্যতা কতটুকু। বিষয়টি নিয়ে উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি হবে। কমিটিতে কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিককে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। তদন্ত কমিটি দেখবে প্রকাশিত সংবাদের সত্যতা কতটুকু। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে সরকার ব্যবস্থা নেবে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের সাপ্তাহিক বৈঠকের বিষয়ে পূর্বনির্ধারিত প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। 

কমিটি কি হয়েছে, নাকি হবে, হলে কবে হবে-এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, উচ্চপর্যায়ের কমিটি কীভাবে, তা আমরা জানি না। বিষয়টি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। যিনি দায়ী, তা তদন্তের মাধ্যমে বেরিয়ে আসবে। 

তিনি বলেন, সরকার ফ্রিডম অব প্রেসে বিশ্বাস করে। একই সঙ্গে আমরা আশা করব, পত্রিকাগুলো সংবাদ পরিবেশনে যত্নবান হবে। সংবাদ পরিবেশনে অসত্য তথ্য যাতে প্রকাশিত না হয়। যে সাংবাদিকতা দেশকে এগিয়ে নেয়, তা আমরা দেখতে চাই। প্রধান উপদেষ্টা নিজেই বলেছেন যৌক্তিক বিষয়ে সমালোচনা করতে। সুতরাং এ সুযোগ নিয়ে কেউ ফেক নিউজ করল, তাও সঠিক হবে না। প্রেস সচিব উদাহরণ দিয়ে বলেন, কালবেলার তিন কোটি টাকার চেকের বিষয়টি তদন্ত করে দেখা গেছে রিপোর্টটি সঠিক নয়। 

ডিসি নিয়োগ নিয়ে গত দুই মাস নানা ঘটনা-দুর্ঘটনা ঘটেছে, বিষয়টি সরকার কীভাবে দেখছে-এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, সরকার মনে করছে, সবকিছু স্বচ্ছভাবেই সম্পন্ন হচ্ছে। সব কাজ জবাবদিহির আওতায় হচ্ছে। সরকার জনপ্রশাসনে কোনো অস্থিরতা দেখছে না। কেউ একটি রিপোর্ট করলে এবং তদন্তে প্রমাণ হলো রিপোর্টটি ফেক, সেক্ষেত্রে জবাবদিহির জায়গা তো সবার জন্যই সমান। 

ডিসি নিয়োগে হট্টগোলের বিষয়ে তদন্ত কমিটি এখতিয়ারবহির্ভূত প্রতিবেদন দিয়েছে, একজনের শাস্তি অন্যজনকে দিয়েছে, বিষয়টি সরকার কীভাবে দেখছে-এমন প্রশ্নে প্রেস সচিব বলেন, এটি একটি আইসুলেটেডে ইনসিডেন্ট এনে বলবেন, সবকিছু তালগোল পাকিয়ে গেছে তা হবে না। একজনের শাস্তি আরেকজনকে দেওয়া হয়েছে-এ অভিযোগ ঠিক কি না, তাও খতিয়ে দেখতে হবে।

প্রশাসনে স্থবিরতা সংক্রান্ত এক প্রশ্নে প্রেস সচিব আরও বলেন, সরকারের প্রশাসন সঠিকভাবে চলছে। বিগত সময়ে স্বৈরাচার ক্ষমতায় ছিল। স্বৈরাচারের সুবিধাভোগীরা কিছু সমস্যা তৈরির চেষ্টা করছে। সরকার চায় না তারা থাকুক। প্রশাসনের কাজগুলো ধীরেসুস্থে হচ্ছে। প্রশাসনে অস্থিরতার অভিযোগ ঠিক হচ্ছে না। বিতর্কিত ব্যক্তিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি নিয়োগ প্রসঙ্গে প্রেস সচিব বলেন, বিষয়টি আপনারা লিখুন। সঠিক হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : সাইফুল আলম

প্রকাশক : সালমা ইসলাম